• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

দারিদ্র্য দমাতে পারেনি নীলফামারীর সাকিবকে

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

দারিদ্র ও অর্থ সংকট দমিয়ে রাখতে পারেনি ফেরিওয়ালার সন্তান সাকিব খানকে। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পর এবার এসএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সে।

এরপরেও অভাব নামক এক অদৃশ্য দানব তার আগামী দিনের লালিত স্বপ্নকে অক্টোপাশের মতো আঁকড়ে ধরেছে। তবুও সে উচ্চ শিক্ষা নেয়ার আকাঙ্খাকে বাস্তবে রূপ দিতে বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছে।

নীলফামারীর সদর উপজেলার কুন্দপুকুর ইউনিয়নের শালহাটি গ্রামের ফেরি করে কাপড় বিক্রী করা মহসীন আলীর তিন ছেলের মধ্যে সবার বড় সাকিব খান। বসতভিটা ছাড়া আর কোন জমি নেই তাদের। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রামে গ্রামে সাইকেলে করে কাপড় নিয়ে বিক্রি করে মহসিন।

এরপরেও সব সময় সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকত। একার রোজগারে ৫ সদস্যের সংসার ঠিকমতো চলত না, সেখানে ছেলেদের লেখাপড়ার খরচ যোগাবে কোথায় থেকে।

এরফলে জিপিএ-৫ নিয়ে পঞ্চম শ্রেণী পাশ করার পর লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয় সাকিবের। কিন্তু ছেলের মেধা ও প্রবল ইচ্ছা শক্তির কাছে সকল প্রতিবন্ধকতা হার মানে। সাকিব মেধাবী হওয়ায় শিক্ষক ও প্রতিবেশীদের চাপে নীলফামারী সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়ে ভর্তির সুযোগ পায়।

সেখানেও জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে মেধার স্বাক্ষর রাখেন সাকিব। প্রতিবেশী ও শিক্ষকের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে সাকিব এবার এসএসসি  পরীক্ষার ফরম পূরণ করেন। এতো কিছুর পরেও দারিদ্রতার দমাতে পারেনি তাকে। এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে তার মেধা ও ইচ্ছা শক্তির আবারও প্রমান দিল সে।

তার ইচ্ছা সে প্রশাসনিক বড় কর্মকর্তা হয়ে মানুষের সেবা করতে চায়। এজন্য পড়তে চায় ভালো কোন কলেজে। কিন্তু দরিদ্র পিতা পারবে কি তার সে সাধ পূরণ করতে?

ছেলের সাফল্যে আনন্দের মধ্যেও কষ্ট তাড়া করে সাকিবের মা কমলা বেগমকে। ছেলের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে বলেন, অনেক সময়ই না খেয়ে স্কুলে যেতে হয়েছে ছেলেকে। তার পরও থেমে থাকেনি তার মেধা। সে শুধু একটাই বলেছে “মা যত কষ্টই হউক আমাকে বড় হতে হবে।”

পিতা মহসিন আলী জানান, ফেরি করে কাপড় বিক্রী করা তার একমাত্র পেশা। কোন কারণে গ্রামে যেতে না পারলে সে দিন তাদের না খেয়ে থাকতে হয়। এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার চিন্তার শেষ নেই। অর্থাভাবে ছেলের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় এখন ভুগছেন তিনি।

নীলফামারী সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী জানান, সাকিবের মেধার কাছে হার মেনেছে সকল বাধা। অদম্য এ মেধাবীর লেখাপড়া চালানোর সহযোগীতায় দেশের হৃদয়বান ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আবহ্বান জানান তিনি।

Place your advertisement here
Place your advertisement here