বঙ্গবন্ধুর কথায় বঙ্গবন্ধু
– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২১
Find us in facebook
রাতের বেলায় নৌকা যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু নৌকার ভেতর ঘুমিয়ে আছেন। তখন ডাকাত পড়েছে। এলাকার সবাই বঙ্গবন্ধুকে চেনে, তাকে ভালোবাসে। ডাকাতরা যখন জানতে পারল নৌকায় বঙ্গবন্ধু শুয়ে আছেন তারা ডাকাতি না করেই চলে যায়। যাওয়ার সময় মাঝিকে এক ঘা দিয়ে বলল, ‘শালা, আগে বলতে পার নাই শেখ সাহেব নৌকায়।’ ঘুম থেকে উঠে ঘটনাটি শুনলেন বঙ্গবন্ধু। এর পর মজা করে বললেন ‘বোধহয় ডাকাতরা আমাকে ওদের দলের একজন বলে ধরে নিয়েছে।’
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের মনে কতটা জায়গা করে নিয়েছিলেন সেটি বোঝা যায় তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে উল্লিখিত এই ঘটনাটিতে। যেখানে তার রসবোধ পূর্ণ হৃদয়েরও পরিচয় মিলে।
বঙ্গবন্ধু আপাদমস্তক ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ। কিন্তু রাজানীতিটাকে তিনি কখনো দলবাজি হিসেবে দেখেননি। বলেছেন ‘মেনিফোস্টো বা ঘোষণাপত্র না থাকলে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। অযোগ্য নেতৃত্ব, নীতিহীন নেতা ও কাপুরুষ রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কোনোদিন একসঙ্গে হয়ে দেশের কোনো কাজে নামতে নেই।’ তার কাছে রাজনীতির বিষয়টি ছিল খুবই স্পষ্ট, সেটি ছিল একটা মহৎ কাজ। তার ভাষায় ‘যে কোনো মহৎ কাজ করতে ত্যাগ ও সাধনার প্রয়োজন। যারা ত্যাগ করতে প্রস্তুত নয় তারা জীবনে কোনো ভালো কাজ করতে পারে নাই। মানুষকে ভালোবাসলে মানুষও ভালোবাসে। যদি সামান্য ত্যাগ স্বীকার করেন, তবে জনসাধারণ আপনার জন্য জীবনও দিতে পারে।’
বঙ্গবন্ধু সত্যিকার অর্থে মানুষের ভালোবাসা পেয়েছিলেন। জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গিয়ে তার জীবনের অনেকটা সময়ই জেলে কাটাতে হয়েছে। ফলে বঞ্চিত হয় তার পরিবার। পরিবারের প্রতি তার প্রবল টানও ছিল। কিন্তু সেটি ম্রিয়মাণ হয়ে উঠেছিল দেশ ও মানুষের সেবার কাছে।
একবার জেলে যাওয়ার আগের অনুভূতি তিনি প্রকাশ করেছেন ঠিক এভাবে ‘ছেলেমেয়ের জন্য যেন একটু বেশি মায়া হয়ে উঠেছিল। ওদের ছেড়ে যেতে মন চায় না, তবুও তো যেতে হবে। দেশসেবায় নেমেছি, দয়া-মায়া করে লাভ কী? দেশকে ও দেশের মানুষকে ভালোবাসলে ত্যাগ তো করতেই হবে এবং সে ত্যাগ চরম ত্যাগই হতে পারে।’
কিশোর বয়স থেকেই বঙ্গবন্ধুর কষ্টসহিষ্ণুতার গুণ, দৃঢ়সংকল্প চরিত্র, লক্ষ্যে পৌঁছাবার পণ এবং একই সঙ্গে মানবিক চিন্তাসমৃদ্ধ সুদূরপ্রসারী দৃষ্টির পরিচয় মেলে। কোনো কাজেই তিনি না বলতেন না। বলতেন ‘কোনো কাজে সফল হতে হলে থাকতে হবে ‘ংরহপবৎরঃু ড়ভ ঢ়ঁৎঢ়ড়ংব’ এবং ‘যড়হবংঃু ড়ভ ঢ়ঁৎঢ়ড়ংব’। আর এই দর্শনটা তার ভেতর গ্রোথিত ছিল বলেই এক পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সততার অভাব দেখে তিনি খেদোক্তিও করেছিলেন। বলেছিলেন ‘...আমার ধারণা ছিল না যে এমএলএ’রা টাকা নিতে পারে। এরাই দেশের ও জনগণের প্রতিনিধি!... টাকা নেবেন একদল থেকে অন্য দলের সভ্য হয়ে, আবার টাকা এনে ভোটও দেবেন না। কতটা অধঃপতন হতে পারে আমাদের সমাজের।’
শোষকের হাতে শোষিতের নিপীড়ন ওই বয়সেও চোখ এড়ায়নি বঙ্গবন্ধুর। তার ভাষায়, ‘শোষিত যারা তাদের বড় আত্মপরিচয়ের অভাব, আত্মসচেতনতার অভাব। নিজেকে তারা চেনে না, আর যতদিন চিনবে না, বুঝবে না, ততদিন এদের মুক্তি আসবে না।’ তার বিশ্বাস ছিল ‘মানুষকে ব্যবহার, ভালোবাসা ও প্রীতি দিয়েই জয় করা যায়, অত্যাচার, জুলুম ও ঘৃণা দিয়ে জয় করা যায় না।’ বলেছিলেন ‘একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়, এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।’
অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদে সবসময় তার বিশ্বাস ছিল পোক্ত ও অটুট। জেলে এক আদর্শবান হিন্দু সমাজসেবককে তিনি বলেছিলেন ‘চিন্তা করবেন না, আমি মানুষকে মানুষ হিসেবেই দেখি। রাজনীতিতে আমার কাছে মুসলমান, হিন্দু ও খ্রিস্টান বলে কিছু নাই। সকলেই মানুষ।’ এই বিশ্বাস থেকে তিনি সরে আসেননি কখনো।
রাজনীতিবিদদের সঠিক সময়ে সঠিক কথাটি বলার জন্য বিপুল তাত্ত্বিক বুদ্ধির চেয়ে বেশি প্রয়োজন প্রায়োগিক চিন্তার দক্ষতা। আর সেটি পরিপূর্ণভাবে ছিল বঙ্গবন্ধুর। নিজের কথাই তিনি তুলে ধরেছেন এভাবে ‘আমি অনেকের মধ্যে একটা জিনিস দেখেছি, কোনো কাজ করতে গেলে শুধু চিন্তাই করে। চিন্তা করতে করতে সময় পার হয়ে যায়, কাজ আর হয়ে ওঠে না। অনেক সময় করব কি করব না, এইভাবে সময় নষ্ট করে এবং জীবনে কোনো কাজই করতে পারে না। আমি চিন্তাভাবনা করে যে কাজটা করব ঠিক করি, তা করেই ফেলি। যদি ভুল হয়, সংশোধন করে নিই।’
ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু তরুণ বয়স থেকে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সোচ্চার ছিলেন। দুর্নীতিকে দেশের এক নম্বর সমস্যা এবং দুর্নীতি নির্মূল ও দুর্নীতিবাজাদের বিরুদ্ধে তিনি জিহাদ ঘোষণা করে বলেছিলেন ‘...এই বাংলার মাটি থেকে এই দুর্নীতিবাজ, এই ঘুষখোর, এই মুনাফাখোর, এই চোরাচালানকারীদের নির্মূল করতে হবে। আমিও প্রতিজ্ঞা নিয়েছি, তোমরাও প্রতিজ্ঞা নাও, বাংলার জনগণও প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করো। আর না, অধৈর্য, সীমা হারিয়ে ফেলেছি। এই জন্য জীবনের যৌবন নষ্ট করি নাই। এই জন্য শহীদরা রক্ত দিয়ে যায় নাই।... উৎখাত করতে হবে বাংলার বুকের থেকে এদের। দেখি কত দূর তারা টিকতে পারে। চোরের শক্তি বেশি না ইমানদারের শক্তি বেশি, সেটাই আজ প্রমাণ হয়ে যাবে।’
কেমন দেশ চেয়েছিলেন জাতির পিতা? স্বাধীনতার প্রথম বর্ষপূর্তিতে তিনি বলেছিলেন ‘শ্মশান বাংলাকে আমরা সোনার বাংলা করে গড়ে তুলতে চাই। যে বাংলায় আগামী দিনের মায়েরা হাসবে, শিশুরা খেলবে। আমরা শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে তুলব। ক্ষেত-খামার, কলকারখানায় দেশ গড়ার আন্দোলন গড়ে তুলুন। কাজের মাধ্যমে দেশকে নতুন করে গড়া যায়। আসুন সকলে মিলে সমবেতভাবে আমরা চেষ্টা করি, যাতে সোনার বাংলা আবার হাসে, সোনার বাংলাকে আমরা নতুন করে গড়ে তুলতে পারি।’
বঙ্গবন্ধুর সমগ্র জীবনের স্বপ্ন ছিল দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার জন্য জীবনকে বিলিয়ে দিয়েছেন তিনি। ব্যক্তি মুজিবের মৃত্যু হতে পারে, কিন্তু তার আদর্শের মৃত্যু নেই। বঙ্গবন্ধুকে জানা জরুরি। শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, এই মহান নেতাকে তুলে ধরতে হবে সর্বজনীনভাবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষের এই ক্ষণে তার জীবনইতিহাস, শাসনামল, দর্শন ও রাজনীতি নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগই হতে পারে সবচেয়ে বড় কাজ। শুধু উৎসবে সীমাবদ্ধ না থেকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব, উদ্যোগ ও স্বপ্নের কথাগুলো ছড়িয়ে দেওয়া হোক শিশু-কিশোর ও প্রজন্মের মাঝে।
লেখক :সালেক খোকন
মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও লেখক
- দ্বিতীয় সাক্ষাতেও গুজরাটকে হারাল দিল্লি
- খুন হওয়ার ভয়ে বাড়ি ছাড়লেন সালমান খান
- সব রোগ-ব্যাধি থেকে শেফা লাভের সূরা
- জিম্মি এক ইসরায়েলি-আমেরিকানের ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস
- কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ
- বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
- র্যাবের নতুন মুখপাত্র আরাফাত ইসলাম
- গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন
- গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ
- মরিশাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক
- এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য
- সব ডিসি-এসপির সঙ্গে ইসির বৈঠক আজ
- হিট অ্যালার্ট আরো তিনদিন বাড়লো
- বিআরটিএর অভিযানে ৪০৪ মামলায় ৯ লাখ টাকা জরিমানা
- ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
- পঞ্চগড়ে বৃষ্টির আশায় ইসতিসকার নামাজ আদায়
- গুচ্ছের হাবিপ্রবি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ১২৩৪১ জন
- রংপুরে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবসে র্যালী ও আলোচনা সভা
- রংপুরে মহানগর ছাত্রলীগের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
- ঢাকা থেকে ইয়াবা ব্যবসা করতে এসে পীরগঞ্জে আটক
- লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির ৫ নেতাকর্মী কারাগারে
- পাটগ্রামে ট্রেনের ধাক্কায় নারীর মৃত্যু
- তেঁতুলিয়া তীব্র তাপপ্রবাহে নলকূপে মিলছে না পানি
- সাদুল্লাপুরে উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা
- ঘোড়াঘাটে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ
- নীলফামারীতে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উদযাপন
- কুড়িগ্রামে তীব্র গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত
- কুড়িগ্রামে ইসতিসকার নামাজ আদায়
- বোদায় ট্রাক-ট্রাক্টর সংঘর্ষে নিহত ২
- গ্রীষ্মকালে শীতল ত্বক
- ‘সংস্কারের পাশাপাশি আগামী বাজেটে কর্মসংস্থানে নজর দেওয়া হবে’
- বুয়েটে জঙ্গি গোষ্ঠীর কার্যক্রম তদন্ত করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী
- ছেলেকে নিয়ে ঈদের নামাজে যাওয়া হলো না বাবার
- ফুলবাড়ীতে পাঁচ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি
- প্রথমবার সালমানের বিপরীতে কিয়ারা
- ঈদে সংবাদপত্রের ছুটি ঘোষণা আজ
- রাতে বেরিয়ে নিখোঁজ কিশোর, দুপুরে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
- দুপুরের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ঝড়
- শিশুরাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশের মূল কারিগর
- ভারতবিরোধী স্লোগানের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা লুকিয়ে আছে
- হিলি সীমান্ত পরিদর্শনে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর প্রতিনিধি দল
- সুন্দরগঞ্জে আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষে ব্যাপক সাফল্য
- আজ থেকে ট্রেনের ফিরতি যাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু
- আবারও তিনদিন বাংলাবান্ধার ইমিগ্রেশন ও বাণিজ্য বন্ধ ঘোষণা
- শরীরে মেদ জমেছে নাকি পানি, বুঝবেন যেসব লক্ষণে
- ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচকে নিয়োগ দিচ্ছে পাকিস্তান
- পুলিশের আজান, কেরাত ও রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
- ব্যস্ততার পরিবর্তে অস্তিত্ব টেকানোর লড়াইয়ে মৃৎশিল্পীরা
- দ্রুত শিক্ষকদের শূন্য পদ পূরণের সুপারিশ
- ইউটিউবে আসছে এআই নির্ভর ৩ ফিচার