• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

কোরআনকে চ্যালেঞ্জ করতে গিয়ে মুসলিম হন গ্যারি মিলার

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

১৯৭৭ সাল। ধর্ম যাজক ও টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক গ্যারি মিলার সিদ্ধান্ত নিলেন কোরআনের বৈজ্ঞানিক ও ঐতিহাসিক ত্রুটি প্রকাশ করে নিজ ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করবেন। এমন কিছু যুক্তি দাঁড় করাবেন, যার মাধ্যমে তিনি ও তাঁর মতো অন্য ধর্মযাজক মুসলিমদের খ্রিস্টবাদের প্রতি আহ্বান করতে পারেন। কিন্তু ফল হলো সম্পূর্ণ বিপরীত। একসময় কোরআনের কাছেই আত্মসমর্পণ করলেন তিনি। গ্যারি মিলারের লেখা ছিল খুবই ন্যায়ানুগ এবং মন্তব্যগুলো ছিল ইতিবাচক। এমনকি কোরআন বিষয়ে বহু মুসলিমের তুলনায় তাঁর লেখা উন্নতমানের।

দীর্ঘ অনুসন্ধান ও গবেষণার পর তিনি বুঝতে পারেন কোরআন কোনো মানুষের সৃষ্ট নয়। কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার বিষয়টি গ্যারি মিলারের জন্য ছিল প্রথম বিস্ময়। যেমন—পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তবে কি তারা কোরআন সম্পর্কে অনুধাবন করে না? এটা যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো পক্ষ থেকে আসত, তবে তারা তাতে বহু অসংগতি খুঁজে পেত।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৮২)

প্রফেসর মিলার কোরআন পাঠ শুরু করেছিলেন ত্রুটি-বিচ্যুতি খোঁজার জন্য। কিন্তু পরিণামে যা পেলেন তাতে যারপরনাই বিস্মিত হলেন। মিলারের ভাষায় কোরআনের বিস্ময়কর কয়েকটি দিক হলো।

১. সাধারণত লেখক তার বই নির্ভুল বলে দাবি করে না। কিন্তু কোরআনে একাধিকবার আল্লাহ সমগ্র মানবজাতিকে বারবার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছে কোরআন নির্ভুল।

২. কোরআনে মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যক্তিগত জীবন অনুল্লিখিত। যেমন খাদিজা (রা.), তাঁর কন্যা ও পুত্রদের মৃত্যুর ঘটনা। বিশেষত কিছু পরাজয়ের মন্তব্যে সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে এবং বিজয়ের সময় দম্ভ-অহংকারের পরিবর্তে আরো বেশি প্রচেষ্টা ও আত্মত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি তা মুহাম্মদ (সা.)-এর রচিত হতো তবে তাতে তাঁর ব্যক্তি জীবন প্রাধান্য পেত এবং জয়-পরাজয়ের নানা কারণ বর্ণনা করতেন।

৩. কোরআন কোনো নির্ধারিত সময়ের ইতিহাস বর্ণনা করেনি। কিন্তু যুগে যুগে আল্লাহ ও মানুষের মধ্যকার সম্পর্কের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘বলুন! আমি তোমাদের একটি বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছি—তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই-দুইজন অথবা একজন একজন করে দাঁড়াও। অতঃপর তোমরা চিন্তা করে দেখো—তোমাদের সঙ্গী অদৌ উন্মাদ নয়। সে তো কঠিন শাস্তি সম্পর্কে তোমাদের সতর্ককারী মাত্র।’ (সুরা সাবা, আয়াত : ৪৬)

এ আয়াতে আল্লাহ সম্মিলিত আলোচনার কথা বলেছেন। আর তিনি টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সম্মিলিত আলোচনার প্রভাব ও ফলাফল সম্পর্কে’ যে গবেষণা করেছিলেন তাতে তিনি প্রমাণ পেয়েছিলেন আলোচকের সংখ্যা বাড়লে তা বেশি কার্যকর ফল প্রদান করে।

৪. কোরআনে মারিয়াম (আ.)-এর নাম এসেছে। সেখানে এতটা সম্মানের সঙ্গে মারিয়াম (আ.)-এর আলোচনা করা হয়েছে, যা বাইবেলেও করা হয়নি। অন্যদিকে কোরআনে আয়েশা ও ফাতেমা (রা.)-এর নাম নেই। কোরআনে ঈসা (আ.)-এর নাম ২৫ বার এসেছে। অন্যদিকে মুহাম্মদ (সা.)-এর নাম এসেছে মাত্র পাঁচবার।

৫. মুহাম্মদ (সা.) ও আবু বকর (রা.) হেরা পর্বতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তখন পরিস্থিতি এমন ছিল যে সামান্য নড়াচড়া করলেই শত্রুরা তাদের দেখে ফেলবে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ সাধারণত পালানোর পথ খোঁজে। কিন্তু মুহাম্মদ (সা.) বললেন, ‘ভয় পেয়ো না। আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ৪০)

কোনো প্রতারক এতটা আত্মবিশ্বাসী হয় না। অবশ্যই একজন সত্যবাদী নবীই এমন প্রতিকূলতার মধ্যে স্থির থাকতে পারেন, যিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন আল্লাহ অবশ্যই তাঁকে রক্ষা করবেন।

প্রফেসর মিলার সমকালীন ক্যাথলিক বিশ্বকোষ দেখেন। তাঁর মনে হয়, কোরআনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এখানে আনা হয়েছে তা যুক্তিতে টেকে না। চার্চ নিজেও এসব অভিযোগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি, সাহস করেনি। আবার চিরন্তন সত্যও স্বীকার করেনি। কিন্তু আল্লাহ মিলারের প্রতি সদয় হোন এবং ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেন। মুসলিম হয়ে আবদুল আহাদ ওমর নামধারণ করেন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here