• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

শিক্ষায় নিবেদিত প্রাণ শিক্ষক নুরুল আলম

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৬ অক্টোবর ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

মো. নূরুল আলম, জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক। এই মানুষটির জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে শিক্ষকতা করে। জীবনের শেষ বেলায় এসে এখনও শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছেন তিনি, যার স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা।

১৯৭৩ সালে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে শিবরাম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন নূরুল আলম। পরে ১৯৮০ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণকালে বিদালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ছিল মাত্র ১২৫ জন। ক্ষুদ্র পরিসরে জড়াজীর্ণ গ্রহ, অপ্রতুল আসবাবপত্র, শিক্ষা বিবর্জিত পরিবেশ তাকে হতচকিত করে। তার নিবেদিত প্রাণ নিঃস্বার্থ কর্মচাঞ্চল্যে অল্প দিনেই বিদ্যালয়ের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হতে শুরু করে।

শিক্ষক বিভাগীয় এবং অনান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সহমর্মিতা এবং পরামর্শে নূরুল আলম স্যার দিনে দিনে শিক্ষার গুণগত মান এবং পরিবেশগত উন্নতি করতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে বিদ্যালয়টি সারা বাংলাদেশের রোল মডেলে পরিণত হয়।

বিভিন্ন পর্যায়ে সুধীজন, কর্মকর্তা, ২৭ দেশের পর্যবেক্ষক, সাংবাদিক, মতবিনিময় পরিদর্শক দল ও ইউনিসেফের কর্মকর্তারা বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসে অভিভূত হন। তারা এই বিদ্যালয়কে অনুকরণীয়, অনুস্মরণীয়, আশ্বর্যজনক ও ফুটন্ত ফুল বলে উল্লেখ করেন।

নূরুল আলমের কর্মপ্রেরণার ফল হিসেবে বিদ্যালয়টি বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে। যেমন: প্রধান শিক্ষকের জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন, বিদ্যালয়ের জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন, ম্যানেজিং কমিটির জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন, শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ উপস্থিতি বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন। এছাড়াও রচনা প্রতিযোগিতা, একক অভিনয়, হাতের লেখাসহ বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয়টির পাশাপাশি নূরুল আলম নিজেও একাধিকবার জেলা, উপজেলা ও জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্টপতির কাছ থেকেও তিনি পুরস্কার লাভ করেন। পরে শিবরাম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অবসর নেওয়ার পর ২০১৩ গাইবান্ধার মধ্য ধানঘড়ায় আমার বাংলা বিদ্যাপিঠ নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ইতোমধ্যে এই প্রতিষ্ঠানটিও তার ছোঁয়ায় সুনাম ও সুখ্যাতির সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে।

আমার বাংলা বিদ্যাপীঠের সহকারী প্রধান শিক্ষক মাসুদ কবির তুষার বলেন, নুরুল আলম স্যারের গুণের শেষ নেই। তিনি অসংখ্যগুণের অধিকারী। তিনি একাধারে কবি, সাহিত্যিক ও নাট্যব্যক্তিত্ব। তার প্রতিষ্ঠান এবং তিনি নিজেই একাধিক জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনসহ গণমাধমের কাছেও পেয়েছেন সম্মাননা।

এই প্রতিবেদকের সঙ্গে একান্ত আলাপ হয় নুরুল আলম স্যারের। তিনি বলেন, প্রতিবছর শিক্ষক দিবস পালন করা হয়ে থাকে। শিক্ষক দিবসটা হচ্ছে শিক্ষক জাতীকে অনুধাবন করার একটা দিবস। শিক্ষকদের দাবি, প্রয়োজন, জাতিকে কিভাবে আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলবে, শিক্ষকরা তাদের দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবেন- এগুলোই শিক্ষক দিবসের প্রতিপাদ্য।

এই শিক্ষক বলেন, ‘আমার বাবাও ছিলেন শিক্ষক। তার অনুপ্রেরণায় আমি শিক্ষকতা পেশায় আসি। আমি মনে করি শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণ করে তাদের অনুভূতি উপলব্ধি করে তাদের মতো করে শেখানোটাই মূলত শিক্ষকতা। এই পদ্ধতি অবলম্বণ করে আমি আমার জীবনে সফলতা পেয়েছি এবং ছাত্রছাত্রীরা সবসময় ভালো ফলাফল করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এ কারণে শিবরাম স্কুলকে আমি একটি মডেল স্কুলে পরিণত করতে পেরেছিলাম। এর ফল হিসেবে অসংখ্য পুরস্কার আমি পেয়েছি। সবশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআর থেকে আমি পুরস্কার পেয়েছিলাম।

অবসরের পর আমি আমার বাংলা বিদ্যাপীঠ প্রতিষ্ঠা করেছি। এই বিদ্যালয়ের মাধ্যমে বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীদের আমি শিক্ষা দান করে আসছি। সর্বোপরি আজকে (৫ অক্টোবর) শিক্ষক দিবস। সব শিক্ষকের কাছে অনুরোধ, আসুন আমরা নিবেদিত প্রাণে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করি। মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী তৈরি করে জাতিকে উপহার দেই।

Place your advertisement here
Place your advertisement here