• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

মেডিকেলে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় হাতীবান্ধার আমিনা খাতুন 

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

দারিদ্র্যতা দমিয়ে রাখতে পারেনি লালমনিরহাটের আমিনা খাতুনকে। অর্থের অভাবে ভর্তি কোচিং করতে না পারলেও ঘরে বসে পড়াশোনা করে তিনি এবার নীলফামারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রমের ফলে দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়েও আজ তার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তবে মেডিকেলে সুযোগ পেলেও ভর্তি নিয়ে চিন্তায় পড়েছে তার পরিবার। মেয়েকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানোসহ তার পড়াশোনার খরচ জোগাতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আমিনার ক্যানসার আক্রান্ত বাবা।

জানা গেছে, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম ফকিরপাড়া গ্রামের আব্দুল হামিদের মেয়ে আমিনা খাতুন। তিনি ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়ে নীলফামারী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

আমিনার বাবার সম্বল বলতে বসতভিটার ১২ শতক জমি আর একটি সবজির দোকান। ওই সবজির দোকানের ওপর নির্ভর করেই পরিবারের ছয় সদস্যের খরচ চলে। আমিনার বড় বোনের বিয়ে হয়েছে। তার বাবা আব্দুল হামিদ ছয় বছর ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত। পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা।

ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় মমিনুল ইসলাম লাজু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র। দ্বিতীয় ভাই সাজু হোসেন ঢাকার শান্তিনগর এলাকায় হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজে স্নাতক প্রথমবর্ষে অধ্যয়ন করছেন। সবার ছোট বোন খাদিজা খাতুন এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে।

হাতীবান্ধা সরকারি আলিমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০২১ সালে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন আমিনা খাতুন। এর আগে তিনি ২০১৯ সালে বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। জেএসসি ও পিএসসিতেও জিপিএ-৫ পান।
আমিনা খাতুন বলেন, অর্থের অভাবে মেডিকেল ভর্তি কোচিং করতে পারিনি। বাড়িতে বসে এক বড় ভাইয়ের কাছে পড়ে নীলফামারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চান্স পেয়েছি। গ্রাম থেকে মেডিকেলে পড়ার স্বপ্ন দেখাটা বিশাল ব্যাপার। আল্লাহ আমার স্বপ্ন পূরণ করেছেন। এদিকে আমার ভর্তি এবং পড়াশোনার খরচ নিয়ে বাবা-মা চিন্তায় আছেন। তিনি আরও বলেন, আমি গরিব ঘরের মেয়ে তাই ভালো ডাক্তার হয়ে গরিবদের সেবা করতে চাই।

আমিনার মা লাকি বেগম বলেন, আমার মেয়ে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। এখন আমরা মেয়ের ভর্তি এবং পড়াশোনা নিয়ে টেনশন করছি। আপনারা আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।

আমিনা খাতুনের বাবা আব্দুল হামিদ বলেন, ‘আমি ছয় বছর ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত, এখনো সুস্থ হতে পারিনি। অনেক কষ্টে সবজির দোকানটি করছি। এই দোকানটির ওপর আমাদের পরিবারের খরচ, ওষুধপত্র কেনা ও চার ছেলেমেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে আসছি। আগামী মাসে মেয়েকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করাতে অনেক টাকার প্রয়োজন। তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। কোনো সংস্থা বা এনজিও যদি সহযোগিতা করতো তাহলে একটু টেনশনমুক্ত হতাম।’

বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল বাড়ি বলেন, আমিনা ছোট থেকেই মেধাবী। সব পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করেছে সে। তার বাবা সবজি বিক্রেতা। বড়খাতা বাজারে সবজির দোকান। একটি দোকান দিয়েই অতিকষ্টে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করাচ্ছেন। তার মেয়ে এবার মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। আমি তার সাফল্য ও মঙ্গল কামনা করি।

ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন বলেন, এবার দুই শিক্ষার্থী ফকিরপাড়া ইউনিয়ন থেকে মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তার মধ্যে আমিনা খাতুনের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। তার বাবা ক্যানসার আক্রান্ত। তার সাফল্য কামনা করি।

Place your advertisement here
Place your advertisement here