• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

কাঁটাতারের বেড়ায় ৪০ ভূমিহীন পরিবার অবরুদ্ধ

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

প্রভাবশালীর কাঁটাতারের বেড়ায় ৪০ ভূমিহীন পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে দুইদিন ধরে বন্দি জীবনযাপন করছেন। ভূমিহীন পরিবারগুলোর ভবিষ্যৎ এখন ওই কাঁটাতারের বেড়ায় বন্দি।  লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার খুর্দ্দ বিছনদই গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। ভূমিহীন পরিবারগুলোর সদস্যরা এখন ফ্যাল ফ্যাল করে ওই কাটাতারের ভেতর থেকে তাকিয়ে আছে। পাঁচ শতাধিক মানুষ বাড়ি থেকে বের না হতে পেরে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে।

শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, তিস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে বসতবাড়ি হারা ভূমিহীন পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছে হাতিবান্ধা উপজেলার খুর্দ্দ বিছনদই এলাকার জেলা পরিষদের পরিত্যক্ত সড়কে। দরিদ্র এ পরিবারগুলোর একেকজন ৫০ থেকে ৬০ বছর ধরে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। কেউ দিনমজুর, কেউবা রিকশা চালিয়ে সংসার চালান। তাদের বাড়িতে নেই কোন আসবাবপত্র। কাজ করলে পেটে ভাত যায়, কাজ না করলে যায় না। এই পরিবারগুলো জেলা পরিষদের ওই পরিত্যক্ত সড়কে ভূমিহীন পরিবার হিসেবে বাস করছে। 

জেলা পরিষদের ওই পরিত্যক্ত সড়ক থেকে তাদের উচ্ছেদ করে দখল করার জন্য এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি চেষ্টা করছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করছেন। ওই ভূমিহীন ৪০ পরিবারকে উচ্ছেদ করে তাদের বসত বাড়ির ওপর দিয়েই একটি গ্রামীন সড়ক তৈরির নীল নকশা করছে। ভূমিহীন পরিবারগুলোর দাবি, তাদের শেষ সম্বল থেকে উচ্ছেদ করার জন্য প্রতি রাতে প্রভাবশালীদের লোকজন তাদের বসত বাড়িতে বড় বড় পাথর দিয়ে ঢিল ছুড়ে আতঙ্ক তৈরি করছে। হাট-বাজারে গেলে নানাভাবে হুমকি ও তাদের মেয়েরা স্কুলে যাওয়ার পথে বখাটে ছেলে দিয়ে নিপীড়ন করা হয়। 

এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী নরেশ চদ্র জানান, কাঁটাতারর বেড়ার কারণে বাড়ি থেকে বের হওয়া যায় না। সরকারি জমি দখল করে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে আমাদের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমাদের প্রতি রাতে তারা ভয় দেখায়। 

৪০ বছরের জমিলা বেওয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, ‘হামরা নদী ভাঙ্গা মানুষ, হামার কোন জায়গা নাই। হামার বাড়ির সামনোত কাঁটাতারের বেড়া দিছে এলা হামরা বেড়বার পাই না। এলা হামরা কানেটে যাই কাটাতারের বেড়া দিছে চইলবার পাছি না।’ 

ডাউয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম সায়েদ জানান, ওই স্থান দিয়ে সড়ক নির্মাণের টেন্ডার হয়ে গেছে। ভূমিহীন পরিবারগুলো অন্য স্থানে সরে গেলে সড়কের কাজ শুরু হবে। না হলে সরকারের ঘরে ফেরত চলে যাবে অর্থ। 

তবে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান জানান, জেলা পরিষদের পরিত্যক্ত সড়কে নদী ভাঙ্গা অসহায় পরিবারগুলো অশ্রয় নিয়েছে। তারা সেখানে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ বছর ধরে বসতবাড়ি করে বাস করছে। তবে জেলা পরিষদ থেকে তাদের উচ্ছেদ করার কোনো প্রশ্নই উঠে না। তবে পাশ দিয়ে রাস্তা হলে তাদের সামান্য জমি ছাড়তে হতে পারে। এছাড়া কাউকে উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত হয়নি। 

এদিকে ডিসির নির্দেশে কালীগঞ্জের ইউএনও মো. রবিউল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে কাউকে অবরুদ্ধ করে রাখা উচিত হয়নি। আর যে স্থানে কাঁটাকারের বেড়া দেয়া হয়েছে, ওই জায়গা সম্ভবত জেলা পরিষদের হবে। তাই পুনরায় জায়গাটি মাপার জন্য সার্ভেয়ারকে বলা হয়েছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here