• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

রংপুরের বিখ্যাত আম হাঁড়িভাঙ্গা আম এখন বাজারে

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর বাজারে উঠতে শুরু করেছে রংপুরের বিখ্যাত আম হাঁড়িভাঙ্গা। প্রথমবারের মতো দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বুধবার (১৫ জুন) থেকে আম পাড়া শুরু করেছে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। চাহিদা বিবেচনা করে ক্রেতাদের কাছে আম পৌঁছে দিতে ইতিমধ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর কৃষি অঞ্চলের পাঁচ জেলায় প্রায় ৬ হাজার ৯৭৯ হেক্টর জমিতে হাঁড়িভাঙ্গাসহ অন্যান্য আম বাগান রয়েছে। এতে গাছের সংখ্যা রয়েছে প্রায় দুই লাখ ৫৭ হাজার। এরমধ্যে শুধুমাত্র রংপুর জেলায় হাঁড়িভাঙ্গা আমের জমি রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৮৮৭ হেক্টর। এবারে শুধুমাত্র হাঁড়িভাঙ্গা আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ হাজার ৪৩৬ মেট্রিক টন। মৌসুমের শুরুতে এই আমের দাম কিছুটা কম থাকলেও প্রতি কেজি হাঁড়িভাঙ্গা আম ৬০  থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়। গত বছরের তুলনায় ফলন কিছুটা কম হলেও বাজারে ভালো দাম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তারা। আবহাওয়া ভালো থাকলে আম বিক্রি করে এবার প্রায় ২০০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে বলে জানায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের।

কৃষি বিভাগ আরও জানায়, চলতি বছরে প্রথম বারের মতো হাঁড়িভাঙ্গা আম দেশের গন্ডি পেরিয়ে মালয়েশিয়া, নেপাল, ভুটান, ভারত ও সিঙ্গাপুরে সরকারিভাবে রপ্তানি হতে যাচ্ছে।  মৌসুমি ফলের জনপ্রিয়তার তালিকায় শীর্ষে থাকা রংপুরের ঐতিহ্যবাহী ও সুস্বাদু হাঁড়িভাঙ্গা আমের চাহিদা বেড়েই চলেছে। বিদেশে রপ্তানির জন্য মুকুলের পর পরেই ব্যাগিং পদ্ধতিতে আম চাষের ব্যাপারে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে আম উৎপাদিত এলাকাগুলোতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সুযোগ সুবিধার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। পদাগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় যাতায়াতেরসহ পরিবহনের ভাল সুযোগ সুবিধা না থাকায় ক্রেতাদের উপস্থিতি কম বলে জানা গেছে।

বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, থরে থরে আম সাজিয়ে রেখেছে বিক্রেতারা। বিভিন্ন সাইজের আম ঝুড়িতে রাখা হয়েছে। আমের সাইজ দেখে ক্রেতারা দরদাম ঠিক করছেন। পছন্দের আম একটু বেশী দাম হলেও ক্রেতাদের ক্রয় করতে দেখা গেছে। অনেকে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে আম বিক্রি করতে না পাড়ায় হতাশায় ভূগতে দেখা গেছে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর উদ্দেশ্যে আম বাজারের সাথেই অস্থায়ী ভাবে কুরিয়ায় সার্ভিসগুলো তাদের শাখা সেন্টার খুলেছে।

অনেকে আম ক্রয় করে বাজারের পাশে অবস্থিত কুরিয়ারগুলোর মাধ্যমে আম পাঠাতে দেখা যায়। এজন্য কেজি প্রতি সার্ভিস চার্জ নিচ্ছে কুরিয়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ।

বাজারে আম কিনতে আসা অনলাইনে আম বিক্রেতা হাসান আল সাকিব বলেন, আমরা প্রতি বছরে অনলাইনে আম বিক্রি করে থাকি। এবারো আমরা অনলাইনে আম বিক্রি করবো। এবারে আমের দাম একটু কম। মনে হয় অন্যন্যা বারের তুলনায় এবারে ব্যবসা ভাল হবে। তবে পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

পদাগঞ্জ বাজারে আম বিক্রি করতে আসা আম চাষি মন্তাজ আলী বলেন, এবারে হাঁড়িভাঙ্গা আমের ভাল ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজারে আম নিয়ে এসে বিক্রি করতে না পাড়ায় চরম হতাশায় ভূগছি। তিন মন আমের মধ্য একমন আম বিক্রি হয়েছে। এভাবে আম বিক্রি হলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।

অনেক আম চাষি বলছেন, এ বছর অনাবৃষ্টির কারণে অধিকাংশ গাছের বোটা ঝরে পড়েছে। ভালো দাম না পেলে লোকসানের মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ অঞ্চলে হিমাগার স্থাপনসহ পরিবহন সুবিধা ও ন্যায্য দাম পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চত করার দাবি জানান তারা।

রংপুর কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, হাঁড়িভাঙ্গা আম ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মণ্ডল বলেন,  এবছর হাঁড়িভাঙ্গা আমের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ হাজার ৪৩৬ মেট্রিক টন। এছাড়া, অন্যসব আম মিলিয়ে লক্ষ্যমাত্রা ৪৫ হাজার ৪৮৫ মেট্রিক টন। মৌসুমের শুরুতে দাম কিছুটা কম থাকলে প্রতি কেজি হাঁড়িভাঙ্গা আম ৮০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। আবহাওয়া ভালো থাকলে এ আম বিক্রি করে প্রায় ২০০ কোটি টাকার ব্যবসা করার আশা করছেন এ জেলার আম চাষিরা।

জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, হাঁড়িভাঙা আম দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে পরিবহন সুবিধাসহ নিরাপত্তার বিষয়টিও জোরদার করা হয়েছে। নতুন নতুন উদ্যোক্তারা এবার আম চাষ করেছে। তাদের উৎপাদিত আম আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়ের জন্য সার্বিক সহযোগিতা করছে স্থানীয় প্রশাসন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here