• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

উত্তরাঞ্চলে এ সপ্তাহেই ফের শৈত্যপ্রবাহ

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

দেশের সবচেয়ে উত্তরের জেলা পঞ্চগড় থেকে ক্রমে দক্ষিণের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। তবে কয়েক দিন ধরে এই বৃদ্ধির ফারাক মাত্র কয়েক ডিগ্রিতে সীমাবদ্ধ। টানা ছয় দিন ধরে এক অঙ্কে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে পঞ্চগড়ে। ফলে উত্তরের অন্য জেলাগুলোয় বিশেষ করে নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধায় পারদের ঘর গড়ে ১০-১২ ডিগ্রি পেরোয়নি। এতে গোটা উত্তরাঞ্চলই কাঁপছে শীতে।

যদিও এরই মধ্যে সারা দেশের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। কারণ, মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ কেটে গেছে। তবে এ সপ্তাহেই ফের শৈত্যপ্রবাহ হানা দিতে পারে উত্তরাঞ্চলে।

আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বলেন, চলতি সপ্তাহে উত্তরাঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে। এখন যেহেতু শীতকাল। তাই স্বাভাবিকভাবেই সারা দেশের তাপমাত্রা কমবে। কুয়াশাও বাড়বে। জানুয়ারিতে সারা দেশে একাধিক শৈতপ্রবাহ আসতে পারে বলে জানান তিনি।

এ অবস্থায় কৃষক, শ্রমজীবী, গরিব ও ছিন্নমূল মানুষের আরো দুর্ভোগে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনাকালে এমনিতেই আয় কমেছে এসব মানুষের। শীত তাদের জন্য এসেছে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে। শীতের কারণে তাঁরা পড়েছেন বেশি বিপদে। কারণ, তাঁরা কাজে যেতে পারছেন না। ফলে খাবার জুটছে না; শীতেও কষ্ট পাচ্ছেন। বহু মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন। সরকারিভাবে কিছু কম্বল বিতরণ করা হলেও তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম।

এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উত্তরের ১৬ জেলায় কমপক্ষে ৩২ লাখের বেশি হতদরিদ্র মানুষ রয়েছে। আরেক পরিসংখ্যান বলছে, এই অঞ্চলে ১০ লাখের বেশি দিন এনে দিন খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ রয়েছে। তীব্র শীতে বাড়ছে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, জ্বর, ডায়রিয়াসহ নানা রোগ-বালাই।

হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঝিরঝির করে বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরছে রাতে। শীতে কষ্ট পাচ্ছে মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুসহ অন্যান্য প্রাণীও। অনেকেই গরু-ছাগলের গায়ে চটের বস্তা জড়িয়ে শীত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।

গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। জেলায় শীতের তীব্রতা বেশি থাকছে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত। এ সময় উত্তুরে হাওয়া সরাসরি এই জনপদের ওপর দিয়ে বয়ে যায়। ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে চারপাশ। মাঝরাতে হাড় কাঁপানো শীত অনুভূত হয়। অনেক বেলা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলে না। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীত কমতে থাকে। তবে বিকেল গড়াতেই ফের বাড়তে থাকে ঠাণ্ডা। প্রায় একই অবস্থা ঠাকুরগাঁও, রংপুর, গাইবান্ধাসহ অন্যান্য জেলায়। তবে এসব জেলায় তাপমাত্রা এক অঙ্কে নামেনি।

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত শীতার্তদের মধ্যে ২২ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩০ লাখ টাকা উপজেলাগুলোতে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এই টাকায়ও শীতবস্ত্র কিনে শীতার্তদের দেওয়া হবে। তবে বরাদ্দের তুলনায় চাহিদা আরো বেশি। ঠাকুরগাঁওয়ে ২৫ হাজার ৪০০ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ জেলায় আরো ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। রংপুর জেলা ত্রাণ অফিসে বরাদ্দ এসেছে সরকারিভাবে ৫১ হাজার শীতবস্ত্র। এরই মধ্যে এসব বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া শীতবস্ত্র কেনার জন্য আরো ৪৮ লাখ টাকা এসেছে।

ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নাদিরুল ইসলাম চপল জানান, স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে এখন চার গুণ পর্যন্ত বেশি রোগী ভর্তি হওয়ায় কিছুটা হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। পার্শ্ববর্তী পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলার কিছু অংশের মানুষ এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে বলে জানান তিনি। ডা. নাদিরুল জানান, গত দুই দিনে শীতজনিত রোগে সদর হাসপাতালে ৪০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি হয়েছে ১০৭টি শিশু।

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, শীতজনিত কারণে আগের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।

Place your advertisement here
Place your advertisement here