• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

স্বামীকে নাম ধরে ডাকা কি জায়েজ? 

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে নাম ধরে ডাকা, সম্মোধন করা- বিষয়টি সামাজিক রীতিনীতি, ভদ্রতা, প্রচলন ও  পরিবেশ-পরিস্থিতির ওপর নির্ভরশীল। যেখানে নাম ধরে ডাকাকে অসম্মানজনক ও অসুন্দর মনে করা হয় না, সেখানে নাম ধরে ডাকলে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু যেখানে এটিকে সম্মানহানি ও বেয়াদবি মনে করা হয়, সেখানে নাম ধরে না ডাকা উচিত।

সাধারণত স্বামীর নাম ধরে ডাকাকে অসম্মানজনক ও বেয়াদবি মনে করা হয়। এছাড়া স্বামীর সম্মান, অধিকার ও সম্মান একটু বেশি-ই, এই কারণে ফুকাহায়ে কেরাম এটাকে মাকরুহে তানজিহি বা শরিয়তে অপছন্দ মনে করেন। সুতরাং এতদাঞ্চলে স্বামীকে নাম ধরে না ডাকা উচিত। কেননা স্ত্রীর কর্তব্য, স্বামীর প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখা জরুরি। পাশাপাশি এমন আচরণ না করা চাই- যাতে স্বামীর সম্মানহানী হয়। অন্যথায় তাদের মাঝে মনোমালিন্য এবং দাম্পত্য জীবনে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। তাছাড়া সাধারণ ভদ্রতা হলো- মানুষকে এমন শব্দ প্রয়োগে সম্বোধন করা- যাতে সে খুশি হয়। বিশেষ করে দাম্পত্য জীবনে এটাই ভালোবাসার দাবি এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আরব দেশে নাম ধরে ডাকার প্রচলন ছিল, এতে তারা মনঃক্ষুণ্ণ হতো না। সেজন্যই তাদের কেউ কেউ ডাকতেন। কিন্তু আমাদের অবশ্যই বিষয় স্বীকার করতে হবে যে, স্বামীর খেদমত করা প্রত্যেক নারীর দায়িত্ব ও কর্তব্য। অন্যদিকে স্ত্রীর ভরণ-পোষণ ও সুযোগ-সুবিধা প্রদান স্বামীর কর্তব্য ও দায়িত্ব।

সুতরাং সম্মান প্রদর্শনার্থে অবশ্যই স্বামী, পিতা, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণীর সম্মানিত ব্যক্তিদের নাম ধরে ডাকা নিষেধ। তবে কোনো প্রয়োজনে স্বামীর নাম মুখ দিয়ে উচ্চারণ করা যাবে না- ব্যাপারটা এমন নয়। বরং প্রয়োজনে যেকোনো সময় স্বামীর নাম উচ্চারণ করা যাবে।

স্ত্রী স্বামীকে যেভাবে ডাকবে
স্বামী-স্ত্রী এক অপরকে সম্মান সূচক নাম ব্যবহার করে ডাকবে। বিশেষ করে স্ত্রী তার স্বামীকে সর্বক্ষেত্রে সম্মান প্রদর্শন করবে। পরিবারের মধ্যে যেহেতু স্বামীর মর্যাদা স্ত্রীর চেয়ে একটু উপরে তাই স্ত্রী কখনো তার স্বামীর নাম ধরে ডাকবে না। কেননা এতে অসৌজন্যতা ও কিছুটা অসম্মানমূলক আচরণের বহিপ্রকাশ ঘটে। এ সম্পর্কে ফাতাওয়া শামিতে বর্ণিত আছে, ছেলে কর্তৃক তার পিতাকে এবং স্ত্রী কর্তৃক তার স্বামীকে নাম ধরে ডাকা মাকরুহ।

ইবনে আবেদিন শামি (রহ.) উক্ত বক্তব্যের সুস্পষ্ট ব্যখ্যা দিয়ে বলেন, বরং এমন শব্দের মাধ্যমে ডাকা উচিত- যেটা সম্মান বোঝাবে। যেমন- হে আমার সর্দার, অমুকের পিতা ইত্যাদি, অথবা সম্মানসূচক পেশার সঙ্গে সংযুক্ত করে ডাকবে। যেমন- ইমাম সাহেব, ডাক্তার সাহেব ইত্যাদি)। কেননা পিতা ও স্বামী- তাদের উভয়ের হক একটু বেশিই। (রাদ্দুল মুহতার আলাদ-দুররিল মুখতার : ০৬/৪১৮)

স্বামীর নাম ধরে ডাকা কি জায়েজ?
অবশ্য স্বামী যদি এতে মনে কষ্ট না পায় বা নিজের সম্মানহানী মনে না করে- তাহলে নাম ধরে ডাকলে কোনো সমস্যা নেই। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, যখন আল্লাহর রাসূল ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম তার স্ত্রী হাজের এবং শিশু পুত্র ইসমাইলকে মক্কার জনমানবহীন প্রান্তরে রেখে চলে যাচ্ছিলেন- তখন পেছন থেকে তার স্ত্রী তাকে ডাকলেন এভাবে, ‘হে ইবরাহিম, তুমি আমাদের এমন জনমানবহীন উপত্যকায় রেখে কোথায় যাচ্ছ?’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৩৬৫)

এছাড়া বিভিন্ন দেশে স্বামীর নাম ধরে ডাকার প্রচলন রয়েছে। সুতরাং এ বিষয়ে সামাজিক নিয়ম-নীতি, সম্মান ও ভদ্রতার প্রতি লক্ষ্য রাখা জরুরি।

স্বামীর নাম মুখে নিয়ে গল্প করলে কি গুনাহ হবে?
যদি কোথাও স্বামীর নাম উল্লেখ করার প্রয়োজন দেখা দেয়, তাহলে উচ্চারণ করতে কোনো সমস্যা নেই। কথা প্রসঙ্গে বিনা প্রয়োজনে স্বামীর নাম নিলেও অসুবিধা নেই। তবে বিনা প্রয়োজনে কারও সঙ্গে গল্প করার সময় তার নাম নিলে সম্মানের সঙ্গে নেয়া জরুরি। বার বার নাম উচ্চারণের ফলে মানুষের নিকট যেন- তার প্রতি আপনার শ্রদ্ধাহীনতা প্রকাশ না পায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here