• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

কুড়িগ্রাম ওরা ডাক্তার না ‘কসাই’

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

৫ বছর বয়সী ছোট্ট মারুফা জাহান মাইশা। ৯ মাস বয়সে চুলার আগুনে পুড়ে যায় তার ডান হাতের আঙুল। চিকিৎসা করে হাতের ক্ষত ভালো হলেও কুঁকড়ে যায় মাইশার ডান হাতের তিন আঙুল। আঙুলগুলো ঠিক হয়ে যাবে, এমন আশায় সম্প্রতি ঢাকার এক চিকিৎসকের পরামর্শে আঙুলে অস্ত্রোপচার করানো হয় শিশুটির। আর সেই অস্ত্রোপচারই যেনো কাল হলো মাইশার। আঙুলের অস্ত্রোপচার করতে গিয়েই মারা যায় মাইশার। কিন্তু দাফনের জন্য গোসল করাতে গিয়ে নারীরা দেখতে পান মাইশার নাভির নিচে পেটজুড়ে কেটে সেলাই করা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় নানা গুঞ্জন।

কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভেলাকোপা ব্যাপারী পাড়ার মোজাফফর আলী ও বেলি আক্তার দম্পতির মেয়ে মারুফা জাহান মাইশা। নানা ওসমান গণি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

শুক্রবার ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, কিছু দিন আগে রাজধানী ঢাকার মিরপুরে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের ডাক্তার মো. আহসান হাবীবের শরণাপন্ন হন মাইশার বাবা মোজাফফর। তিনি জানতে পারেন ভালো চিকিৎসা নিলেই মেয়ের হাত ভালো হবে। চিকিৎসকও বলেছেন, ‘অপারেশন করলে স্বাভাবিক হবে’।

চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর সকালে রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে হাতের অপারেশন হয় মাইশার। অস্ত্রোপচারের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, মাইশার অবস্থা খারাপ তার আইসিইউ সাপোর্ট লাগবে। তাকে গ্লোবাল স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিতে হবে। সেখানেই মারা যায় মাইশা।

কিন্তু কিভাবে মারা গেছে তাদের মেয়ে, বিষয়টি বুঝে ওঠার আগেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অপারেশনের জন্য নেয়া টাকা ফিরিয়ে দেয় মাইশার বাবা-মাকে। লাশ বাড়িতে আনতে ঠিক করে দেয় অ্যাম্বুলেন্সও। বাড়ি ফিরে যখন ছোট্ট মাইশাকে দাফনের জন্য গোসল করানো হবে, তখন গোসল করানো নারীরা দেখতে পান মাইশার নাভির নিচে পেটজুড়ে কেটে সেলাই করা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় নানা গুঞ্জন।

মাইশার মা বেলি বলেন, ‘আমি কী ভুল করলাম! কেন মেয়েকে নিয়ে গেলাম। ওরা ডাক্তার না, কসাই। আমার মেয়ের পেট কাটলো কেন? ওরা আমার মেয়েকে মেরে ফেলছে। আমি এর বিচার চাই। আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই।’

মাইশার বাবা বলেন, ‘মেয়ের হাতের আঙুল ঠিক করার জন্য ঢাকার মিরপুরে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের ডা. আহসান হাবীবের কাছে যাই। তিনি সবকিছু দেখে বলেন, বুধবার সকালে অপারেশন করা হবে। রূপনগরে আলম মেমোরিয়াল মেডিকেলে তার শেয়ার আছে জানিয়ে বলেন, সেখানে অপারেশন করালে খরচ কম লাগবে। বুধবার সেখানে হাতের অপারেশন করার সময় মেয়ে মারা যায়। পরে তারা আমাদের টাকা ফেরত দিয়ে ধমকিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।’

এ বিষয়ে চিকিৎসক ডা. আহসান হাবীব বলেন, ‘আমি অপারেশন করিনি। আমার শেয়ার থাকা আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে অপারেশন অ্যারেঞ্জ করে দিয়েছিলাম। সেখানে ঢাকা মেডিকেলের প্লাস্টিক সার্জারির চিকিৎসক (সহকারী অধ্যাপক) ডা. শরিফুল ইসলাম অপারেশন করেন। কিন্তু দুর্ঘটনাবশত শিশুটি মারা যায়। আমি নিজেও এ ঘটনায় হতবাক বলে জানান তিনি।

Place your advertisement here
Place your advertisement here