• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

আতঙ্কিত না হয়ে, প্রশ্নোত্তরে জেনে নেই করোনা ভাইরাস

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৯ মার্চ ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

COVID-19(করোনাভাইরাস রোগ) রোগ, SARS-CoV-2 ভাইরাসের দু’টি ভিন্ন ভিন্ন স্ট্রেইনের(L এবং, S), যে কোনোটি দ্বারা সংক্রমনের ফলে ঘটে থাকে । এই রোগ নিয়ে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। শিখতে হবে, কী করে সম্মিলিতভাবে এটি প্রতিরোধ করতে হয়।এই রোগের সফল প্রতিরোধে, সরকারের চেয়েও বড় ভূমিকা রাখবে, ব্যক্তি এবং সমাজের সচেতনতা, জ্ঞান এবং, প্রজ্ঞা। নিজেকে খুব ছোট ছোট কিছু প্রশ্ন করার মাধ্যমে এবং এর উত্তর খোঁজার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি করোনাভাইরাস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। আসুন জেনে নেই।

প্রশ্ন১:

COVID-19(করোনা ভাইরাস রোগ) এর লক্ষণ কি কি?

উত্তর: সবচেয়ে কমন লক্ষণ:

১) জ্বর

২) শুকনো কাশি/ গলা ব্যথা

৩) ক্লান্ত লাগা/ গা ম্যাজম্যাজ করা

অন্যান্য লক্ষণ:

১) নাক বন্ধ থাকা

২) নাক দিয়ে পানি পড়া

৩) শরীর ব্যাথা

৪) পাতলা পায়খানা

৫) শ্বাসকষ্ট

প্রশ্ন২(ক)

SARS-CoV-2 ভাইরাস, শরীরে ঢোকার কতদিন পর আমার COVID-19 (করোনাভাইরাস রোগ) রোগের লক্ষণ দেখা দিবে?

উত্তর২(ক)

এ ভাইরাস মানুষের শরীরে ঢোকার চার থেকে চৌদ্দ দিনের মধ্যে, COVID-19(করোনাভাইরাস রোগ) রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া শুরু হয়। তবে বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই, পাঁচ দিনের মধ্যেই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া শুরু হয়ে যায়।

প্রশ্ন২(খ): COVID-19(করোনা ভাইরাস রোগ) এর রোগীর অবস্থা কখন ‘সিরিয়াস’ বলবো?

উত্তর২(খ): যখন COVID-19 রোগীর শ্বাসকষ্ট দেখা দিবে ।

*প্রশ্ন৩:

COVID-19 রোগ (করোনাভাইরাস রোগ) কীভাবে ছড়ায়?

 

উত্তর৩: আক্রান্ত রোগীর হাঁচি/কাশি/থুতূ/কফের মাধ্যমে, এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে, আক্রান্ত রোগীকে মাস্ক পড়ানো জরুরি । এবং আক্রান্ত রোগীর (বা, যে কোন হাঁচি-কাশির রোগীর) ৩ ফুটের মধ্যে যাওয়া উচিত নয়।

*প্রশ্ন৪(ক): COVCOVID-19(করোনা ভাইরাস রোগ) এর রোগীর অবস্থা কখন ‘সিরিয়াস’ বলবো?

উত্তর ৪(ক) যখন COVID-19 রোগীর শ্বাসকষ্ট দেখা দিবে

প্রশ্ন৪(খ) COVID-19 রোগীর প্রস্রাব বা পায়খানার মাধ্যমে কী, এই রোগ ছড়াতে পারে?

উত্তর৪(খ): না । এখন পর্যন্ত এমন কিছুই প্রমাণিত হয়নি ।

প্রশ্ন ৫: যদি কোন টেবিল-চেয়ার, দরজার হাতল, সিঁড়ি বা এস্কেলেটারের রেলিং, বা দেয়ালে, COVID-19 (করোনাভাইরাস রোগ) রোগীর কফ/থুতু/শ্লেষ্মা পড়ে, তাহলে, সেখানে এই ভাইরাস, কতো সময় থাকতে পারে?

উত্তর৫: কয়েক ঘণ্টা থেকে, কয়েকদিন পর্যন্ত। সুতরাং, এমন কোন জায়গা স্পর্শ করলে, অবশ্যই সাবান পানি দিয়ে হাত ধুবেন বা, এলকোহল বেইজড হ্যাণ্ড স্যানিটাইজার দিয়ে, হাত পরিষ্কার করবেন ।

প্রশ্ন৬: COVID-19(করোনা ভাইরাস রোগ)রোগ, কতটুকু ঝুঁকিপূর্ণ?

উত্তর৬: ঝুঁকি কতটুকু তা বুঝতে, নীচের পয়েন্টগুলো লক্ষ্য করুন:

১) ৮০% COVID-19 রোগী, তেমন কোন চিকিৎসা ছাড়াই ভালো হয়ে যায় ।

২) ১৬%-১৭% COVID-19 রোগী গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়। এদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হয় ।

৩) ৪%-৫% COVID-19 রোগীর আইসিইউ সেবা লাগতে পারে ।

৪) ৩.৪% COVID-19 রোগী মারা যায় (সময়ের সাথে, এ হার কমে আসবে) ।

৫) শিশু, বৃদ্ধ, ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেশার, হার্টের অসুখ, ফুসফুসের অসুখ এর রোগী, এবং, অন্যান্য কারণে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম(যেমন, হাসপাতালে ভর্তি যে কোন রোগী) – তাদেরই COVID-19 রোগে, গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ।

*** উপরের পয়েন্টগুলো পড়ে, COVID-19 কে খুব সাধারণ সমস্যা মনে হলেও, এ সমস্যাকে জটিল করে তুলতে পারে, নীচের বিষয়গুলো:

ক) এটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে অসুখ ‌এবং, একটি নতুন ইনফেকশাস রোগ এবং, ইতোমধ্যেই, এই নতুনভাইরাসটির, আরও একটি ভিন্ন স্ট্রেইন পাওয়া গেছে ।

খ) আমাদের দেশ অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ । সুতরাং, একজন থেকে অন্যজনে রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়া, খুব সহজ।

গ) আমাদের ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা রক্ষার অভ্যাস, অতোটা ভালো নয় ।

*** আমাদের সচেতনতা, দেশকে রক্ষা করতে পারে, COVID-19 রোগের আগমন এবং, বিস্তারের হাত থেকে ।

প্রশ্ন৭: মাস্ক ব্যবহার করে কি আমি COVID-19(করোনাভাইরাস রোগ) এর হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি?

উত্তর৭: সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে, WHO মাস্ক ব্যবহার করা সাজেস্ট করে না । মাস্ক শুধুমাত্র হাঁচি/কাশি/জ্বর এর রোগীদের এবং, যারা এসব রোগীর স্বাস্থ্যসেবার সাথে নিয়োজিত আছেন, তাদের ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। অকারণে মাস্ক এর ব্যবহার, মানুষের মধ্যে ‘false sense of security’ জন্ম দেয়।

প্রশ্ন৮: মাস্ক যদি ব্যবহার নাই করি, তাহলে কিভাবে আমি COVID-19 রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি?

উত্তর৮: ১) বারবার সাবান পানিতে হাত ধোয়ার বিকল্প নেই । নিজের আশেপাশের মানুষদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে বারবার অবহিত করুন

২) হঠাৎ করে হাঁচি-কাশি পেলে, হাতের কনুই এর ভাজ দিয়ে, কিংবা টিসু দিয়ে, মুখ ঢেকে হাঁচি বা কাশি দিতে হবে। তবে টিস্যু ব্যবহার করলে, সেটা যেখানে সেখানে ফেলা যাবে না।

৩) কারো যদি জ্বর/হাঁচি/কাশি ইত্যাদি থাকে থাকে, তার থেকে কমপক্ষে 3 ফুট দূরে থাকতে হবে।

প্রশ্ন৯: মাস্ক কি তবে সুস্থ মানুষকে কোনভাবেই সাহায্য করে না?

উত্তর৯: একেবারেই যে করেনা, সে কথা বলা ঠিক হবে না। মাস্ক ব্যবহার করলে, অকারণে বারবার নাকে-মুখে-চোখে হাত দেওয়া বন্ধ থাকে।

প্রশ্ন১০: আমার পোষা কুকুর-বেড়াল বা পাখি থেকে কি আমার COVID-19 (করোনাভাইরাস রোগ) রোগ হতে পারে??

উত্তর১০: না । এমন কোনো সম্ভাবনা নেই। এটি একজন মানুষ থেকে, অন্য মানুষে ছড়ায় ।

( হংকং -এ মানুষ থেকে পোষা কুকুরে, COVID-19 রোগ ছড়ানোর একটি ঘটনা(৫/৩/২০) প্রমাণিত ও প্রকাশিত হয়েছে। অত:পর হংকং এগ্রিকালচার-ফিশারিজ এণ্ড কনজারভেশন ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে, পোষা প্রাণীকে চুমু খেতে বারণ করা হয়েছে)

প্রশ্ন১১: কোন খাবার থেকে কি আমার COVID-19 রোগ ( করোনা ভাইরাস রোগ) হতে পারে?

উত্তর১১: না । সরাসরি খাবার থেকে এ রোগ হওয়ার তেমন কোন সম্ভাবনা নেই। এটি এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের মধ্যে ছড়ায়।

প্রশ্ন১২: আমি যদি ব্যবসা বা, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে, COVID-19(করোনাভাইরাস রোগ) রোগ আছে, এমন কোন দেশ থেকে, কোন পণ্যের প্যাকেট বা, বাক্স আনাই, তাহলে কি, আমারও COVID-19 রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে??

উত্তর১২: ১) যদি দুর্ভাগ্যক্রমে বিদেশে, আপনার প্যাকেট/বাক্সের গায়ে, COVID-19 রোগীর কফ/থুতু/শ্লেষ্মা পড়েও থাকে, সেখানে ভাইরাসটি টিকে থাকতে পারবে, সর্বোচ্চ কয়েকদিন। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই, বিদেশ থেকে পণ্য আসতে, আরো অনেক বেশী সময় লাগে। এছাড়া আসার সময় পার্সেলটি বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন তাপমাত্রার পরিবেশ অতিক্রম করে আসে। । সুতরাং, আপনার পণ্যের গায়ে করোনাভাইরাসের টিকে থাকার কথা নয়।

২) যদি আপনার পার্সেল, দিনের মধ্যেই, পৌঁছে যায় তাহলে, পার্সেলটি খোলার আগে এবং, পরে, ভালো করে, সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলবেন ।

*** আমাদের অধিক সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে তবে, দৈনন্দিন কার্যক্রম বন্ধ করে রাখা যাবে না ।

প্রশ্ন১৩: COVID-19 (করোনাভাইরাস রোগ) রোগের বিরুদ্ধে কোন্ এন্টিবায়োটিক কাজ করে? আমার যদি, জ্বর হাঁচি কাশি শরীর ব্যথা হয়, তাহলে কি আমি এন্টিবায়োটিক খাব?

উত্তর১৩:

১) COVID-19 (করোনাভাইরাস রোগ) রোগ, একটি ভাইরাসজনিত ব্যাধি। আর এন্টিবায়োটিক কাজ করে, ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশনের বিরুদ্ধে। সুতরাং, COVID-19 রোগের বিরুদ্ধে কোন এন্টিবায়োটিক কাজ করবে না।

২) আপনার জ্বর হাঁচিকাশি শরীর ব্যথা হলে, তা ভাইরাস এর কারণে না কি, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে, সেটা আপনার চিকিৎসক ভালো বুঝবে। সুতরাং, এন্টিবায়োটিক না খেয়ে, চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন। তিনি সিদ্ধান্ত নিবেন, আপনার অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন আছে কি না । অপ্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক খেলে, হিতে বিপরীত হতে পারে।

প্রশ্ন১৪: COVID-19(করোনাভাইরাস রোগ) এর বিরুদ্ধে কোন টিকা বা ওষুধ আছে কি? এই রোগ হয়ে গেলে, তার চিকিৎসা কি?

উত্তর১৪: ১) COVID-19(করোনাভাইরাস রোগ) রোগের বিরুদ্ধে এখনও কোন টিকা আবিষ্কার হয়নি । তবে, ইতোমধ্যে ভাইরাসটির দুটি ভিন্ন ভিন্ন স্ট্রেইন আবিষ্কার হওয়ার কারণে, কার্যকর ভ্যাকসিন বা টিকা আবিষ্কার করার ক্ষেত্রে, আগের ধারণা করা সময়, দেড়-দুই বছরের চেয়ে বেশীই লাগবে ।

২) COVID-19(করোনাভাইরাস রোগ) রোগের বিরুদ্ধে, এখন পর্যন্ত কোন সুনির্দিষ্ট ঔষধও আবিষ্কৃত হয়নি। তবে, যে দেশগুলোতে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে, সেখানে বিভিন্ন এন্টিভাইরাল ঔষধ নিয়ে গবেষণা চলছে।

৩)COVID-19(করোনাভাইরাস রোগ) রোগের মূল চিকিৎসা, আপাতত হল, সাপোর্টিভ চিকিৎসা। অর্থাৎ,

-রোগীকে আইসোলেশন(অন্যদের থেকে আলাদা করে রাখার ব্যবস্থা)-এর ব্যবস্থা করা । এই আইসোলেশন, রোগীর নিজের বাসায়ও হতে পারে আবার, গুরুতর অসুস্থ রোগীর ক্ষেত্রে, হাসপাতালেও হতে পারে।

– জ্বর-গা ব্যথা হলে, জ্বর-ব্যথানাশক ওষুধ দেওয়া

-প্রচুর পানি পান করানো

-শ্বাসকষ্ট হলে অক্সিজেন দেওয়া

-অক্সিজেনের কাজ না হলে, আই সি ইউ তে স্থানান্তর করে ভেন্টিলেটর ব্যবহার করা

প্রশ্ন১৫:

‘আমি COVID-19(করোনাভাইরাস রোগ) রোগে আক্রান্ত’- এ সন্দেহ হলে, ডাক্তার আমার কি কি ল্যাবরেটরি টেস্ট করতে দেবে?

উত্তর১৫:

আপনি জ্বর গা-ব্যথা সর্দি হাঁচি কাশি বা শ্বাসকষ্ট – এসব সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে/হাসপাতলে গেলে, উনি আপনার‌ রেসপিরেটরি আইসোলেশন নিশ্চিত করার পাশাপাশি, অন্যান্য প্রয়োজনীয় টেস্ট এর সাথে, নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলোও করবেন:

১) কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট

২) চেস্ট এক্সরে [সুযোগ থাকলে চেস্ট সিটিস্ক্যান]

৩) থ্রোট সোয়াব [ ক) নাক দিয়ে সোয়াব-স্টিক ঢুকিয়ে স্যাম্পল কালেকশন এবং, খ) মুখ দিয়ে সোয়াব স্টিক ঢুকিয়ে স্যাম্পল কালেকশন ] টেস্ট

৪) যদি আপনার কফ থেকে থাকে, তাহলে কফ স্যাম্পল টেস্ট ।

প্রশ্ন১৬:

করোনাভাইরাস এর case fatality rate, ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন রকম কেন?

উত্তর ১৬:

কত সক্ষমতার সাথে কোন দেশ করোনাভাইরাস রোগের মোকাবেলা করতে পারছে, তার পাশাপাশি, কতো বেশী বেশী COVID-19(করোনা ভাইরাস রোগ) এর রোগী, সফলভাবে সনাক্ত করা যাচ্ছে, তার উপরও নির্ভর করে, দেশটির মধ্যে, COVID-19 এর Case fatality rate.

যেমন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যথাযথ রোগ নির্ণয় ক্ষমতার অভাবে, এ যাবৎ মাত্র চারশ চৌচল্লিশ জন রোগী সনাক্ত করা গেছে । এর মধ্যে, ১৯ জন মৃত্যুবরণ করেছে । সুতরাং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, COVID-19 রোগের Case fatality rate হলো (১৯*১০০)/৪৪৪ = ৪.২৭% ।

অপরপক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ায়, রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত দক্ষতা থাকায়, এ যাবৎ ৭,১৩৪ জনের COVID-19 রোগ সনাক্ত করা গেছে এবং, এর মধ্যে, মৃত্যুবরণ করেছে ৫০ জন । সুতরাং, দক্ষিন কেরিয়ায় COVID-19 এর Case fatality rate হলো, (৫০*১০০)/৭১৩৪ = ০.৭%

WHO সমগ্র বিশ্বের Case fatality rate হিসাব করে । তাই, WHO এর হিসেব মতো এই মুহূর্তে COVID-19 এর case fatality rate হওয়ার কথা, (৩,৬০০*১০০)/১০৬২১২ = ৩.৩৮%

মনে রাখবেন উপরের নাম্বারগুলো সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে পারে।

 

প্রশ্ন ১৭:

করোনাভাইরাস রোগ প্রতিরোধে কোন বিষয়গুলো মনে রাখা সবচেয়ে জরুরি?

উত্তর ১৭:

COVID-19 (করোনাভাইরাস রোগ) রোগের ব্যাপারে সব কথা যদি ভুলেও যান, দয়া করে, নিচের কথা কয়টি প্লিজ, ভুলবেন না:

১) বারবার কব্জি পর্যন্ত দুই হাত, সাবান পানি দিয়ে ধোয়াকে অভ্যাসে পরিণত করুন ।

২) বারবার নিজের চোখ-নাক-মুখে, হাত লাগানোকে, অপরাধ হিসেবে গণ্য করুন।

৩) কোন লোকের হাঁচি-কাশি-সর্দি থাকলে, তাকে মাস্ক পড়তে বলুন এবং, তার থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।

৪) নিজের যদি হাঁচি-কাশি পায়, হাতের কনুই দিয়ে মুখ ঢেকে হাঁচি বা কাশি দিন। অথবা, টিসু পেপার দিয়ে মুখ ঢেকে হাঁচি বা কাশি দিন এবং টিস্যু পেপারটি ঢাকনা লাগানো বিনে ফেলে, সাবান পানিতে হাত ধুয়ে নিন।

৫) হ্যাণ্ডশেক করা বা, জড়িয়ে ধরা থেকে বিরত থাকুন ।

প্লিজ! প্লিজ! মনে রাখবেন, কেবলমাত্র আপনি আর, আপনার আশেপাশের দুই-একজন উপরের নিয়মগুলো মেনে চললে কোন লাভ নেই; প্রতিহত হবে না COVID-19. এই রোগ কেবলমাত্র তখনই প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে যখন, সমাজের বেশিরভাগ মানুষই উপরের নিয়মগুলো যথাযথভাবে মেনে চলবে । নিয়মগুলো খুব সহজ হলেও, নিয়মিত অনুসরণ করা খুবই কঠিন। সুতরাং, চলুন সমাজের বেশিরভাগ মানুষকে এ নিয়মগুলো জানাই এবং মেনে চলতে সাহায্য করি ।

প্রশ্ন১৮:

কি কি করলে আমি সন্দেহ করতে পারি যে, আমার বা আমার পার্শ্ববর্তী কোন লোকের COVID-19 (করোনা ভাইরাস রোগ) হয়ে থাকতে পারে? এসব ক্ষেত্রে আমার কি কি করনীয়?

উত্তর ১৮:

এ ব্যাপারে, IEDCR সুনির্দিষ্টভাবে কিছু নির্দেশ এবং উপদেশ দিয়েছে। নিচে এই নির্দেশ এবং উপদেশ সমূহ উল্লেখ করা হলো:

COVID-19 রোগী বা, ‘সন্দেহজনক রোগী’র বাড়ীতে পরিচর্যার নির্দেশনা:

[ COVID-19 আক্রান্ত সন্দেহজনক রোগি যার মৃদু সংক্রমণ রয়েছে, এবং COVID-19 আক্রান্ত রোগী যার আর হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই, তাদের জন্য প্রযোজ্য।

(বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সিডিসি, আমেরিকা-এর নির্দেশনানুযায়ী পরিমার্জিত)

যদি কোন ব্যক্তির জ্বর (১০০° ফারেনহাইট/৩৮° সেলসিয়াস এর বেশি) /কাশি/সর্দি/গলা ব্যথা/শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি থাকে এবং তিনি বিগত ১৪ দিনের মধ্যে চীন বা অন্য কোন আক্রান্ত দেশ (সিঙ্গাপুর, দঃ কোরিয়া, জাপান, ইটালী, ইরান ইত্যাদি) ভ্রমণ করে থাকেন অথবা, উক্ত সময়সীমার মধ্যে নিশ্চিত/সম্ভাব্য COVID-19 আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এসে থাকেন, তবে ঐ ব্যক্তি COVID-19 আক্রান্ত ‘সন্দেহজনক রোগী’ হিসেবে বিবেচিত হবেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী COVID-19 আক্রান্ত হয়েছে এমন সন্দেহকৃত রোগীদের পৃথকীকরণ, চিকিৎসা ও মনিটরিং, হাসপাতালে হওয়া উচিৎ। কিন্তু, বিভিন্ন কারণে, যেমন- হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা যদি অপ্রতুল হয় অথবা রোগী যদি হাসপাতালে থাকতে রাজী না হয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে এ সকল রােগীদের বাড়ীতে স্বাস্থ্য সেবা/ পরিচর্যার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।

উপযুক্ত বিবেচনা সাপেক্ষে, রোগীরর যদি মৃদু সংক্রমণ থাকে (অল্প জ্বর, কাশি, গায়ে ব্যথা, সর্দি, গলা ব্যথা এবং কোন বিপদ চিহ্ন- শ্বাসকষ্ট, অতিরিক্ত কফ, কাশির সাথে রক্ত যাওয়া, ডায়রিয়া এবং/অথবা বমি, বমি বমি ভাব, মানসিক অবস্থার পরিবর্তন- নিস্তেজভাব, ঘােরের ভিতর থাকা ইত্যাদি না থাকে); এবং অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতা, যেমন-শ্বাসতন্ত্র বা হৃদরােগের সমস্যা, রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা দূর্বল করে এমন অসুস্থতা না থাকে, তবে তারা বাড়ীতে স্বাস্থ্য সেবা/ পরিচর্যা পেতে পারেন।

COVID-19 আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তিকৃত রােগী, যাদের আর হাসপাতালে থাকার প্রয়ােজন নেই, তাদের জন্যও একই নীতি প্রযােজ্য। স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিদিন ফোনে অথবা, সম্ভব হলে, বাড়ীতে গিয়ে তাদের বর্তমান শারীরিক অবস্থা ও উপসর্গের অবনতি হচ্ছে কিনা খোজ খবর নিবেন।

রোগীদের জন্য নির্দেশনা:

• আপনার উপসর্গগুলো সতর্কতার সাথে খেয়াল করুন-

– জ্বর থাকলে নিয়মিত তাপমাত্রা পরিমাপ করুন।

– যদি নতুন উপসর্গ দেখা দেয় বা আগের উপসর্গের অবনতি হয় (যেমন-শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়), তবে অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

•যদি নতুন উপসর্গ দেখা দেয় বা আগের উপসর্গের অবনতি হয়-

চিকিৎসকের/স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর কাছে যাওয়ার পূর্বে তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করুন এবং আপনি যে CVID-19 এ আক্রান্ত ‘সন্দেহভাজন রোগী’ তা জানান। আপনি পূর্বেই জানালে অন্য সুস্থ ব্যক্তিরা যেন আক্রান্ত না হয়/ সংস্পর্শে না আসে -এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর পক্ষে সাবধানতা অবলম্বন করা সম্ভব হবে।

– ভ্রমণের সময় এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রবেশের পূর্বে মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন।

– গণপরিবহন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন এবং সম্ভব হলে এ্যাম্বুলেন্স / নিজস্ব পরিবহন ব্যবহার করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাবেন এবং, যাত্রাকালীন সময়ে পরিবহনের জানালা বন্ধ রাখুন।

– সর্বদা শ্বাসতন্ত্রের স্বাস্থ্যবিধি (বিশেষ করে- কাশি শিষ্টাচার) মেনে চলুন, হাত উপরের নিয়মে পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং চলাচলের সময় ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অবস্থানকালে অন্যদের থেকে ১ মিটার (৩ ফিট) দূরত্ব বজায় রাখুন।

– শ্বাসতন্ত্র/ অন্য কোন প্রদাহের (সর্দি, থুতু, কাশি, বমি ইত্যাদি) কারণে যদি যানবাহনের কোন অংশ নোংরা হয়, তবে উপরের বর্ণিত নিয়মানুযায়ী জীবাণুমুক্ত করুন।

•চিকিৎসা সেবা নেয়া ব্যতীত নিজ বাড়ীতে থাকুন –

– হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নেয়া ব্যতীত বাড়ীর বাইরে যাবেন না।

– বাড়ীর বাইরে কাজে, স্কুল, কলেজ অথবা জনসমাগমে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন

– গণপরিবহন ব্যবহার, অন্যদের সাথে একই যানবাহন অথবা ট্যাক্সি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

•বাড়ীর অন্যান্য সদস্যদের থেকে আলাদা থাকুন-

আলো বাতাসের সুব্যবস্থা সম্পন্ন আলাদা ঘরে থাকুন এবং অন্যান্য সদস্যদের থেকে আলাদাভাবে থাকুন। তা সম্ভব না হলে, অন্যদের থেকে অন্তত ১ মিটার (৩ ফুট) দুরে থাকুন (ঘুমানোর জন্য পৃথক বিছানা ব্যবহার করুন)।

– যদি সম্ভব হয় তাহলে আলাদা গোসল খানা এবং টয়লেট ব্যবহার করুন। সম্ভব না হলে, অন্যদের সাথে ব্যবহার করতে হয় এমন স্থানের সংখ্যা কমান ও ঐ স্থানগুলােতে জানালা খুলে রেখে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করুন।

– বুকের দুধ খাওয়ান এমন মা, বুকের দুধ খাওয়াবেন। শিশুর কাছে যাওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করুন এবং ভালভাবে হাত ধুয়ে নিন।

•মাস্ক ব্যবহার করুন –

– জনসমাগমে (ঘরে অথবা যানবাহনে) এবং কোন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে প্রবেশ করার পূর্বে মাস্ক ব্যবহার করুন।

– রোগীর মুখে মাস্ক পরা সম্ভব না হলে ( যদি মাস্কের কারণে শ্বাসকষ্ট হয় ), বাড়ীর অন্যান্য সদস্যরা রােগীর সংস্পর্শে এলে বা তার ঘরে ঢুকলে, রােগীর ঘরে প্রবেশের পূর্বে মুখে মাস্ক পরবেন।

– মাস্ক পরে থাকাকালীন এটি হাত দিয়ে ধরা থেকে বিরত থাকুন।

– মাস্ক ব্যবহারের সময় প্রদাহের (সর্দি, থুতু, কাশি, বমি ইত্যাদি) সংস্পর্শে আসলে সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক খুলে ফেলুন এবং নতুন মাস্ক ব্যবহার করুন।

– মাস্ক ব্যবহারের পর ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলুন এবং সাবান পানি দিয়ে ভালভাবে হাত ধুয়ে নিন।

•হাত ধোয়া-

– হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে অথবা সাবান ও পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুবেন (বিশেষ করে যদি হাত দেখতে নােংরা লাগে সাবান-পানি ব্যবহার করুন)।

– অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না।

– সাবান-পানি ব্যবহারের পর টিস্যু দিয়ে হাত শুকনো করে ফেলুন। টিসু না থাকলে শুধু হাত মোছার জন্য নির্দিষ্ট তোয়ারে/গামছা ব্যবহার করুন এবং ভিজে গেলে বদলে ফেলুন।

•মুখ ঢেকে হাঁচি কাশি দিন –

– হাঁচি কাশির সময় টিস্যু পেপার/ মেডিকেল মাস্ক/কাপড়ের মাস্ক/ বাহুর ভাঁজে মুখ ও নাক ঢেকে রাখুন এবং উপরের নিয়মানুযায়ী হাত পরিষ্কার করুন।

– টিস্যু পেপার ও মেডিকেল মাস্ক ব্যবহারের পর, ঢাকনাযুক্ত বিনে ফেলুন।

– কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করলে কাপড় কাচা সাবান/গুড়া সাবান দিয়ে কাপড়টি পরিষ্কার করে ফেলুন।

• ব্যক্তিগত ব্যবহার্য সামগ্রী অন্য কারোর সাথে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করবেন না-

– আপনার খাওয়ার তৈজসপত্র- থালা, গ্লাস, কাপ ইত্যাদি, তোয়ালে, বিছানার চাদর অন্য কারো সাথে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করবেন না ।

– এ সকল জিনিসপত্র ব্যবহারের পর সাবান-পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলুন।

• কখন আপনার আইসোলেশন শেষ হবে?

– COVID-19 এ আক্রান্ত সন্দেহভাজন রোগী/ রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি ততদিন পর্যন্ত বাড়ীতে আইসোলেশনে থাকবেন যতদিন তাদের থেকে অন্যদের সংক্রমণের (secondary transmission) সম্ভাবনা কমে না যায়।

– চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনার আইসোলেশন শেষ হবে। চিকিৎসকের সিদ্ধান্তমতে একজন হতে অন্যজনের আইসোলেশন-এর সময়সীমা আলাদা হতে পারে। তবে, এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ সময়সীমা ১৪ দিন।

• আপনি আইসোলেশন থাকাকালীন যা করতে পারেন-

– COVID-19 সম্পর্কে জানতে পারেন। WHO, CDC, IEDCR এর ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য পেতে পারেন।

– পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে ফোন/মোবাইল/ ইন্টারনেটের সাহায্যে যোগাযোগ রাখুন।

– শিশুকে তার জন্য প্রযোজ্যভাবে বুঝান। তাদেরকে পর্যাপ্ত খেলার সামগ্রী দিন এবং খেলনাগুলো পরে জীবাণুমুক্ত করুন।

– আপনার দৈনন্দিন রুটিন, যেমন- খাওয়া, হালকা ব্যায়াম ইত্যাদি মেনে চলুন।

– সম্ভব হলে বাসা থেকে অফিসের কাজ করতে থাকুন।

– মনকে প্রশান্ত করে এমন কাজ করুন। এই সময়কে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগান, সাধারণত যা করার অবসর হয় না- বই পড়া,গান শোনা, সিনেমা দেখা অথবা উপযুক্ত নিয়মগুলোর সাথে পরিপন্থী নয় এমন যে কোন বিনোদনমূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করুন বা ব্যস্ত রাখুন।

 

পরিচর্যাকারীদের জন্য নির্দেশাবলী:

– বর্তমানে সুস্থ আছেন এবং যার উপরে উল্লিখিত রােগসমূহ নেই, এমন একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে পরিচর্যাকারী হিসেবে নিয়ােজিত হওয়া উচিৎ।

– সন্দেহজনক রোগীর সাথে কোন অতিথিকে দেখা করতে দিবেন না।

– পরিচর্যাকারী নিম্নলিখিত যে কোন কাজ করার পর প্রতিবার উপরের নিয়মে দুই হাত পরিষ্কার করবেন-

-রোগীর সংস্পর্শে এলে বা তার ঘরে ঢুকলে

-খাবার তৈরীর আগে ও পরে

-খাবার আগে।

-টয়লেট ব্যবহারের পরে

-গ্লাভস পরার আগে ও খোলার পরে

-যখনই হাত দেখে নোংরা মনে হয়

– রোগী পরিচর্যার সময় এবং রোগীর মল-মূত্র বা অন্য আবর্জনা পরিষ্কারের সময় একবার ব্যবহারযোগ্য মেডিকেল মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করুন। খালি হাতে রোগী বা ঐ ঘরের কোন কিছু স্পর্শ করবেন না।

– রোগীর ব্যবহৃত বা রোগীর পরিচর্যায় ব্যবহৃত মাস্ক, গ্লাভস, টিস্যু ইত্যাদি অথবা অন্য আবর্জনা রোগীর রুমে রাখা ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে রাখুন। আবর্জনা উন্মুক্ত স্থানে না ফেলে পুড়িয়ে ফেলুন।

– ঘরের মেঝে, আসবাবপত্রের সকল পৃষ্ঠতল, টয়লেট ও বাথরুম প্রতিদিন অন্তত একবার পরিষ্কার করুন।পরিষ্কারের জন্য, ১ লিটার পানির মধ্যে ২০ গ্রাম (২ টেবিল চামচ পরিমাণ) ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে দ্রবণ তৈরী করুন ও ঐ দ্রবণ দিয়ে উক্ত সকল স্থান ভালােভাবে মুছে ফেলুন। তৈরীকৃত দ্রবণ সর্বোচ্চ ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে।

– রোগীর কাপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালে ইত্যাদি ব্যবহৃত কাপড় গুড়া সাবান/ কাপড় কাচা সাবান ও পানি দিয়ে ভালােভাবে পরিষ্কার করে ফেলুন এবং পরে ভালােভাবে শুকিয়ে ফেলুন।

– নােংরা কাপড় একটি লন্ড্রি ব্যাগে আলাদা রাখুন। মল-মূত্র বা নোংরা লাগা কাপড় ঝাঁকাবেন না এবং নিজের শরীর বা কাপড়ে যেন না লাগে তা খেয়াল করুন।

– রােগীর ঘর/টয়লেট/বাথরুম/কাপড় ইত্যাদি পরিষ্কারের পূর্বে একবার ব্যবহারযোগ্য (ডিসপোজেবল) গ্লাভস ও প্লাস্টিক এপ্রোন পরে নিন এবং এ সকল কাজ শেষে উপরের নিয়মে দুই হাত পরিষ্কার করুন।

 

প্রশ্ন১৯:

যদি আমি সম্প্রতি বিদেশ ভ্রমণ করে আসি এবং, আমার সন্দেহ হয় যে, আমি COVID-19 রোগে আক্রান্ত হতে পারি, সে ক্ষেত্রে আমার করনীয় কি?

উত্তর ১৯:

আপনি যদি চীন, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিন কোরিয়া, ইতালি, ইরান এসব দেশে ভ্রমণ করে থাকেন এবং ফিরে আসার ১৪ দিনের মধ্যে যদি, আপনার জ্বর/ কাশি/ গলা ব্যথা / শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় তাহলে অতি দ্রুত IEDCR এর হটলাইন নাম্বারে (01937000011, 01937110011, 01927711784, 019771185) যোগাযোগ করুন এবং কুয়েত-মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

প্রশ্ন২০:

সরকার COVID-19 বিস্তার রোধে, কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে?

উত্তর ২০:

এ ব্যাপারে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ গুলো নিচে উল্লেখ করা হলঃ

ক) সকল স্থল, জল ও বিমান বন্দর সমূহে সন্দেহভাজন রোগীদের আইসোলেশন (বিচ্ছিন্নকরণ)।

খ) করোনা আক্রান্ত রোগীদের ডায়াগনোসিসের জন্য ঢাকার মহাখালীস্থ আইইডিসিআর এ বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ ।

গ) আইইডিসিআর এ একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সন্দেহভাজন রোগীদের বিষয়ে তথ্য প্রদানের জন্য ৪ টি হটলাইন নম্বর খোলা হয়েছে।

নম্বরসমূহঃ ০১৯ ৩৭১১ ০০১১,০১৯ ৩৭০০ ০০১১,০১৯ ২৭৭১ ১৭৮৪,০১৯ ২৭৭১ ১৭৮৫।

ঘ) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অদূরে ২০০ শয্যা বিশিষ্ট সম্পূর্ণ পৃথক বাংলাদেশ কোরিয়া মৈত্রী হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে।

ঙ) রাজধানী ঢাকার সকল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আলাদা করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া সারাদেশের সকল মেডিকেল কলেজ ও জেলা সদর হাসপাতালে পৃথক ওয়ার্ড/ শয্যা প্রস্তুতকরণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

চ) ঢাকা সহ দেশের সকল বেসরকারি হাসপাতালে পৃথক আইসোলেশন কেবিন/ ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হচ্ছে।

ছ) সকল স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তিদের নিরাপত্তার জন্য ডিসপোজেবল পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইক্যুইপমেন্টস আমদানীকরণ এবং করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জ) জনসাধারনের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পোস্টার/ লিফলেট প্রস্তুত করা হয়েছে।

ঝ) সকল প্রিন্ট/ ইলেকট্রনিক/ সোশ্যাল মিডিয়ায় করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত সচেতনতা বার্তা প্রচার।

ঞ) COVID-19 মোকাবেলায় কমিউনিটি সম্পৃক্তকরনের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here