• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

কুঁড়েঘরের অদম্য মেধাবীদের পাশে পঞ্চগড়ের ডিসি

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

কুঁড়েঘরে থেকেও অদম্য মেধার পরিচয় দিলেন পঞ্চগড়ের সাকিব, শান্ত, নাঈম আর ক্ষিতিশ। তাদের কারো বাবা ভ্যানচালক, কারো বাবা অন্যের ক্ষেতে কাজ করা কৃষিশ্রমিক অথবা বর্গাচাষি। একজনের বাবা মসজিদে পাঁচ হাজার টাকা বেতনে ইমামতি করেন। কেউ আবার পারিবারিক অনটনে নিজেও কাজ করেছেন। এদের পরিবারে ভিটেবাড়ি ছাড়া কোন জমিজমা নেই। কুঁড়েঘরেই বসবাস করেন তারা।

কিন্তু দরিদ্রতা তাদের জীবনযুদ্ধে বাধা হতে পারেনি। কুঁড়েঘরে লেখাপড়া করেও সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির গৌরব অর্জন করেছেন তারা। এদের মধ্যে আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের রাজাগাঁও গ্রামের মো. শান্ত ও একই উপজেলার তড়িয়া ইউনিয়নের কাটালী গ্রামের মো. নাঈম এখলাস রাজশাহী মেডিকেল কলেজে, সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের জমাদারপাড়া গ্রামের মো. সাকিব হাসান সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে আর দেবীগঞ্জ উপজেলার দেপ্রিগঞ্জ এলাকার ক্ষিতিশ চন্দ্র রায় বরিশাল শের-এ-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। চরম দারিদ্র্য, অভাব-অনটনে বেঁচে থাকার কঠিন সংগ্রামে জয়ী সাকিব-ক্ষিতিশদের জীবনের গল্প একই সুতোয় গাঁথা।

আদম্য মেধাবী ক্ষিতিশ চন্দ্র রায় অষ্টম শ্রেণির পর থেকে লেখাপড়ার পাশাপশি ক্ষেতে কাজ করেন। ১৩ বছর বয়সেই কৃষি শ্রমিক হিসেবে বাবার সাথে সুদূর নওগাঁ জেলায় যান অন্যের ক্ষেতের ধান কাটার জন্য। ক্ষিতিশের বাবা সুবাস চন্দ্র রায় বলেন, আমার ছেলে ছোটকাল থেকেই কাজ করে। ধান কাটতে পারে বিঘার পর বিঘা। সে আমার সাথে কৃষি শ্রমিক হিসেবে নওগাঁ গিয়েছিল অন্যের জমিতে ধান কাটতে। এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বাপ-বেটা মিলে নোয়াখালীও গিয়েছিলাম ধানকাটা শ্রমিক হিসেবে। নাঈম, শান্ত আর সাবিকের জীবনের গল্পও একই রকম। এদের তিনজনের পরিবারে অভাব-অনটন লেগে থাকত। অভাব-অনটনের বাধা জয় করে চিকিৎসক হওয়ার সুযোগ পাওয়া মেধাবীদের অভিভাবকরা ভর্তিসহ মেডিকেল কলেজে খেলাপড়ার খরচ বহনে অক্ষম।

তাদের জীবন সংগ্রামে সফল হওয়ার গল্প শুনে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বুকে জড়িয়ে সাহস যুগিয়েছেন। ভর্তির জন্য প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে দিয়ে পড়ালেখার খরচেও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। একই সাথে পরবর্তীতে এমন সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে জেলা প্রশাসক প্রত্যেককে তার ব্যক্তিগত নাম্বারও দেন।

এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব দীপঙ্কর রায়, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুদুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড় থেকে মোট ১৭ মেধাবী শিক্ষার্থী এবার দেশের বিভিন্ন এলাকার মেডিকেল কলেজে লেখপড়ার সুযোগ পেয়েছে। এদের প্রত্যেকে আমাদের জন্য রত্ন। এরা দেশের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর অনুপ্রেরণা। এদের মধ্যে কেউ কেউ অভাবের সংসারে কুঁড়েঘরে থেকে লেখাপড়া করে সুযোগ পেয়েছে। এর আগে আরেকজন গরিব পরিবার থেকে মেডিকেলে চান্স পাওয়া এমন মেধাবী শিক্ষার্থীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। আপাতত তাদের ভর্তির জন্য আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। প্রয়োজনের পরবর্তীতে লেখাপড়ার খরচেও সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here