• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

ফুলবাড়ীতে জিপিএ-৫ পেয়েও কলেজে ভর্তি অনিশ্চতায় ৩ শিক্ষার্থী

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

ফুলবাড়ীতে জিপিএ-৫ পেয়েও কলেজে ভর্তি অনিশ্চতায় ৩ শিক্ষার্থী                
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে দরিদ্র পরিবারের তিন শিক্ষার্থীর পড়াশুনা অনিশ্চিত হয়েছে পড়েছে। এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েও অর্থের অভাবে কলেজে ভর্তি হতে পারবেন কি না সে ব্যাপারে তারা নিশ্চিত নয়। 

যাদের একজন হোটেল শ্রমিকের কাজ করে সংসার ও নিজের পড়াশুনা চালিয়েছে, একজন টিউশনি করে পড়াশুনা ও দরিদ্র বাবার সংসারের ব্যয়ভার বহন করেছে আর অন্য জন দরিদ্র কৃষকের মেয়ে। 
 
উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কুরুষাফেরুষা গ্রামের দিন মজুর ফারুক মিয়ার ছেলে শাকিল মিয়া। একই ইউনিয়নের পূর্বফুলমতি গ্রামে দিনমজুর গনেশ চন্দ্র রায়ের মেয়ে শিউলী রানী রায়। এছাড়া একই গ্রামের দরিদ্র কৃষক আনিচুর রহমান ভোলার মেয়ে তাকিয়া আক্তার মনি। তারা তিনজনই বালারহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে পাশ করেছেন। 

বাবার দিন মজুরির আয়ে কোনো রকমেই সংসার চলতো। শাকিল মিয়া সবার বড়। শাকিলও বাবার অভাবের সংসারে থেকে অনেক কষ্টে খেয়ে-পড়ে পিএসসিতে এ প্লাস পান। ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশুনার পাশাপাশি তিনি বালারহাট বাজারে হোটেলের শ্রমিকের কাজ করেন। দিনে হোটেলে কাজ করতেন। রাতে বাড়িতে পড়াশুনা চালিয়ে যেতেন শাকিল। এভাবেই শাকিল জেএসসিতে এ প্লাস না পেলেও এ গ্রেড পান। সর্বশেষ শাকিল ফুলবাড়ী সদরে একটি হোটেলে কাজ-কাম করে বালারহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। অভাবের তাড়নায় ইচ্ছা থাকলেও শিক্ষা ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন ভেস্তে বসেছে শাকিল মিয়ার। এখন উচ্চ শিক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অর্থের অভাবে ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারবে কি না এ দুচিন্তায় দিন পার করছেন। 

কলেজে ভর্তির জন্য মেধাবী শাকিল মিয়ার পরিবারের অর্থ না থাকায় উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ইচ্ছা থাকলেও  শিক্ষা ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন ভেস্তে বসেছে অদম্য মেধাবী শাকিলের।

দিনমজুর গনেশ চন্দ্র রায়ের ছেলে। গনেশ চন্দ্র রায়ের দুই ছেলে দুই মেয়ে। শিউলী সবার ছোট। বড় ছেলে মাস্টাস পাশ করে চাকরি  না পেয়ে বাড়িতে টিউশনি করে সংসার চালান। দ্বিতীয় ছেলে বিএ পাশ করে ঢাকায় গার্মেসে চাকরি করে। অনেক কষ্টে দ্বিতীয় মেয়েকে বিয়ে দেন। ছোট মেয়ে শিউলী  টিউশনি করে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। অভাবের তাড়নায় ইচ্ছা থাকলেও প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়ার স্বপ্ন ভেস্তে বসেছে শিউলী রানী রায়। 

শিউলী রানী জানান, টিউশনির টাকা দিয়ে পড়ালেখার খরচ যোগার করেছে। শিক্ষক আর আত্মীয় স্বজনদের সহযোগিতায় এসেছে এতদূর। অর্থাভাব আর বাবা-মায়ের আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় প্রশাসনিক কর্মকর্তা হবার স্বপ্ন থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় করছে শিউলী রানী। একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়ে গরীব-দুঃখী মানুষের সেবা করতে চান শিউলী রানী। এখন সমাজের বৃত্তবানদের সহযোগিতাই পারে তার স্বপ্ন পূরণ করতে। 

বালারহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ গোল্ডেন-৫ পেয়েছে তাকিয়া আক্তার মনি। মনি এর আগে পিএসসি ও জেএসেিত জিপিএ-৫ পেয়ে দরিদ্র কৃষক বাবার সুনাম অর্জনের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরও সুনাম অর্জন করেছে। তবে আনিচুর রহমান দরিদ্র কৃষক মানুষের জমি লিজ নিয়ে কোন রকমেই চার সদস্যের সংসার চালার পাশাপাশি এক ছেলে ও এক মেয়ের পড়ালেখার খরচ জোগাতেন। স্বল্প আয়ের দরিদ্র কৃষক আনিচুর রহমান ভোলা অভাবের সংসারে কীভাবে মেয়ের পড়ালেখার কাজ চালাবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না। ফলে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে চরম হতাশা ভুকছেন তিনি।    

তাকিয়া আক্তার মনি  বলেন, আমার বাবা একজন দরিদ্র কৃষক। গরীব বাবা আমাকে উচ্চ শিক্ষার জন্য কিভাবে কলেজে ভর্তি করাবে ভেবেই পাচ্ছি না। তার ওপর সামনের এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ার সাধনা যেন তার পূর্ণ হয় সে জন্য সকলের কাছে দোয় কামনা করেন। তাকিয়া ভবিষতে ডাক্তার হয়ে সমাজের গরীব দুঃখীদের পাশে দাঁড়াতে চান। 

তার স্বপ্ন কী পূরণ হবে?  একই চিন্তা শাকিল এবং শিউলীও। 

Place your advertisement here
Place your advertisement here