করোনাভাইরাস: গুজবেই বিপদ
– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২০
Find us in facebook
বিদেশফেরত শুনে বাড়িতে ঢুকতে বাধা, গ্রাম থেকে বেরিয়ে যেতে চাপ দেওয়া, কোভিড-১৯ এর লক্ষণ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির দাফনে বাধা, সম্ভাব্য রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ায় হাসপাতাল ভাঙচুর, অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরিতে বাধা- বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ার পর থেকেই এমন অনেক ঘটনার খবর মিলছে নিয়মিতই।
মূলত এই ভাইরাস নিয়ে গুজবনির্ভর ভুল ধারণার কারণেই এসব ঘটনা ঘটছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবৈজ্ঞানিক, অযৌক্তিক এবং অমূলক এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ নিজেদেরই ক্ষতি করছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআরের হিসাবে, রোববার (২৯ মার্চ) পর্যন্ত দেশে ৪৮ জন নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছেন। এ রোগে মারা গেছেন এখন পর্যন্ত ৫ জন। আইইডিসিআর বলছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে বা নিজের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া নিরাপদ। বিদেশফেরত মানুষকেও নিজের বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পরামর্শ শুরু থেকেই দিয়ে আসছে আইইডিসিআর।
রাজধানীর খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা এক নারী জানান, গত ২৩ মার্চ থেকে তার ৬৬ বছর বয়সী বাবার জ্বর, বমি, পেট খারাপ এবং বুকে ও পুরো শরীরে ব্যথা শুরু হয়। করোনাভাইরাসের উপসর্গের সঙ্গে মিল থাকায় অনেক চেষ্টা করে আইইডিসিআরে নমুনা পরীক্ষা করিয়েছেন। ২৭ মার্চ পাওয়া পরীক্ষার ফলে দেখা যায় তার করোনাভাইরাস নেই।
তিনি জানান, ২৮ মার্চ চিকিৎসককে দেখাতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে যান তারা। রাত আটটায় বাসায় ফিরতে গেলে বাধা দেয় অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা। তাদের আইইডিসিআরের প্রতিবেদন দেখানোর পরও কাজ হচ্ছিল না। শেষে পুলিশের শরণাপন্ন হন তারা।
“পুলিশ এসে তাদের দীর্ঘক্ষণ বুঝিয়ে শেষে বাসায় উঠিয়ে দিয়ে যায়। এর মধ্যে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা আমার অসুস্থ বাবাকে বাইরে থাকতে হয়েছে। আড়াই ঘণ্টা পর তারা আমার বাবা ভাইদের বাসায় ঢুকতে দেয়। আমার বাবা যতটুকু ফিট থাকার চেষ্টা করেছিল, মানুষগুলো তাকে ঠিক তার দ্বিগুণ কষ্ট দিয়ে অসুস্থ করে দিয়েছিল।” আবারও হেনস্তার শিকার হতে পারেন-এই শঙ্কায় পরিচয় প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন ওই নারী।
মালয়েশিয়ার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মাহবুব আলম মালয়েশিয়া থেকে ভারতে আসেন। ২১ মার্চ আবার মালয়েশিয়া ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তার। ১৮ মার্চ মালয়েশিয়া লকডাউন করায় ভারত থেকে দেশে আসেন তিনি।
মাহবুব আলম জানান, সাভারের বাসায় গেলে উঠতে দেয়নি প্রতিবেশিরা। পরে টাঙ্গাইলে নানাবাড়ি গেলে সেখানেও বাধার মুখে পড়েন তিনি।
“ওইখানে আমাদের আলাদা বাড়ি। ভেবেছিলাম হোম কোয়ারেন্টিনের জন্য ভালো হবে। কিন্তু কিভাবে যেন জানতে পেরে গ্রামের কয়েকশ মানুষ চলে আসে। তারা বলে যে সেখানে থাকা যাবে না। স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শেষে আমি সেখানে থাকতে পারি।”
“আমি সংক্রমিত না হওয়ার পরও আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীরা এমন আচরণ করেছে। লোকজন এভাবে প্যানিক তৈরি করলে মানুষ তো পঞ্চাশ ভাগ অসুস্থ এমনিতেই হয়ে যাবে।” দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদেশফেরতদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া কোভিড-১৯ আক্রান্ত সন্দেহে মারা গেছে এই অজুহাতে গত ২৮ মার্চ বগুড়ার শিবগঞ্জে এক ব্যক্তির লাশ দাফনে বাধা দেয় স্থানীয়রা। ঢাকার খিলগাঁওয়ের তালতলা কবরস্থানেও কোভিড-১৯ এ মারা যাওয়া দুই ব্যক্তিকে দাফন করতে বাধা দেয় এলাকাবাসী। পরে তাদেরকে মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়। ২২ মার্চ রাজধানীর উত্তরায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীকে ভর্তি ও চিকিৎসা সেবা দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে স্থানীয়রা। শনিবার তেজগাঁওয়ে এই ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল তৈরির কাজে বাধা দেওয়া হয়।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. নজরুল ইসলামের মতে, বাংলাদেশের মানুষের অনেক গুণ আছে, আবার কিছু কঠিন খারাপ দোষও আছে। গুজবে বিশ্বাস করা এর মধ্যে একটা।
তিনি বলেন, “কোনো ব্যক্তি নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ তার সংস্পর্শে না আসছে ততক্ষণ সংক্রমিত হওয়ার ভয় নেই।
“বিশেষজ্ঞ কেউ তো এমন কথা বলছে না। নতুন অজানা রোগ নিয়ে মানুষ আতঙ্কিত সেটা জানি। কিন্তু এতে তো তারাও আক্রান্ত হতে পারে। যারা অন্যকে বাধা দিচ্ছেন, সামাজিকভাবে হেয় করছেন তারা নিজেরাও তো কাল আক্রান্ত হতে পারেন। এই বিষয়গুলো কঠিনভাবে বন্ধ করতে হবে।”
আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুশতাক হোসেন বলেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত বা সন্দেহজনক ব্যক্তির সঙ্গে বিরূপ আচরণ করলে এর ফল খারাপ হতে পারে। তখন কারও শরীরে লক্ষণ দেখা দিলেও তিনি তা গোপন করবেন সামাজিকভাবে নিগৃহীত হওয়ার ভয়ে। “যদি বাসায় থাকে তাহলে সেটা ছড়ানোর সম্ভাবনা কম। কিন্তু তাকে যদি বাইরে বের করে দেওয়া হয় তাহলে তার মাধ্যমে আরও বেশি মানুষের সংক্রমিত হওয়ার ভয় থাকে। এটা আরও বেশি বিপজ্জনক। এভাবে আমরা নিজের পায়ে কুড়াল মারছি। নিজে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা পাব না, আমার ঘরের মধ্যে রোগী থাকলেও জানতে পারব না।”
এই ভাইরোলজিস্টের মতে, ‘দায়িত্বহীন’ কিছু মানুষের এ ধরনের কর্মকাণ্ড দেশের সবার সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, শিশু হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল রয়েছে। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পাশেই গণভবন, মোহাম্মদপুর এলাকা। মহাখালী বক্ষব্যাধি, কুষ্ঠ হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, ক্যান্সার হাসপাতালসহ বেশকিছু হাসপাতাল কাছাকাছি দূরত্বে। পাশেই গুলশান, নিকেতন ও মহাখালীর মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা।
হাসপাতাল থেকে রোগ ছড়ালে এসব এলাকায় মানুষ বসবাস করতে পারত না বলে মনে করেন মুশতাক হোসেন। “যক্ষ্মা এবং সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের আশপাশে কি জনবসতি নেই? সেখানে কোয়ার্টারে চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও থাকেন। তারা তো কোনো রোগে ভুগছেন না।
“রোগীকে আলাদা ঘরে রাখা হয়, সংক্রমণ কমাতে ওষুধ দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা মাস্ক, গ্লাভসসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত সেবা দেন। জীবাণুনাশক দিয়ে সবকিছু পরিষ্কার করা হয়। এ কারণে হাসপাতাল থেকে রোগ ছড়ানোর সুযোগ সবচেয়ে কম।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চীনে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৬ লাখ ৬৫ হাজার ১৩ জন বিভিন্ন বন্দর হয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। বর্তমানে ২৮ হাজার ৪৮৩ জন কোয়ারেন্টিনে আছেন। এর মধ্যে হাসপাতালসহ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ১৪২ জন এবং ২৮ হাজার ৩৪১ জন হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৫৩ হাজার ৪৪২ জন বিদেশফেরতকে।
- ৭ বছর ধরে নিজ বাড়িতে শিকলে বন্দী নুর
- রাণীশংকৈলে কৃষকের মাঝে বিনামূল্য পাটবীজ ও সার বিতরণ
- সৈয়দপুরে ফেসবুক লাইভে থেকে যুবকের আত্মহত্যা
- কুড়িগ্রামে ভুটানের রাজার মধ্যাহ্নভোজের মেন্যুতে যা যা ছিল
- সুন্দরগঞ্জ হৃদরোগে আক্রান্ত রুসদাকে বাঁচাতে মায়ের আকুতি
- বালিয়াডাঙ্গীতে বাড়ির আঙিনায় গাঁজা চাষ, গ্রেপ্তার ১
- ভেজাল খাদ্যপণ্য সরবরাহ, বিরামপুরে ২ জনের কারাদণ্ড
- রংপুরে আলু পরিবহনে ফিরেছে ঘোড়ার গাড়ি
- বিরামপুরে এক পা বিশিষ্ট্য সন্তানের জন্ম
- রংপুরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় আগেই
- ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
- হাতীবান্ধায় জেলের জালে উঠে এল প্রতিবন্ধী যুবকের মরদেহ
- শখের ড্রাগন বাগানে স্বাবলম্বী জহুরুল ইসলাম
- চিরিরবন্দরে সেচের কাজে এখনও ব্যবহৃত হচ্ছে সেঁউতি-দোন
- পার্বতীপুরে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে বাই-সাইকেল বিতরণ
- কিশোরগঞ্জে হতদরিদ্র ১৬০ নারীর মাঝে বকনা গরু বিতরণ
- কুড়িগ্রাম পরিদর্শন শেষে ভুটানের রাজা ফিরলেন নিজ দেশে
- রংপুরে ইফতারে পছন্দের তালিকায় ‘মস্কট শাহী হালুয়া’
- নাগেশ্বরীতে ল্যাম্ব’র উদ্যোগে শিখন বিনিময় কর্মশালা
- ডোমারে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১০ হাজার টাকা জরিমানা
- কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা
- পলাশবাড়িতে ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার ১
- বীরগঞ্জে জুয়া খেলার সরঞ্জামসহ দুই নারী আটক
- স্বপ্নজয়ী মা নাজমা রহিমের দাফন সম্পন্ন
- সারাদিন না খেয়ে থাকায় মুখে দুর্গন্ধ হচ্ছে, সমাধানে করণীয়
- জলবায়ু সহনশীল দেশ গড়তে নারীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
- বাংলা নববর্ষ উদযাপনে মানতে হবে ১৩ নির্দেশনা
- দায়িত্বহীনতার কারণে ঈশ্বরদীতে ট্রেন দুর্ঘটনা: রেলমন্ত্রী
- ‘সোনার বাংলা বিনির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে’
- শিশুরাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশের মূল কারিগর
- ‘সংস্কারের পাশাপাশি আগামী বাজেটে কর্মসংস্থানে নজর দেওয়া হবে’
- ফজর সালাতের প্রতি আর গাফেলতি-অলসতা আসবে না, যদি...
- ঢাকায় ৬০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করবে সরকার: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
- ঠাকুরগাঁওয়ে অ্যাম্বুলেন্স-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, নিহত ১
- রংপুর বিভাগে মাদক বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না
- বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন
- কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে অব্যাহতি
- গাজায় শিশুহত্যা চলছে, কোথায় বিশ্বমানবতা- প্রধানমন্ত্রী
- ১২ বছরে প্রাথমিকে ২ লাখ ৩৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগ
- রমজানে মুমিন মুসলমানের প্রতিদিনের আমল
- রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে যা করবেন
- সেবক হয়ে জেলা প্রশাসকদের কাজ করে যেতে হবে : স্পিকার
- জলবিদ্যুৎ আমদানির আলোচনা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- চলছে কর্মযজ্ঞ, অক্টোবরে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল চালু
- সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যদের শপথ আজ
- শ্রীলংকার বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ শুরু হবে যখন
- রোজা রাখার ৫টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
- নীলফামারীতে বিটরুট চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার
- মধ্যপন্থা: মুমিনের বৈশিষ্ট্য
- ভারতবিরোধী স্লোগানের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা লুকিয়ে আছে