• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

রংপুরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের ৭০ লাখ টাকার জিপ নিলামে

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

রংপুরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের ৭০ লাখ টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি নিলামে তোলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটির মেরামতে প্রয়োজন সাড়ে ৪ লাখ টাকা। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ না পাওয়ায় নিলামের নামে বেহাত হতে যাচ্ছে সরকারি প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান এই সম্পদ। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু বিলাসবহুল জিপ গাড়িটি নয়, অব্যবহৃত আরও ৩৩টি মোটরসাইকেল এবং একটি জরাজীর্ণ জিপ গাড়িও নিলামে তোলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে বিআরটিএকে লিখিতভাবে চিঠি দিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।

সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি কুড়িগ্রামের কাঁঠালবাড়ি এলাকায় মিটসুবিশি জিপ গাড়িটি (রেজি নম্বর-ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৫-২১১৫) দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ সময় গাড়িতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের তৎকালীন পরিচালক (অর্থ) ও বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের এক কর্মকর্তা ছিলেন। দুর্ঘটনায় পরিচালকসহ গাড়িতে থাকা অন্যরাও আহত হয়েছিলেন।

দুর্ঘটনাকবলিত জিপ গাড়ির চালক আলী হোসেন সরকার জানান, গাড়িটি ২০১৫ সালের মডেল। ২০১৬ সালে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালকের নির্দেশে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলাম। ওই ঘটনার পর থেকে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না পাওয়ায় গাড়িটি আর মেরামত করা হয়নি।

এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে চিঠি দিয়ে বরাদ্দের জন্য আবেদন করে কোনো সাড়া মেলেনি। দীর্ঘ এই সময়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ অন্য কর্মকর্তারা পুরাতন গাড়ি ব্যবহার করে আসছেন। এতে জ্বালানি বাবদ খরচ বৃদ্ধির পাশাপাশি সময় অপচয়ও বাড়ছে। 

নাম না প্রকাশের শর্তে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের একজন কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, দীর্ঘ দিন ধরে গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে আছে। একাধিকবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে লিখিতভাবে জানালেও কোনো লাভ হয়নি। অথচ সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ করলে জিপ গাড়িটি ব্যবহারের উপযোগী করা সম্ভব। 

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ.এম শাহজাহান সিদ্দিক বলেন, এটি সাড়ে তিন বছর আগের ঘটনা। ওই সময়ে আমি অন্যত্র কর্মরত ছিলাম। তবে শুনেছি আগের প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিআরটিএ কর্তৃপক্ষকে দিয়ে গাড়িটির কী কী ক্ষতি হয়েছে এর একটি তালিকা করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে পাঠিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত জিপ গাড়িটি নতুন হওয়া সত্ত্বেও মেরামতের প্রয়োজনীয় টাকা বরাদ্দ না পাওয়ায় অন্য জরাজীর্ণ ৩৩টি মোটরসাইকেল ও একটি গাড়ির সঙ্গে ওই জিপটি নিলাম করার জন্য বিআরটিএকে চিঠি দিয়েছি। বর্তমানে বিভিন্ন উপজেলা পরিদর্শনসহ দ্রুত যাতায়াতে একটি পুরাতন প্রাডো জিপ ব্যবহার করা হয়। বর্তমান এ জিপ গাড়িতে এক লিটার জ্বালানি দিয়ে মাত্র ৪ কিলোমিটার যাওয়ায় আর্থিক অপচয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও জানান তিনি।

বিআরটিএ রংপুরের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. এরশাদ মিয়া বলেন, কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান গাড়ি নিলাম করার জন্য আবেদন করলে প্রতি গাড়ি পরিদর্শনের জন্য ৪৫০ টাকা এবং শতকরা ১৫ টাকা হারে ভ্যাট নেওয়া হয়। এখন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পেলে পরিদর্শন করে নিলাম কার্যক্রম শুরু করা হবে।

এদিকে সচেতন মহলের দাবি, জনস্বার্থে সরকারি এই সম্পদ মেরামত করে ব্যবহার উপযোগী করা হোক। এতে ৭০ লাখ টাকা মূল্যের জিপটি নিলামে স্বল্প মূল্যে বেহাত হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, সাড়ে ৪ লাখ টাকার অভাবে ৭০ লাখ টাকার জিপ নিলামে তোলার প্রস্তুতি জনস্বার্থে বন্ধ করা উচিত। দুর্ঘটনা কবলিত মূল্যবান এই জিপটি মেরামতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ দায়িত্বশীলদের উদ্যোগ নিতে পারে। তা না হলে নিলামে ৭০ লাখের জিপটি বেহাত হলে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের ক্ষতি। রাষ্ট্র বা সরকারের ক্ষতি মানে জনগণের অর্থের ক্ষতি। রাষ্ট্রীয় অপচয় বন্ধে একটু আন্তরিকতার সঙ্গে এ বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার।

Place your advertisement here
Place your advertisement here