• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

রাসুল (সা.)-এর জীবনী পাঠ করার প্রয়োজনীয়তা 

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

পৃথিবীর ইতিহাস যাকে নিয়ে গর্ব করে। যার আদর্শে মানুষ খুঁজে পায় সঠিক পথের দিশা। হাজার বছর ধরে কোটি কোটি মানুষ যাকে অনুসরণ করে আসছে নির্দ্বিধায়। তিনি আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

ইতিহাসের পাতায় খোঁজ করলে এমন অনেক বিস্ময়কর মনীষার উদাহরণ পাওয়া যায়, যাদের চিন্তা-চেতনা সারা পৃথিবীতে বিস্তার লাভ করেছে। এমনকি যাদেরকে তাদের স্বতন্ত্র আদর্শ ও কৃতিত্বের কারণে মানুষ আজো শ্রদ্ধা ও ভক্তির সঙ্গে স্মরণ করে থাকে। এসব মহামানবদের কারো কারো জ্ঞান ও প্রতিভা সরাসরি ‘ওহিয়ে এলাহী’ থেকে আহরিত ও উৎসারিত আর কারো গ্রহণযোগ্যতা ও প্রতিভা তার নিজস্ব চিন্তা, দর্শন এবং রুচি ও হিকমতের ফসল।

দোজাহানের সর্দার, আমাদের প্রিয় নবীজি হজরত মুহাম্মাদ (সা.) এসব মহান ব্যক্তিদের মধ্যেও পরিপূর্ণ ও সুমহান ব্যক্তিত্ব। যার পূর্ণতা ও বিশ্বজনীনতা অন্যদের চেয়ে ভিন্ন, যা কোনো যুগ, জীবন ও ভৌগলিক সীমানা ছাড়িয়ে জগতের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিস্তৃত হয়ে আছে। জলে-স্থলে, আপন ও পর সকলে তার থেকে উপকৃত হয়েছে এবং হচ্ছে। বরং কেয়ামত পর্যন্ত এই ধারা জারি থাকবে, ইনশাআল্লাহ।

এই মহামানবের শান ও মর্যাদা, জগৎখ্যাতি ও গ্রহণযোগ্যতার স্বাতন্ত্র ও ভিন্নতার এটিও এক বিরাট দলিল যে, আজ পর্যন্ত তার মুবারক ব্যক্তিত্বকে যে পরিমাণ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখা হয়; তার শতভাগের একভাগও অন্য কারো ভাগ্যে জোটেনি!

নবুওতে মুহাম্মাদীর জন্য এগুলো এক মু’জিযাস্বরূপ যে, আজ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতিটি কথা, প্রতিটি কাজ, প্রতিটি নড়াচড়া ও ইশারা, সর্বোপরি জনতায় ও নির্জনতায় তার একেকটি ভাব ও ভাষার নমুনা পৃথিবীতে রয়েছে! তার উঠাবসা, চলাফেরা, জীবনযাপন, পোশাক-পরিচ্ছেদ, খানা-পিনা ও চেহারা-সূরত ইত্যাদি সকল কিছুর পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা সীরাতের পাতায় পাতায় রয়েছে। সীরাত সংকলকগণ অত্যন্ত আমানতদারির সঙ্গে তা সংরক্ষণ করেছেন এবং আজও সীরাতের সংকলন, চর্চা ও অধ্যয়ন অব্যাহত রয়েছে।

সীরাত অধ্যয়নের ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি

সীরাত অধ্যয়নের সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গির সাথে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গির কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। কারণ একজন মুসলমানের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুবারক সীরাত অধ্যয়ন শুধু জ্ঞান বা জ্ঞানবৃদ্ধির বিষয়ই নয়, এটা তার দ্বীনি প্রয়োজন। নিচে বিষয়গুলোর মাধ্যমে তা সহজেই বুঝে আসবে।

এক. সীরাত অনুকরণীয় আদর্শ

মানবজীবনের এমন কোনো দিক নেই, যা প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্পর্শ করেনি। এমন কোনো অনুভূতি নেই, যা তিনি অনুভব করেননি। ব্যবহারিক, আধ্যাত্মিক, ইহলৌকিক, পারলৌকিক- সব কিছুই তার জীবন ও সাধনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। ফলে তার জীবনাদর্শ সর্বকালের সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। জীবন পথের আলোর মশাল ও দিকনির্দেশনা স্বরূপ।

কোরআনের প্রায় চল্লিশের অধিকবার নবীজি অনুকরণীয় হওয়ার ঘোষণা বিবৃত হয়েছে। (মাজমুউল ফাতাওয়া ১/৪)

আল্লাহ তায়ালা বলেন, لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا

অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে অনুপম আদর্শ, তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে। ( সুরা আহযাব-২১)

এ থেকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাণীসমূহ ও কার্যাবলী উভয়ই অনুসরণ অনুকরণের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্যতা জানা যায়। আর রাসূলের পরিপূর্ণ, নিখুঁত অনুসরণের জন্যে গভীরভাবে সীরাত অধ্যয়নের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

দুই. আমল যাচাইয়ের নিক্তি সীরাত

কোন আমল বা কাজ ইসলামি শরীয়তের তুলাদণ্ডে উত্তীর্ণ আর কোন আমলটি ইসলামী আইনে অনুত্তীর্ণ তা যাচাইয়ের নিখুঁত নিক্তি হলো সীরাত। ইসলামের ব্যানারে বর্ণিত, প্রচারিত সকল আমাল-ই রাসূলে আরাবীর সীরাতের নিক্তিতে মেপে দেখতে হয়। যেই আমল রাসূলের এই সীরাত ও সুন্নাতের মানদণ্ডে ঠিকে সেটিই সঠিক আর যেটি ঠিক না সেটি অশুদ্ধ, বর্জনীয় বলে বিবেচিত।

এক্ষেত্রে সুফিয়ান ইবনে উয়াইনার বক্তব্য উল্লেখযোগ্য, যা খতীবে বোগদাদী (রহ.) তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘আল-জামে লি-আখলাকির রাওয়ী ওয়া আদাবিস সামে’ এর মুখবন্ধে উল্লেখ করেছেন, নিঃসন্দেহে এটা সর্বজন স্বীকৃত বিষয় যে, রাসূল (সা.) এর সীরাত হলো ইসলামের সকল বিষয়ের সত্যাসত্যের অন্যতম মানদণ্ড। সুতরাং, সকল আমালকে তার জীবনাচার, স্বভাব-চরিত্রের নিক্তিতে মেপে দেখতে হবে। যা কিছু এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখবে, তাই সত্য। আর যা কিছু সামঞ্জস্য রাখবেনা তা অসত্য।

কাজেই সঠিক ও শুদ্ধ উপায়ে আমল করতে চাইলে সীরাতের পাঠের বিকল্প নেই।

তিন. কোরআন অনুধাবনের সহায়ক সীরাত

জগতের সকল কালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহাপুরুষের উপর অবতীর্ণ হয়েছিল জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ পবিত্র আল-কোরআন। তিনি ছিলেন সেই কোরআনের প্রতিবিম্ব। আর তার জীবন ছিল কোরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ তরজমা ও তাফসির।

এদিকে ইঙ্গিত করেই হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, যখন তার কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল রাসূল (সা.) এর সীরাত ও আখলাক সম্পর্কে, তিনি বলেছিলেন” তার আখলাক (সীরাত) ছিল আল-কোরআন।” অর্থাৎ কোরআন কারীম হলো রাসূল (সা.) এর জীবনচরিতের সংরক্ষিত ও লিখিত নমুনা। আর তার জীবনী হলো কোরআনের আমলী রূপরেখা।

চার. সীরাত অধ্যয়ন রাসূলের প্রতি ভালোবাসার প্রকৃষ্ট প্রমাণ

একজন মুসলমান হিসেবে প্রত্যেক মুসলিমের কাছে-ই প্রাণাধিক প্রিয়পাত্র ও ভালোবাসার পাত্র হওয়া উচিত প্রিয় নবী (সা.)। স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রাসূলের এই ভালোবাসাকে আমাদের উপর আবশ্যক করে দিয়ে বলেন-

قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُم من ذُنُوبَكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ

বল, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমার (রাসূল) অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’। (সূরা আলে-ইমরান-৩১)

রাসূল (সা.) নিজেই ইরশাদ করেন, ‏ فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ

আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সেই আল্লাহর শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষন না আমি তার নিকট তার পিতা ও সন্তানাদির চেয়ে অধিক ভালবাসার পাত্র হই।(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১৪)

আর রাসূলের প্রতি ভালোবাসার চারা হৃদয়পটের রোপণ করতে তার সীরাতের গভীর অধ্যয়ন লাগবে। যে যত বেশি সীরাতের গভীরে অবগাহন করবে, সে তত বড় রাসূল প্রেমিকে রূপ নিবে। তার আচার-আচরণ, চলাফেরা সকল কাজে রাসূলের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠবে। কারণ, সীরাত অধ্যয়নে রাসূলের প্রতি মুহব্বত আর ভালোবাসা প্রগাঢ় হয়

পাঁচ. সীরাত ঈমান মজবুতির সোনালি সোপান

রাসূল (সা.) ঈমান,ইসলাম প্রচারের পথে কত বাধাবিপত্তি আর ঝড়ঝাপটা সয়েছেন তার সবিস্তার আলোচনা সীরাতে সোনার হরফে লিখা রয়েছে। ফলে সীরাত অধ্যয়নে রাসূলের এসব বিপদ-মুসিবত সহ্য করার ঘটনাবলি পড়ার মাধ্যমে ঈমান আরো শক্তিশালী ও দুর্ভেদ্য হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন-

أَمْ لَمْ يَعْرِفُوا رَسُولَهُمْ فَهُمْ لَهُ مُنْكِرُونَ

নাকি তারা তাদের রাসূলকে চিনতে পারেনি, ফলে তারা তাকে অস্বীকার করছে? (সূরা মুমিনুন-৬৯)

বলা চলে, সীরাত অধ্যয়ন অমুসলিমকে ইসলামের প্রতি প্রলুব্ধ করে আর মুসলিমের ঈমানের মাঝে মজবুতি আনে। তাই দেখা যায়, সহস্র অমুসলিম সীরাতে রাসূল অধ্যয়ন করতে, নিজেকে নবীজীর সীরাতের মাঝে সমর্পণ করে দিয়েছেন। এই অর্থে ইমাম মুসলিম রহ. বর্ণনা করেন,

عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَجُلاً، سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم غَنَمًا بَيْنَ جَبَلَيْنِ فَأَعْطَاهُ إِيَّاهُ فَأَتَى قَوْمَهُ فَقَالَ أَىْ قَوْمِ أَسْلِمُوا فَوَاللَّهِ إِنَّ مُحَمَّدًا لَيُعْطِي عَطَاءً مَا يَخَافُ الْفَقْرَ ‏.‏ فَقَالَ أَنَسٌ إِنْ كَانَ الرَّجُلُ لَيُسْلِمُ مَا يُرِيدُ إِلاَّ الدُّنْيَا فَمَا يُسْلِمُ حَتَّى يَكُونَ الإِسْلاَمُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا عَلَيْهَا ‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক লোক রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে দু’ পাহাড়ের মাঝামাঝি ছাগলগুলো চাইলে তিনি তাকে তা দিয়ে দিলেন। অতঃপর সে লোক তার গোত্রের নিকট প্রত্যাবর্তন শেষে বলল, হে আমার জাতি ভাইয়েরা! তোমরা ইসলাম কবূল কর। আল্লাহর শপথ! মুহাম্মাদ (সা.) অভাবের আশঙ্কা না করে দান করেন।

আনাস (রা.) বলেন, যদিও মানুষ শুধু ইহকালের উদ্দেশ্যেই ইসলাম গ্রহণ করে তবুও ইসলাম গ্রহণ করতে না করতেই ইসলাম তার কাছে পৃথিবী এবং পৃথিবীর সকল প্রাচুর্যের চাইতে অধিকতর প্রিয় হয়ে যায়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৫৯১৫)

ছয়. সীরাত সৌভাগ্যের জীবনকাঠি

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাত মানবজীবনের সৌভাগ্যের চাবিকাঠি। সীরাত অনুসরণ- অনুকরণ এবং দৈনন্দিন জীবনে এর বাস্তবায়ন ছাড়া কারো পক্ষেই পার্থিব কিংবা অপার্থিব কোন সফলতার আশা করা বোকামি।

ইমাম ইবনুল কায়্যিম (র.) বলেন, যেহেতু দুনিয়া-আখেরাতের একমাত্র সফলতা আর সকল সৌভাগ্য রাসূলের পদাঙ্ক অনুসরণের মাঝেই নিহিত। কাজেই প্রত্যেক ওই ব্যক্তির উচিত যে নিজের জীবনে কল্যাণ, সফলতা আর সৌভাগ্য কামনা করে, সে যেন নবীজীর সীরাত অধ্যয়ন করে। এতে করে সে রাসূলকে চিনতে পারবে। রাসূলের সত্যিকার অনুসারী হতে পারবে। (যাদুল মা’আদ-১/৩৬)

এভাবে ক্রমান্বয়ে সীরাত পাঠের গুরুত্ব তুলে ধরতে গেলে শত পৃষ্ঠার বৃহদাকার গ্রন্থ রচনা করা সম্ভব। তবে এত দীর্ঘ আলোচনার অবতারণা না এনে পাঠকদের নিকট অধমের কামনা থাকবে, উম্মত হিসেবে ভালোবাসার দাবি থেকে হলেও প্রত্যেকের ঘরে দয়ার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন চরিতের একটি করে কপি যেন স্থান পায়। এবং তা পঠিতও হয়। আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের রাসূলের সাচ্চা আশেক হিসেবে কবুল করুন। আমিন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here