• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

শীতে কাহিল মানুষ, ছয় জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৫ জানুয়ারি ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

দেশের ছয় জেলায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। ফলে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কাহিল হয়ে পড়ছে মানুষ। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেশি। হাড় কাঁপানো শীতে ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে। গবাদি পশু নিয়েও বিপাকে পড়েছে কৃষক ও খামারিরা।

গতকাল আবহাওয়া অফিস বলছে, নীলফামারী, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, পাবনা, নওগাঁ ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

সিনিয়র আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ গত রাতে বলেন, ‘এই শৈত্যপ্রবাহ আরো দুই দিন থাকতে পারে। এরপর তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে। তবে ১১ বা ১২ জানুয়ারি থেকে দু-তিন দিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। এরপর আবার তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। এ মাসে একাধিক শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে।’

গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং তা দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া একাধিক জেলার তাপমাত্রাও ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। গত কয়েক দিন থেকে গাইবান্ধা অঞ্চলে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।

গতকাল তা আরো বেড়ে যায়। ঘন কুয়াশা না থাকলেও দুপুর ১টা পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। গ্রামের শ্রমজীবী মানুষ তীব্র শীতের কারণে মাঠে নামতে পারেনি। অনেকে খড়কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। মাঝেমধ্যে এলোমেলো হিমেল হাওয়া শীত আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।

শীত নিবারণের জন্য মানুষ গরম কাপড়ের দোকানে ছুটছে। দাম চড়া হলেও মানুষ বাধ্য হয়েই গরম কাপড় কিনছে। অন্যদিকে গ্রামের নিম্ন আয়ের মানুষের একমাত্র ভরসা পুরনো কাপড়। সেই পুরনো গরম কাপড়ের দামও চড়া।

এদিকে রংপুরে শীতের কবল থেকে রক্ষা পেতে খড়কুটা জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে গত পাঁচ দিনে শিশু, নারীসহ ১৬ জন দগ্ধ হয়েছে। তাদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. এম এ হামিদ পলাশ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তীব্র শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে অসাবধানতাবশত নারী ও শিশুরা বেশি দগ্ধ হচ্ছে।  বর্তমানে এক বৃদ্ধাসহ দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

কনকনে ঠাণ্ডায় গরম কাপড়ের অভাবে শীতে কাঁপছে রংপুরের পীরগাছা, কাউনিয়া ও গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চলের দুস্থ ও হতদরিদ্র মানুষ। দুপুরের পর হালকা রোদ দেখা গেলেও বিকেল থেকে তাপমাত্রা কমে শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে তুলছে। এতে দিনমজুর ও সাধারণ মানুষ কাজে যেতে না পারায় ভোগান্তিতে পড়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে ছিন্নমূল অসহায় মানুষ ফুটপাতে খড়কুটায় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছে।

পীরগাছা উপজেলার শিবদেবচর গ্রামের আকলিমা বেগম (৬৫) বলেন, ‘আইতোত খুব ঠাণ্ড পড়ে। বেড়ার ফাঁক দিয়া ঠাণ্ডা বাতাস হুহু করি ঘরোত ঢোকে, ঘরের মধ্যেও টেকায় যায় না।’ চর গাবুড়া গ্রামের মতিয়ার রহমান বলেন, ‘ঠাণ্ডা বাতাসে কাজকাম ঠিকমতো করা যাচ্ছে না। ঘরে গরম কাপড় কেনার মতো টাকাও নেই।’

পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শামসুল আরেফীন বলেন, সরকারিভাবে দুস্থ ও নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো বরাদ্দ দেওয়া হবে।’

টানা কয়েক দিন থেকে উত্তরের হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের উলিপুরের জনজীবন। বেড়েছে শীতজনিত রোগের  প্রকোপ। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীবেষ্টিত এলাকাগুলোতে শীতের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। শীতবস্ত্রের অভাবে কাহিল হয়ে পড়েছে অসহায় দুস্থ মানুষ। (প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন আমাদের প্রতিনিধিরা)

Place your advertisement here
Place your advertisement here