• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

সভা ও বৈঠকের ইসলামী শিষ্টাচার সভা ও বৈঠকের ইসলামী শিষ্টাচার সাম

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৭ জুলাই ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

সামাজিক সমস্যা সমাধান করার জন্য সভায় বা বৈঠকে বসতে হয়। আবার বিভিন্ন সময়ে দ্বিনি আলোচনা শ্রবণ করা বা পার্থিব বিষয়ে কারো বক্তব্য শুনতে সভা-সেমিনারে উপস্থিত থাকতে হয়। সেখানে কিছু আদব-কায়দা ও শিষ্টাচার মেনে চলতে হয়। নিম্নে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো—

বৈঠকে কথা বলার ক্ষেত্রে শালীনতা বজায় রাখা : বৈঠকে কথাবার্তা বলার ক্ষেত্রে কথা বলার আদব বা শিষ্টাচার বজায় রাখা জরুরি। যেমন—নিন্দনীয় ও অশ্লীল কথা না বলা; বরং উত্তম কথা বলা। আল্লাহ বলেন, ‘(হে নবী!) তুমি আমার বান্দাদের বলো, তারা যেন (পরস্পরে) উত্তম কথা বলে। কেননা শয়তান সর্বদা তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উসকানি দেয়। নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১৫৩)

আর উত্তম কথা বলায় সওয়াব আছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘ভালো কথাও সদকাস্বরূপ।’ (বুখারি, হাদিস : ২৯৮৯)

বৈঠকের শেষপ্রান্তে যেখানে জায়গা পাবে সেখানে বসবে : মজলিসে উপস্থিত হয়ে যেখানে জায়গা পাবে সেখানে বসাই আদব। কারো ঘাড় ডিঙিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া শিষ্টাচারবহির্ভূত কাজ। এতে একদিকে যেমন উপবিষ্ট লোকদের বিরক্ত করা হয়, তেমনি সভার শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়। এ জন্য রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন কোনো সভার কাছে পৌঁছবে, তখন সে বসার মতো জায়গা পেলে বসবে। অন্যথায় জায়গা প্রশস্ত হওয়ার অপেক্ষা করবে। অতঃপর জায়গা পেলে সেখানে বসবে।’ (সহিহুল জামে, হাদিস : ৩৯৯)

সভাস্থল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও দুর্গন্ধমুক্ত রাখা : সভা বা বৈঠকে বহু লোকজনের সমাগম হয়। সেখানে একেকজন কিছু ফেললে সভাস্থল আবর্জনায় পূর্ণ হয়ে যাবে। তাই সেখানে কিছু না ফেলে সে স্থান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। তেমনি দুর্গন্ধ ছড়ায় এমন কিছু নিয়ে সেখানে প্রবেশ করা বা দুর্গন্ধযুক্ত কিছু খেয়ে সেখানে প্রবেশ করাও ঠিক নয়। আল্লাহ বলেন, ‘অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকো।’ (সুরা মুদ্দাসসির, আয়াত : ৭৫)

চোখ-কান-জিহ্বা হেফাজত করা : মজলিসে বসে নিষিদ্ধ জিনিস দেখা থেকে চোখকে, হারাম জিনিস শোনা থেকে কানকে এবং অন্যায়-অশ্লীল কথা বলা থেকে জিহ্বাকে হেফাজত করা আবশ্যক। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো এক দলের কথার দিকে কান লাগাল; অথচ তারা এটা পছন্দ করে না, কিয়ামতের দিন তার উভয় কানে সিসা ঢেলে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৭০৪২)

বৈঠকে আলোচিত কথাবার্তার গোপনীয়তা রক্ষা করা : অনেক সময় বৈঠকে গোপনীয় বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হয়ে থাকে। যেগুলো বাইরে প্রকাশ করা সমীচীন নয়। এই গোপনীয়তা রক্ষা করা সদস্যদের জন্য জরুরি। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন কেউ কোনো কথা বলে এদিক-ওদিক তাকায়, তবে তা আমানত।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৬৮)

মুমিন এ আমানত রক্ষা করবে। (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ১২৫৮৯)

মজলিস প্রশস্ত করা এবং অন্যকে বসার সুযোগ দেওয়া : সভা বা বৈঠকে অন্যের জন্য জায়গা করে দেওয়া বা মজলিস প্রশস্ত করা অশেষ সওয়াব লাভের একটা উপায়। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা, যখন তোমাদের বলা হয় মজলিস প্রশস্ত করে দাও, তখন তোমরা সেটি করে দাও। আল্লাহ তোমাদের জন্য প্রশস্ত করে দেবেন। আর যখন বলা হয়, উঠে যাও, তখন উঠে যাও।’ (সুরা মুজাদালা, আয়াত : ১১)

মুসলমানদের সম্মান রক্ষা করা : সভা-সমাবেশে যাতে মুসলমানদের সম্মান রক্ষা করা হয় এবং তাদের অপমান-অপদস্ত না করা হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা। কোনো মজলিসে এরূপ কাজ দেখলে সে সভা ত্যাগ করা জরুরি। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘যার কাছে কোনো মুমিনের গিবত করা হয়, আর সে তার (অনুপস্থিত মুমিনের) সাহায্য করে, আল্লাহ এ জন্য তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে পুরস্কৃত করবেন। আর যার কাছে কোনো মুমিনের গিবত করা হয় সে তার সাহায্য করল না (তার পক্ষ সমর্থন করে গিবতকারীকে মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করল না) আল্লাহ তাকে এ জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে এর মন্দ ফল (শাস্তি) ভোগ করাবেন।’ (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৭৩৪)

বৈঠক ভঙ্গের দোয়া পাঠের মাধ্যমে মজলিস শেষ করা : মজলিস ভঙ্গের দোয়া পাঠের মাধ্যমে তা শেষ করা। এতে তা ওই মজলিসে সংঘটিত কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি বা গুনাহের জন্য কাফফারাস্বরূপ হবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি এমন সভায় বসে, যাতে খুব বেশি ভুল হয়, অতঃপর যদি ওই সভা ত্যাগ করে চলে যাওয়ার আগে এই দোয়া পড়ে—সুবহা-নাকাল্লা-হুম্মা ওয়া বিহামদিকা আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লা আন্তা আস্তাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইক (অর্থাৎ তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করি হে আল্লাহ, তোমার প্রশংসার সঙ্গে। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে তুমি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই। আমি তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তোমার দিকে তাওবা (প্রত্যাবর্তন) করছি। তাহলে ওই মজলিসে কৃত অপরাধ তার জন্য ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৩৩)

Place your advertisement here
Place your advertisement here