• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশ পরিণত হলো মিলন মেলায়

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৯ অক্টোবর ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

নীলফামারীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ। জেল পরিষদের আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে জানো’ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে শনিবার বিকালে অনুষ্ঠিত হয় ওই সমাবেশ। এ আয়োজনকে কেন্দ্র করে জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে সাজানো হয় রঙ্গীন সাজে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাঁদের সন্তান এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সহস্রাধিক মানুষের আগমনে নবীন-প্রবীনের মিলন মেলায় পরিণত হয় অনুষ্ঠান স্থল।

বেলা দেড়টা থেকে দূর-দূরান্ত থেকে অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করেন বিভিন্ন প্রান্তের বীর যোদ্ধারা। তাঁদের অনেকের সঙ্গে ছিলেন সন্তানসহ নতুন প্রজম্মের মানুষ। বেলা তিনটার দিকে কানায় কানায় পূর্ণ হয় শহীদমিনার চত্বর। তাঁরা সকলে অনুষ্ঠানস্থলে এসে আরেকবার মুক্তিযুদ্ধের জাগ্রত চেতনাকে জানান দিলেন নতুন প্রজম্মের কাছে।

বীর যোদ্ধা বানেশ্বর বর্মন (৭৫) অনুষ্ঠানে এসেছিলেন জেলা শহরের ২২ কিলোমিটার দূরের কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে। অনুষ্ঠানস্থলে এসে অভিভূত তিনি। এ সময় তাঁর অভিব্যক্তিতে বলেন, ‘অনেকদিন পর সহযোদ্ধাদের সঙ্গে একসঙ্গে হলাম। একে অপরের দেখা হলো, কথা হলো মনের ভাব বিনিময় হলো।’ অনুষ্ঠানে তিনি তাঁর ছেলে এবং নাতিকে নিয়ে এসেছেন বলে জানান।

জেলা সদরের বীর মুক্তিযোদ্ধা অমূল্য রতন রায় (৭৪) বলেন, ‘এখানে এসে যুদ্ধকালীন সময়ের সহযোদ্ধাদের দেখায় যুদ্ধের দিনগুলোর স্মৃতিচারণ হলো। কে মেন আছেন সেটিও জানা হলো।’

শুধু বীর যোদ্ধা বানেশ্বর বর্মন এবং অমূল্য রতনই নন, তাঁদের ন্যায় বীর মুক্তিযোদ্ধা রমজান আলীও (৭৬) এসেছেলেন তাঁর ছেলে এবং নাতিকে নিয়ে। তাঁদের ন্যায় মিলন মেলায় অংশ নিলের সহস্রাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা।

নতুন প্রজম্মের মেহেদি সরকার। এইচএসসি পড়ুয়া ওই শিক্ষার্থী জেলার সৈয়দপুর উপজেলা থেকে অনুষ্ঠানে এসেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা দাদু একরামূল হকের হাত ধরে। এ সময় মেহেদী বলেন, ‘যাঁদের অবদানে আজ আমরা একটি স্বাধীন দেশে বাস করছি, তাদের এমন মিলন মেলায় এসে আমার খুব ভালো লাগছে। অনুষ্ঠানে তাঁদের মুখ থেকে মুক্তি যুদ্ধের গল্প শুনলাম। এতে নিজেকে ধন্য মনে করছি।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ওই কর্মসূচি গ্রহণ করে জেলা পরিষদ। বেলা ৫টার দিকে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে জানো’ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন ছাড়াও ‘অন্বেষণ’ নামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিুর রহমানের সংগ্রামী জীবন ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত সাধারণ জ্ঞানভিত্তিক একটি প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী।

এ সময় নীলফামারী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য সামসুদ্দোহা, এন কে আলম চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ এস এম মোক্তারুজ্জামান, ১১ নম্বর সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী সরকার বীর বিক্রম, একই সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মাহবুব এলাহী রঞ্জু বীর প্রতীক, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ সাদরুজ্জামান হেলাল বীর প্রতীক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান খান বীর প্রতীক, ৮ নম্বর সেক্টরের ইঞ্জিনিয়ার গোলাম আজাদ বীর প্রতীক, ১০ নম্বর সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান কবীর বীর প্রতীক, ২ নম্বর সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আনোয়ার হোসেন বীর প্রতীক, একই সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান বীর প্রতীক, ৬ নম্বর সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন আজিজুল হক বীর প্রতীক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৪টি জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ অংশগ্রহণ করেন।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘নীলফামারী জেলা পরিষদের আয়োজনে গোটা মুজিববর্ষব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ জেলার পাঁচ শতাধিক বিদ্যালয় ও কলেজে নির্দিষ্ট সময়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মত বিনিময় করবেন। এ সময় তারা জাতির পিতার সংগ্রামী জীবন এবং মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনাবেন এবং ‘অন্বেষণ’ পুস্তিকাটি বিনামুল্যে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করবেন।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানাতে এবং সাধারণ মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাগ্রত করার প্রয়াসে এমন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, সেই তাগিদে এ কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।’

Place your advertisement here
Place your advertisement here