• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook

লাভবান হওয়ার আশায় এবার কুড়িগ্রামে আগাম ফুলকপি চাষে ব্যস্ত কৃষকরা 

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

গত মৌসুমে ফুলকপি চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের অনেকেই ক্ষতি পুষিয়ে লাভবান হওয়ার আশায় এবার আগাম ফুলকপি চাষ করে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সবজি চাষিরা।

সম্প্রতি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ফুলকপি চাষের এমন চিত্র দেখা গেছে। জানা যায়, গত মৌসুমে রাজারহাট উপজেলার অনেক কৃষকই লাভের আশায় ঋণ নিয়ে ফুলকপি চাষ করেছিলেন। ফুলকপির ফলনও ভালো হয়েছিল।

তবে ফুলকপির বাজারদর প্রথমে ভালো থাকায় অনেক কৃষকই লাভবান হলেও পরে বাজারদর একদম নেমে যাওয়ায় অনেক কৃষকই ফুলকপি লোকসানে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এবং অনেকেই পরিবহন খরচই না ওঠার আশঙ্কায় ক্ষেতেই ফুলকপি নষ্ট করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গতবারের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম ফুলকপি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন এ অঞ্চলের সবজি চাষিরা।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলমান মৌসুমে কুড়িগ্রাম জেলার নয়টি উপজেলার ৭ হাজার হেক্টর জমিতে শাক-সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে শাক-সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।

উপজেলার পাঙ্গা মীরের বাড়ি এলাকার ফুলকপি চাষি জাহেরুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে ৬০ শতক জমিতে আগাম ফুলকপির আবাদ শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২০ হাজার টাকা। আরও ১০ হাজার টাকা ব্যয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলন এখন পর্যন্ত ভালো। আগাম ফুলকপি চাষ করে যদি এবার বাজারদর ভালো পাই, তাহলে গত মৌসুমের লোকসান পুষিয়ে লাভবান হওয়ার আশা আছে। প্রতি কেজি কমপক্ষে ২০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারলেই লাভবান হবো।

তিনি বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই ফুলকপি চাষ করছি। অন্যান্য সবজির চেয়ে ফুলকপি চাষে খরচ কম লাভ বেশি। গত মৌসুমে লাভের আশায় ধারদেনা করে ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৭০ শতক জমিতে ফুলকপি চাষ করেছিলাম। ফলনও ভালো হয়েছিল। কিন্তু ফলন দেরিতে ওঠায় বাজারদর নিম্নমুখী থাকায় খরচটাই তুলতে পারিনি। এবার আগাম ফুলকপি চাষ করেছি।’

একই উপজেলার ঝাড়খোলা গ্রামের ফুলকপি চাষি রানা মিয়া জানান, আমি গত মৌসুমে ঋণ করে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৫০ শতক জমিতে ফুলকপি চাষ করেছিলাম। কিন্তু বাজারদর এতোটাই খারাপ ছিল যে ফুলকপি বাজারে নিয়ে গেলেও পরিবহন খরচই তুলতে পারিনি। এতে প্রায় এক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এবার ২৫ শতক জমিতে আগাম ফুলকপি লাগিয়েছি। ফলনও ভালো হয়েছে। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে বাজারদর ভালো পাই তাহলে এবার লাভের আশা আছে।

একই উপজেলার ঝাড়খোলা গ্রামের আরেক কৃষক আশরাফুল ইসলাম জানান, গত বছর ১০০ শতক জমিতে ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে ফুলকপির আবাদ করেছিলাম। তবে বাজারদর খারাপ থাকায় ১০০ শতক জমির ফুলকপি বিক্রি করেছি মাত্র ৪০ হাজার টাকায়। এতে লাভ তো দূরের কথা উল্টো ২০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। এবার আগাম ৩৫-৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৭০ শতক জমিতে ফুলকপির আবাদ করেছি। যদি এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকে, ফলন ভালো হয় ও বাজারদর ভালো পাই তাহলে লাভবান হতে পারবো।

রাজারহাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফয়সাল আরাফাত বিন সিদ্দিক জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৭০০ হেক্টর জমিতে শাক-সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে। তার মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩৯২ হেক্টর জমিতে শাক-সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত উপজেলার ৬০ হেক্টর জমিতে ফুলকপির চাষ হয়েছে আরও কিছু জমিতে ফুলকপির চাষ হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি কুড়িগ্রামের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুরুল হক বলেন, কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বেশকিছু এলাকার জমি উঁচু ও উর্বর হওয়ায় সেখানে ফুলকপি ছাড়াও অন্যান্য সবজির আগাম চাষ হয়। তবে আগাম ফুলকপি চাষিরা বাজারদর ভালো পাওয়ায় বেশি লাভবান হন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here