• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

গাণিতিক চিহ্ন আবিষ্কারের রহস্য

দৈনিক রংপুর

প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০১৮  

Find us in facebook

Find us in facebook

ইংরেজ ছাত্রদের বীজগণিত শেখানোর উদ্দেশে ষোড়শ শতাব্দীতে গণিতবিদ রবার্ট রেকর্ড 'দা হুইটস্টোন অফ উইট' নামে একটি বই লিখেন। বইটিতে প্রতিবার 'ইজ ইকুয়াল টু’ শব্দত্রয় লিখতে লিখতে হাপিত্যেশ হয়ে উঠছিলেন তিনি। কারণ তখন সমান-এর জন্য কোনো চিহ্নের ব্যবহার ছিলো না! বিরক্ত হয়ে তিনি এর একটি সুরাহা করতে চাইলেন। 'ইজ ইকুয়াল টু'-এর বদলে বইতে দু’টি সমান্তরাল আনুভূমিক রেখা ব্যবহার করলেন, যেটিকে আমরা ‘সমান চিহ্ন’ বলে জানি। রবার্টের যুক্তি ছিল এমন- দুটি সমান দৈর্ঘ্যের সমান্তরাল রেখা যতটা সমান, তার চেয়ে বেশি সমান অন্য কোনো বস্তুদ্বয়ের পক্ষে হওয়া সম্ভব নয়।

প্রশ্ন হতেই পারে, দুইটি রেখার বদলে তিনটি বা চারটি রেখা দিলে কী সমস্যা ছিলো? রেখা দুটি কেনো আনুভূমিক হতে হলো? খাড়া হলে কী সমস্যা ছিলো! না, তেমন কোনো সমস্যা ছিলো না। অনেকে বিভিন্ন চিহ্ন ব্যবহারও করেছিলেন। তবে ঘটনাক্রমে, রবার্ট রেকর্ডের পর অনেক গণিতবিদ তার উদ্ভাবিত এই সমান চিহ্ন ব্যবহার করা শুরু করেন। ফলে ধীরে ধীরে এটিই সমান-এর প্রচলিত চিহ্ন হয়ে যায়।

 

1.গাণিতিক চিহ্ন আবিষ্কারের রহস্য

পুরো গণিত জগৎটাই বিভিন্ন রকমের প্রতীক দিয়ে ভরপুর। রেখা, বিন্দু, তীর চিহ্ন, ইংরেজি হরফ, গ্রিক হরফ, সুপারস্ক্রিপ্ট (স্কয়ার, কিউব), সাবস্ক্রিপ্ট কত কি! সবগুলোকে একসাথে করলে মনে হবে বিশাল কোনো ধাঁধা। আপাতদৃষ্টিতে এসব গাণিতিক প্রতীককে জটিল মনে হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

অনেক গাণিতিক প্রতীকের ক্ষেত্রে বেশ সুনির্দিষ্ট কিছু তাৎপর্য রয়েছে। রবার্ট রেকর্ড নিজেই তার উদ্ভাবিত সমান চিহ্নের তাৎপর্য বর্ণনা করেছিলেন। প্লাস বা যোগ চিহ্নের জন্ম হয়েছে ল্যাটিন শব্দ 'এট' এর অনুকরণে, যার অর্থ হলো অ্যাণ্ড বা এবং। অনেক গাণিতিক প্রতীক সৃষ্টি হয়েছে নেহাত খামখেয়ালীর বশে! যেমন, গণিতবিদ ক্রিশ্চিয়ান ক্র্যাম্প বিস্ময়সূচক চিহ্নকে ফাক্টরিয়াল-এর প্রতীক হিসাবে ব্যবহার করেন। এর পেছনে তার তেমন কোনো তাৎপর্য ছিলো না! ফ্যাক্টরিয়াল ব্যাপারটিকে একটি সহজ চিহ্নের মাধ্যমে প্রকাশ করা প্রয়োজন ছিলো তাই। অধিকাংশ গাণিতিক চিহ্ন বা প্রতীক এভাবে উদ্ভাবিত হয়েছে। বারবার যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ, সমান, ফ্যাক্টরিয়াল, বড়, ছোট ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করতে গেলে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। তারচেয়ে বরং এসব শব্দের জন্য নির্দিষ্ট প্রতীক থাকলে এ ঝামেলা এড়ানো যায়।

গাণিতিক চিহ্ন হিসেবে বিভিন্ন অক্ষর বের করার রীতিও চোখে পড়ার মতো। এদের অধিকাংশই ল্যাটিন গ্রিক অক্ষর। সাধারণত ভ্যারিয়েবল বা চলক-এর পরিবর্তে আমরা বীজগণিতে বিভিন্ন ইংরেজি অক্ষর ব্যবহার করি। আবার কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যাকে যখন বারবার ব্যবহার করতে হয়, তখন সেটির বদলে একটি প্রতীক ঠিক করে নেয়া হয়। যেমন গ্রীক বর্ণ পাই।

 

2.গাণিতিক চিহ্ন আবিষ্কারের রহস্য

যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ এগুলোকে বলা হয় প্রক্রিয়াকরণ চিহ্ন। কারণ এগুলোর মাধ্যমে গাণিতিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। যেমন ২ গুণন ১০ মানে হচ্ছে দশটি ২-কে পাশাপাশি নিয়ে যোগ করা। গুণ চিহ্নটি আমাদের এই বিশাল যোগ করা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। আবার একই সংখ্যাকে বারবার গুণ করা হলে সেটিকে পাওয়ার আকারে প্রকাশ করা যায়। যেমন ৩-কে ৫বার নিয়ে গুণ করার বদলে শুধু লেখা যায় ৩ পাওয়ার ৫। আবার আমরা অনেকেই সামেশন চিহ্নটির সাথে পরিচিত, যেটি গ্রীক বর্ণ সিগমা দিয়ে প্রকাশ করা হয়। ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলোর যোগফল যদি করতে বলা হয়, সেটিকে প্রকাশ করা যায় সিগমার নিচে ১ ও ওপরে ১০০ লিখে।

তবে প্রতীক বা বর্ণ যেটিই গাণিতিক চিহ্ন হিসাবে ব্যবহার করা হোক না কেন, এর লক্ষ্য থাকে কিভাবে কোনো গাণিতিক বর্ননাকে সহজে বা এক কথায় প্রকাশ করা যায়।

Place your advertisement here
Place your advertisement here