• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

খানসামায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘স্বাধীনতার ডাকটিকিট`

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারি ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ডাকটিকিট নিয়ে নির্মিত ৫৩ মিনিটের প্রামাণ্যচিত্র ‘স্বাধীনতার ডাকটিকিট’।

তৎকালীন মুজিবনগর সরকারের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের প্রতিনিধি ছিলেন বর্তমানে দিনাজপুর-৪ (খানসামা- চিরিরবন্দর) আসনের পরপর তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তার দক্ষতা, পরিকল্পনা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় স্বাধীনতা যুদ্ধকালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে সারা বিশ্বে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল ‘স্বাধীনতার ডাকটিকিট’।

সেই স্বাধীনতার ডাকটিকিট নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রটি সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে হোসেনপুর ডিগ্রি কলেজ, খানসামা ডিগ্রি কলেজ, পাকেরহাট গ্রোয়ার্স মার্কেট এবং চিরিরবন্দর উপজেলা কনভেনশন সেন্টারে প্রদর্শন করা হয়।

এছাড়াও মুজিববর্ষ উপলক্ষে বছরব্যাপী বিভিন্ন টেলিভিশন, পত্রপত্রিকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রামাণ্যচিত্রটির প্রচারণা দেখে সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, দলীয় নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ‘স্বাধীনতার ডাকটিকিট’ প্রামাণ্যচিত্রটিতে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তদানিন্তন মুজিবনগর সরকারের আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি বিচারপতি আবু সাইদ চৌধুরী, যুক্তরাজ্যের তৎকালীন সাবেক পোস্টমাস্টার জেনারেল এবং লেবার পার্টির এমপি জন স্টোনহাউজ এবং লন্ডনের অধিবাসী বিখ্যাত ডাক টিকিট নকশাবিদ বিমান মল্লিকের সম্মিলিত উদ্যোগে ১৯৭১ সালের ২৯ জুলাই মুজিবনগর সরকার ও যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহর থেকে বাংলাদেশের আটটি ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয়। একইসঙ্গে এসব ডাকটিকিট যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রচার ও বিক্রির মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অর্থ সংগ্রহ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে বিশ্বজনমত সৃষ্টির ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশের প্রথম আটটি ডাকটিকিটের প্রকাশ, প্রচার ও বিক্রির ইতিহাস সার্বিকভাবে তুলে ধরার প্রয়াসে, এই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ডাকটিকিট নকশাবিদ বিমান মল্লিকের, ১৯৭১ সালের ৮ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমস্ পত্রিকায় ডাকটিকিটগুলো প্রকাশের সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার ক্ষেত্রে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন অর্থ-মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ডাকটিকিট বিক্রির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের বিষয়ের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থেকে ১৯৭১ সালে মুজিরনগর সরকারের ডাক ও টেলিগ্রাফ বিভাগের সহকারী সচিব এবং অবসরপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা সচিব মোহাম্মদ ইদ্রিস আলীর বর্ণনাধর্মী সাক্ষাৎকার ধারণ করা হয়েছে।

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের কূটনৈতিক সার্ভিসে যোগদান করেন এবং ২ বছর পর ১৯৬৮ সালের আগস্ট মাসে তৎকালীন পাকিস্তান কনস্যুলেটে ভাইস কনসাল হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭১ সালে ২৬ এপ্রিল তিনি পাকিস্তান সরকারের পক্ষ ত্যাগ করে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন।

এরপর মুজিবনগর সরকার তাকে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেয়। তারপর মে মাসে মুজিবনগর সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আটটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশের বিষয়টি তাকে জানানো হয় এবং বিশ্বব্যাপী এই সংবাদটি প্রচারে উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ করা হয়।

শত প্রতিকূলতার মধ্যে থেকেও তিনি বাংলাদেশের প্রথম আটটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশের সংবাদটি নিউইয়র্ক টাইমস্ এর ৮ আগস্ট সংখ্যার স্ট্যাম্প সেকশনে প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং সেইসঙ্গে যেসব বিদেশি বন্ধু এই ডাকটিকিটগুলো প্রকাশের সংবাদটি প্রচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন; নিউইয়র্ক টাইমস্ ও জাতিসংঘ প্রতিনিধি ক্যাথলিন টেল্টস, নিউইয়র্ক টাইমসের স্ট্যাম্প বিভাগের সম্পাদক ডেভিড লিডম্যান, নিউইয়র্ক টাইমসের দক্ষিণ এশিয়া প্রতিনিধি সিডনি শনবার্গ তাদের অবদানের বর্ণনা ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরেন।

ফলে ‘স্বাধীনতার ডাকটিকিট’ প্রামাণ্যচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রথম আটটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ এবং নিউইয়র্ক টাইমসের মাধ্যমে সংবাদটি প্রচারের পূর্ণ ইতিহাস সার্থকভাবেই তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন নির্মাতা নাসরিন ইসলাম।

তথ্যনির্ভর প্রামাণ্যচিত্রটিতে বিমান মল্লিক ২৯ জুলাই দিনটিকে শুধুমাত্র বাংলাদেশের ডাকটিকিট দিবস হিসেবে নয় বরং আন্তর্জাতিক ডাকটিকিট দিবস হিসাবে ঘোষণার প্রস্তাব করেছেন। কারণ বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধের ইতিহাসে এই আটটি স্মারক ডাকটিকিট যে ভূমিকা রেখেছে তা ইতিহাসে বিরল এবং ডাকটিকিটের বৈশ্বিক ইতিহাসেও এটি একটি অনন্য ঘটনা।

Place your advertisement here
Place your advertisement here