• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

করোনার প্রকোপ না কমা পর্যন্ত বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:শিক্ষামন্ত্রী

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৮ জুন ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

করোনাভাইরাসের প্রকোপ না কমা পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
এজন্য শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হবে তা পুষিয়ে নিতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে গতকাল শনিবার এক ভার্চুয়াল আলোচনায় জানিয়েছেন তিনি।

কবে নাগাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সম্ভব হবে সে বিষয়ে এখনই কোনো ধারণা দিতে পারেননি শিক্ষামন্ত্রী। ইরাব সভাপতি মুসতাক আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন, গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরিটাস অধ্যাপক মনজুর হোসেন, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক ফারহানা খানম, ইরাবের সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।

“আমরা জানি না অগাস্টে কি খুলতে পারব, সেপ্টেম্বরে কি খুলতে পারব। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে সবচেয়ে বড় ব্যাপারটি হল- যখন একজন আমরা কেউ রাস্তায় বের হই, নিশ্চয়ই ঝুঁকি নিয়ে বের হই। কিন্তু আমরা যখন একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাব, সেখানে শিক্ষার্থীদের যে বয়স তাদের অধিকাংশের ক্ষেত্রে হয়ত তারা যে আক্রান্ত হয়েছে তার বহিঃপ্রকাশ থাকবে না। কিন্তু তারা তাদের পরিবারে বয়স্ক বা অসুস্থ যারা আছেন তাদের আরও বেশি ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে। আমরা কিন্তু তাদের বিরাট একটা ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেব।

“এই কোটি কোটি শিক্ষার্থী, কোটি কোটি পরিবার, তাদেরকে নিশ্চয়ই আমরা এই স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারি না। সেজন্য আমাদের শিক্ষাটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে সেটি ভাবতে হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার মতো কোনো অবস্থাই নেই। আমাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে হবে, তারপরে বুঝব যে কবে খোলা যাবে।”

এডুকেশন রিপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) আয়োজিত ‘করোনায় শিক্ষার চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনেক দেরিতে খুলতে হলে সেক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে সে বিষয়েও ধারণা দেন।

“আমাদের শিক্ষাবর্ষকে কি জানুয়ারি-ডিসেম্বরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখব? নাকি আগামী বছরের এক মাস, দু’মাস, তিন মাস এই শিক্ষাবর্ষে অন্তর্ভুক্ত করে ফেলব? পরের শিক্ষাবর্ষ তাহলে নয় মাসে হয়ে যাবে। আমরা কিন্তু ভাবছি, প্রস্তুতির মধ্যে রাখছি। এই অনিশ্চয়তার মধ্যে একেবারে সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া এই মুহূর্তে কোনোভাবেই সম্ভব না।”

বছরে ১৪০-১৪২ দিনের বেশি পাঠদান করানো যায় না জানিয়ে দীপু মনি বলেন, “এত ধরনের ছুটি ও অনুষ্ঠানাদি থাকে। করোনার কারণে যে দিনগুলো হারিয়ে ফেলেছি তখন আমাদের বাকি ছুটিগুলো বাদ দিয়ে হলেও শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষা-গবেষণায় ঠিক জায়গায় রাখতে পারি, সেটি আগামী শিক্ষাবর্ষে চেষ্টা করব।

“সংসদ টেলিভশন বা অনলাইনের মাধ্যমে সবার কাছে ক্লাস পৌঁছানো যাচ্ছে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি। টেলিভিশন এবং মোবাইল ফোনে যাদের এক্সেস আছে তারাও এই ক্লাস পাচ্ছে। জরিপে এসেছে যে প্রায় ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী ক্লাসগুলোতে এক্সেস করতে পারছে। আমরা মাধ্যমিকের ১০ ভাগের কাছে পৌঁছাতে পারছি না। তাহলে এই ১০ ভাগকে পেছনে ফেলে রেখে এগিয়ে যাবার কথা ভাবতে পারি না। আমরা তাদেরকে কীভাবে অন্তর্ভুক্ত করব?”

শিক্ষামন্ত্রী জানান, ইতোমধ্যে একটি টোল ফ্রি লাইন (৩৩৩৬) চালুর কাজ শেষের দিকে, শিগগিরই সেটা চালু করা হবে। এই হটলাইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ে কথা বলে কোথায় সমস্যা আছে, কোথায় বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে, তা নিয়ে কথা বলতে পারবে।

“কমিউনিটি রেডিও ব্যবহারের বিষয়েও কাজ চলছে। একই সাথে আমাদের প্রতিটি স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব, প্রতিটি ইউনিয়নে তথ্যসেবা কেন্দ্র আছে, সেগুলোকে আমরা কাজে লাগাতে পারি।”

দীপু মনি বলেন, “আমরা অনলাইন শিক্ষার দিকে যাচ্ছি। করোনার সময় আমরা কাজে লাগাতে শুরু করেছি। অনলাইন এডুকেশনের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে বড় বাধা মাইন্ডসেট। এই মাইন্ডসেট বাধাকে দূর করতে হবে। সবাই এক রকম দক্ষ না হলেও চেষ্টা করলে সেই দক্ষতা অর্জন খুবই কষ্টসাধ্য বা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার নয়।

“আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন টেলিকম কোম্পানির সাথে কথা বলছি, শিক্ষার ক্ষেত্রে যে প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার হবে কী করে সেগুলোকে হয় বিনামূল্যে না হলে অতি অল্পমূল্যে সেবা পেতে পারি তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। আমি ইন্টারনেটে বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি এবং আমার বিশ্বাস প্রত্যাহার হয়ে যাবে। কারণ অনলাইন এডুকেশনে ইন্টানেট প্রয়োজন।”

মাধ্যমিকে ১০ লাখ শিক্ষার্থী টিভির ক্লাস দেখতে পারছে না তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, “যাদের কাছে আমরা কোনোভাবে পৌঁছাতে পারছি না, তাদের ব্যাপারে আমরা চিন্তা করেছি কীভাবে কোনো একটা ডিজিটাল ডিভাইস তাদেরকে… ওটার মধ্যে ইনপুট দিয়ে দিতে পারি কিনা, সে ব্যপারে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি।”

কীভাবে পরীক্ষানির্ভর শিক্ষা থেকে বের হয়ে আসা যায় সে বিষয়েও কাজ চলছে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।

“এ বছর তিনটি বিষয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়নে পাইলট প্রকল্পে অসম্ভব সাড়া পেয়েছি, আগামী বছরে চালু করার চেষ্টা করছি। এরপর আরও কিছু বিষয় এবং সব বিষয়ের কিছু অংশ ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে।”

ব্যবহারিক ক্লাস না নিয়ে কারিগরিতে যেন সনদ দেওয়া না হয়- সে বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমরা যেটুকু শিক্ষা দিতে চাই সেটি অর্জন ছাড়া সার্টিফিকেট আমরা নিশ্চয়ই দেব না, এটি নিশ্চিত থাকতে পারেন।

“কিন্তু এখন আর এটি ভাবলে শুধু হবে না যে প্রাকট্যিকাল ক্লাসরুম ছাড়া বা ওয়ার্কশপ ছাড়া শিখতে পারেন না তা নয়, এখন ভার্চুয়ালি শেখার সুযোগ আছে। আমরা সেই জায়গায় না গেলেও যাব না তা যেন না হয়।”

করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আগামী ৬ অগাস্ট পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা আছে। ৬ অগাস্টের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধই থাকবে বলে আগেই ধারণা দিয়েছিলেন কর্মকর্তারা।

Place your advertisement here
Place your advertisement here