• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

কুড়িগ্রামে ধর্ষকের বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে বাবা

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধাড়ির ঝাড় মরাখানা গ্রামের এক অসহায় বাবা তার কিশোরী মেয়ের সর্বনাশকারী ধর্ষকের বিচার পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সবকিছু হারানো কেশোরী মেয়ের আত্মহত্যার হুমকি ও বিচার না পাওয়ার যন্ত্রণা বুকে নিয়ে পাগলের মতো ছুটে বেড়াচ্ছেন ওই বাবা।

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধাড়ির ঝাড় মরাখানা এলাকার অসহায় ওই বাবা জীবন বাঁচানোর তাগিদে বাড়ি-ঘর ফেলে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে চলে আসেন রাজশাহীর রেলপুকুর মাহেন্দ্রা বাজারের একটি জুট মিলে। সেখানে তিনি শুরু করেন সাপ্তাহিক মজুরিতে শ্রমিকের কাজ।

স্ত্রী, বড় মেয়ে ও ছোট মেয়ে মিলে পরিবারের চার সদস্য মিলেই জুট মিলে শ্রমিকের কাজ করেই জীবন চালান তিনি। জুট মিলে কাজ করার সময় ওই মিলের সোহেলা রানা মাসুদ নামে এক শ্রমিক তার কিশোরী মেয়ের উপর কুনজর দেয়। ওই শ্রমিকের বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউপির ভাঙ্গামোড় গ্রামে। সোহেল রানা মাসুদও একই গ্রামের এহছান আলীর ছেলে।

বিভিন্ন সময় সোহেলা রানা মাসুদ কিশোরীকে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এতে কিশোরী রাজি না হওয়ায় বিয়ের প্রলোভন দেখাতে থাকে সে। এতেও কিশোরী রাজি হয়নি। এরমধ্যে গত ফেব্রুয়ারি কিশোরী শারীরিক অসুস্থতার কারণে জুট মিলে না গিয়ে বাসায় বিশ্রাম নেয়।

এ খবর সোহেল রানা মাসুদ জানতে পেরে কিশোরীর বাসার আশপাশে ওঁৎ পেতে থাকে। সন্ধ্যায় কিশোরী বাথরুমে গেলে ওঁৎপেতে থাকা সোহেল রানা মাসুদ মুখ চেপে ধরে বাথরুমের দরজা বন্ধ করে ধর্ষণ করে ওই কিশোরীকে। পরবতীতে কিশোরীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ধর্ষক সোহেল রানাা মাসুদকে আটক করে। এ সময় সোহেল রানা মাসুদ ধর্ষিতা কিশোরীকে বিয়ে করবে বলে উপস্থিত লোকজনের সামনে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং বিয়ে পড়াতে বলে। তার কথামতো ১ লাখ ৪৯ হাজার ৭০০ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিয়ে পড়ানো হয়।

পরে সোহেল রানা মাসুদ তার কর্মস্থল জুট মিলের পাশের একটি কক্ষে কিশোরীকে নিয়ে রাত যাপন শুরু করেন। পরদিন সকালে সে কিশোরীর জন্য স্বর্ণের নাক ফুল কিনে আনার কথা বলে ঘর থেকে বের হয়ে পালিয়ে তার বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউপির ভাঙ্গামোড় গ্রামে আসে। পরবর্তীতে ধর্ষিতা কিশোরীর বাবা তার মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে সোহেল রানা মাসুদের বাড়ি ছুটে আসেন। তিনি সোহেল রানা মাসুদের পরিবারের কাছে আগের সব ঘটনা জানান। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো গুরুত্ব না দিয়ে পরিবারের লোকজন তাদের তাড়িয়ে দেন। 

স্থানীয় ভাঙ্গামোড় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে এ ঘটনা জানিয়ে মেয়ের ধর্ষণ ঘটনার সুরাহা চেয়েও তিনি তা পাননি। চেয়ারম্যান ঢাকা যাবেন এই অজুহাতে তাকে এক মাস পর আসার কথা বলে ফিরিয়ে দেন। 

অসহায় বাবা বলেন, আমি আমার মেয়ের ধর্ষকের উপযুক্ত বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। কোথাও বিচার পাচ্ছিনা। সোহেলা রানা মাসুদ বিয়ের প্রলোভনে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। আমি আমার মেয়ের ধর্ষকের বিচার চাই। আমি আমার মেয়ের ধর্ষণকারীর উপযুক্ত বিচারের জন্য পুলিশ প্রশাসনসহ আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সাহায্য চাই।

ধর্ষিতা কিশোরী বলেন, আমি সোহেল রানা মাসুদ আমার সবকিছু শেষ করেছে। আমি তার সংসার করতে চাই। সে আমাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ না করলে আমি এ জীবন রাখবো না।  অভিযুক্ত ধর্ষক সোহেল রানা মাসুদ বাড়িতে আসলেও আত্মগোপণে রয়েছেন।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাবু ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, ধর্ষিতার বাবা আমার কাছে এসেছে। অভিযুক্ত সোহেল রানা মাসুদ বাড়িতে না থাকায় আমি একমাস পর উভয় পরিবারের লোকদের নিয়ে বসার সময় দিয়েছি।

Place your advertisement here
Place your advertisement here