ড. ওয়াজেদ মিয়া- একজন রাজনীতিমনস্ক বিজ্ঞানীর গল্প
– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২
Find us in facebook
গতকাল ১৬ ফেব্রুয়ারি ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার জন্মদিন। ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহ্পুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৯ সালের ৯ মে তিনি চলে যান অনন্তলোকে, যেখান থেকে আর ফিরে আসার সুযোগ নেই। ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়াকে দুবার কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়; দুবারই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। একই বছরে, ১৯৯৭ সালে।
প্রথমবারে রাজশাহী কলেজের কোনো একটা অনুষ্ঠান উপলক্ষে তিনি রাজশাহী যান এবং এরই ফাঁকে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ জন্য জুবেরী ভবনে আমরা যখন তাঁকে অভ্যর্থনা জানাই তখন অর্থনীতির অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুসকে দেখে জড়িয়ে ধরেন এবং বলেন যে তিনি (মোহাম্মদ ইউনুস) ইন্টারমিডিয়েটে ফার্স্ট হয়েছিলেন (পাঠকদের মনে থাকার কথা, জোট সরকারের আমলে ২৪ ডিসেম্বর, ২০০৪ সালে প্রাতর্ভ্রমণকালে প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুসকে হত্যা করে রাস্তার পাশে খালে ফেলে রাখা হয়। এর কাছাকাছি সময়ে প্রফেসর ড. এস তাহের আহমদকে হত্যা করে সেফটিক ট্যাংকে রেখে দেওয়া হয়)। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ওই দিন প্রায় দুই ঘণ্টা তিনি কথা বলেন।
এই দুই ঘণ্টার বক্তৃতায় বিজ্ঞান, রাজনীতি, সমাজ, অর্থনীতিসহ যেসব বিষয়ে তিনি অবতারণা করেন তাতে তাঁর অগাধ জ্ঞানের বিষয়টি স্পষ্ট হয়। তাঁর কথার ফাঁকে দুপুর গড়িয়ে যায়। তখন প্রফেসর সাইদুর রহমান খানের বাসায় (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, উপাচার্য ও পরবর্তী সময়ে ব্রিটেনে বাংলাদেশের হাইকমিশনার) মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রিত হন। সাইদুর রহমান খানের সঙ্গে দুজন শিক্ষককেও আমন্ত্রণ জানান—একজন বর্তমান প্রবন্ধকার ও অন্যজন অধ্যাপক শামসুদ্দীন ইলিয়াস, যিনি এখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। খাবার টেবিলে বসে লক্ষ করি তিনি শুধু একজন একাডেমিশিয়ান নন, একজন অত্যন্ত রসিক মানুষও বটে। শামসুদ্দীন ইলিয়াস ও প্রবন্ধকার একই অঞ্চলের মানুষ এটি জানার পর তিনি বলে ফেলেন, ‘তাহলে তোমরা তো আমার শ্যালক।’ তখন অনেক বিষয় নিয়েই তিনি রসিকতা করেন। জুবেরী ভবনের আলোচনায় ঘুরেফিরে একটা প্রসঙ্গ বারবার আসে, তা হলো বাংলাদেশের বিজ্ঞান গবেষণার ক্ষেত্র বা সুবিধা বিস্তৃত হওয়া প্রয়োজন। এর মধ্যে অনেকবার তিনি ঈশ্বরদীতে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষার কথা বলেন এবং এ ক্ষেত্রে রাশিয়া যে সহায়তা করতে প্রস্তুত তা-ও তিনি উল্লেখ করেন। ১৯৯৭ সালে দ্বিতীয়বার তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যান পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় উত্তরবঙ্গের প্রয়োজনীয় বিষয়াবলিকে অন্তর্ভুক্তকরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য। এবার নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর। ওই দিনও বাংলাদেশ তথা উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন বিষয়ে তিনি তাঁর চিন্তাভাবনার কথা উল্লেখ করেন এবং অবধারিতভাবে বিজ্ঞান গবেষণা ও পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গ উঠে আসে।
বিজ্ঞান চিন্তার বাইরে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার অন্য একটি বিষয় ছিল, যা সর্বদাই নেপথ্যের—খুব বেশি সামনে আসেনি। এরশাদের বিরুদ্ধে যখন ১৫ দল ও সাতদল যুগপৎ আন্দোলন করছিল, তখন দুই নেত্রীর সরাসরি আলোচনার প্রয়োজন ছিল। কে উদ্যোগ নেবে, কোথায় বসা হবে—এ নিয়ে খবরের কাগজে বিভিন্ন রকম সংবাদ পরিবেশিত হয়। দেশের কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, যাঁর মধ্যে এম এ ওয়াজেদ মিয়া অন্যতম। তখন বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ ড. ওয়াজেদ মিয়া আণবিক শক্তি কমিশনের কোয়ার্টারে (সম্ভবত মহাখালী) থাকতেন। সেখানেই দুই নেত্রীর সাক্ষাৎ হয় এবং যত দূর মনে পড়ে ড. ওয়াজেদই খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানান। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত হয়েছিল যে মাত্র দুই রুমের একটা বাসা, সেখানে অনেক মানুষের বসার ব্যবস্থা করাও ছিল কষ্টকর। এর মাধ্যমে শেখ হাসিনা ও ড. ওয়াজেদ মিয়ার জীবনযাপন ও পথচলাকে অনুধাবন করা যায়। তৎকালীন, বিশেষ করে এরশাদের আমলে সরকারি চাকরিতে থেকে এ ধরনের একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করায় তাঁর সততা ও সাহসের বিষয়টি অবশ্যই স্বীকৃতির দাবি রাখে।
অন্য একটি ঘটনার কথা মনে পড়ে, কোনো একটি পত্রিকার পক্ষ থেকে ড. ওয়াজেদ মিয়াকে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনি একজন সরকারি চাকরিজীবী, আপনার স্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনীতিতে নেমেছেন, আপনি বিষয়টিকে কিভাবে নিচ্ছেন? তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে ‘এটি তাঁর দায়িত্ব। সময় ও দেশের জনগণ তাঁর ওপর এই দায়িত্ব অর্পণ করেছে এবং তিনি এমন একটি পরিবারের সন্তান, যে পরিবারের রক্তে রাজনীতি মিশে আছে। তাই আমাকে (তাঁকে) এটা মেনে নিতে হবে।’ আমরা দেখি তিনি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর স্বামী, জাতির জনকের জামাতা; কিন্তু ক্ষমতা তাঁকে স্পর্শ করেনি। তিনি অবসরে যাওয়ার পর কখনো সরকারি গাড়িতে উঠেননি; তিনি চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেননি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের ভিপি ছিলেন। অনুকূল সময়ে চাকরি ছেড়ে রাজনীতি করতে পারতেন। কিন্তু সে পথে হাঁটেননি। ক্ষমতার বলয় থেকে দূরে থেকেছেন। তবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন দুঃসময়ে তিনি শুধু স্বামী হিসেবে নন; অভিভাবক হিসেবে সর্বদা ছায়া দিয়েছেন। এখানে একটা প্রসঙ্গ উল্লেখ করা প্রয়োজন যে বঙ্গবন্ধু যখন আগরতলা মামলায় জেলখানায়, তখন শেখ হাসিনা-ওয়াজেদ মিয়ার বিয়ে হয়। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ দেখতে পেয়েও তিনি এই পরিবারের সঙ্গে আত্মীয়তায় আগ্রহী হন। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ধীশক্তি ও বিবেচনাবোধের পরিচয় পাওয়া যায় তাঁদের আত্মীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে। দুই মেয়ের বিয়ের ক্ষেত্রে এই পরিবার অর্থবিত্তের দিকে না তাকিয়ে দুজন একাডেমিশিয়ানকে জামাতা হিসেবে নির্বাচন করেছে। বর্তমান সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে এটি অনন্যসাধারণ ঘটনা। ড. ওয়াজেদ মিয়ার মতো এমন নির্লোভ, নিরহংকার ও ক্ষমতাকেন্দ্রের কাছাকাছি থেকেও তাঁর মধ্যে নিজেকে যুক্ত না করার মানুষ ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। ড. ওয়াজেদ মিয়ার জন্মদিনে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
লেখক: মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান
উপাচার্য, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
- শরীরে মেদ জমেছে নাকি পানি, বুঝবেন যেসব লক্ষণে
- বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের
- সঙ্গীকে ভালো লাগছে না, তবুও কেন একসঙ্গে থাকা?
- দেশে ফিরেছেন স্পিকার
- নারী ফুটবলারকে চুমুকাণ্ডে বড় শাস্তি পাচ্ছেন রুবিয়ালেস
- জায়েদ খানের নায়িকা হচ্ছেন ভারতের পূজা ব্যানার্জি, যা বললেন নায়ক
- জুমার দিন দরুদ পাঠের বিশেষ ফজিলত
- বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী
- ফিলিস্তিনিদের হত্যার পর বুলডোজার দিয়ে বালুচাপা দিলো ইসরায়েলি সেনা
- সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী
- শরীয়তপুরের সেই চিকিৎসককে চান না রৌমারীবাসী
- আইএমইআই পরিবর্তন করে মোবাইল বিক্রি, মূলহোতাসহ গ্রেফতার ২
- উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির
- প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: লড়বেন সাড়ে ৩ লাখ চাকরি প্রত্যাশী
- বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক: আগ্রহ ব্যবসাবাণিজ্যে
- ৭ বছর ধরে নিজ বাড়িতে শিকলে বন্দী নুর
- রাণীশংকৈলে কৃষকের মাঝে বিনামূল্য পাটবীজ ও সার বিতরণ
- সৈয়দপুরে ফেসবুক লাইভে থেকে যুবকের আত্মহত্যা
- কুড়িগ্রামে ভুটানের রাজার মধ্যাহ্নভোজের মেন্যুতে যা যা ছিল
- সুন্দরগঞ্জ হৃদরোগে আক্রান্ত রুসদাকে বাঁচাতে মায়ের আকুতি
- বালিয়াডাঙ্গীতে বাড়ির আঙিনায় গাঁজা চাষ, গ্রেপ্তার ১
- ভেজাল খাদ্যপণ্য সরবরাহ, বিরামপুরে ২ জনের কারাদণ্ড
- রংপুরে আলু পরিবহনে ফিরেছে ঘোড়ার গাড়ি
- বিরামপুরে এক পা বিশিষ্ট্য সন্তানের জন্ম
- রংপুরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় আগেই
- ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
- হাতীবান্ধায় জেলের জালে উঠে এল প্রতিবন্ধী যুবকের মরদেহ
- শখের ড্রাগন বাগানে স্বাবলম্বী জহুরুল ইসলাম
- চিরিরবন্দরে সেচের কাজে এখনও ব্যবহৃত হচ্ছে সেঁউতি-দোন
- পার্বতীপুরে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে বাই-সাইকেল বিতরণ
- ‘সংস্কারের পাশাপাশি আগামী বাজেটে কর্মসংস্থানে নজর দেওয়া হবে’
- ফজর সালাতের প্রতি আর গাফেলতি-অলসতা আসবে না, যদি...
- ঢাকায় ৬০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করবে সরকার: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
- ঠাকুরগাঁওয়ে অ্যাম্বুলেন্স-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, নিহত ১
- রংপুর বিভাগে মাদক বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না
- বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন
- গাজায় শিশুহত্যা চলছে, কোথায় বিশ্বমানবতা- প্রধানমন্ত্রী
- ১২ বছরে প্রাথমিকে ২ লাখ ৩৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগ
- রমজানে মুমিন মুসলমানের প্রতিদিনের আমল
- রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে যা করবেন
- সেবক হয়ে জেলা প্রশাসকদের কাজ করে যেতে হবে : স্পিকার
- জলবিদ্যুৎ আমদানির আলোচনা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- চলছে কর্মযজ্ঞ, অক্টোবরে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল চালু
- সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যদের শপথ আজ
- শ্রীলংকার বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ শুরু হবে যখন
- রোজা রাখার ৫টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
- নীলফামারীতে বিটরুট চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার
- মধ্যপন্থা: মুমিনের বৈশিষ্ট্য
- ভারতবিরোধী স্লোগানের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা লুকিয়ে আছে
- দেশের ৮ জেলায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস