• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

আমি সন্তানদের একটু আদর করতে চাই

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

প্রায় চার বছর আগে শরিফা বেগমের হাতের একটি আঙুলে হঠাৎ দেখা দেয় ফোঁড়া। চিকিৎসার জন্য যান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার অস্ত্রোপচার করেন। কিন্তু কিছুদিন পর দুই হাতের আঙুলগুলো ছোট হতে শুরু করে।

এ ছাড়া তার শরীর কালো বর্ণ ও হাত-পা কাঠের মতো শক্ত হতে শুরু করে। এখন দুই হাতের বেশ কিছু আঙুল টুকরো টুকরো হয়ে খসে পড়ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা বলছেন, তিনি ‘সিস্টেমিক স্ক্লেরোসিস' রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তার চিকিৎসা করাতে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউম্যাটোলোজি বিভাগে চিকিৎসা নিতে হবে। এ জন্য তাকে ব্যয়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা নিতে হবে। এতে খরচ হতে পারে প্রায় তিন লাখ টাকা।

তিন সন্তানের জননী শরিফা বেগম (৩৫) লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা হলের বানীনগর গ্রামের শামছুল হক দুলুর স্ত্রী। তার স্বামী শামছুল হক একজন ভ্যানচালক।

জানা গেছে, প্রথমে একটি আঙুলে ফোঁড়া থেকে সৃষ্টি হয় ঘা। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে আঙুল কেটে ফেলেন। কিছুদিন যেতেই আবারও দুই হাতে দেখা দেয় ফোঁড়া। উপায় না পেয়ে আবারও চিকিৎসকের কাছে যান। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায়, এটি ‘সিস্টেমিক স্ক্লেরোসিস' রোগ। এই রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল। কিন্তু ভ্যানচালক স্বামীর পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়।

শরিফা বেগম বলেন, আমার হাত-পায়ে ঘা হয়েছে। ফলে প্রতিবেশীরা আমার কাছে আসতে চায় না। সন্তানদের ঠিকভাবে আদর করতে পারি না। কারণ, যদি এ রোগ সন্তানদের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে, সে ভয়ে। আমি আমার সন্তানদের আদর করতে চাই। আমার স্বামী ভ্যান চালান। তার পক্ষে চার লাখ টাকা জোগানো সম্ভব নয়। তাই সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা ছাড়া আমি সুস্থ হতে পারব না।

প্রতিবেশী শহিন মিয়া জানান, শরিফা বেগমকে মাঝেমধ্যে ওষুধ এনে খাওয়াতেন তার স্বামী। কিতববু টুকরো টুকরো হয়ে মাংস খসে পড়া বন্ধ হতো না। দরিদ্র হওয়ার পরও বহু টাকা শেষ করেছেন তারা। সমাজে অনেক মানুষ আছেন। যারা অসহায় এই পরিবারকে সাহায্য করলে তারা একটু শান্তি পেত।

শরিফা বেগমের স্বামী শামছুল হক দুলু বলেন, স্ত্রী আগে স্বাস্থ্যবান ছিল। এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তার চেহারার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। চোখমুখ ফুলে গেছে, হাত-পা কালো হয়েছে। পরে তাকে রংপুরে নিয়ে যাই। সেখানকার চিকিৎসকরা বলেছেন, এটি ব্লাড ক্যানসার হতে পারে। তাকে দ্রুত চিকিৎসা না করাতে পারলে নাকি বাঁচানো যাবে না। একজন ভ্যানচালক হয়ে প্রায় তিন লাখ টাকা কোথায় পাব?

তিনি আরও বলেন, প্রায় চার বছর থেকে তার চিকিৎসা করছি। ‘অজ্ঞাত’ এই রোগের চিকিৎসা ও ওষুধ কিনতে গিয়ে নিজের পুঁজিটুকুও শেষ হয়ে গেছে। এখন এলাকার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে কোনো রকম দিন চলতে হচ্ছে। আমার এলাকায় সমাজকল্যাণমন্ত্রী রয়েছেন। তিনি যদি কিছু সাহায্য করেন, তাহলে বড় উপকার হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার রায় বলেন, ওই নারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। ওই সময় তাকে বলা হয়েছিল যে তার ‘সিস্টেমিক স্ক্লেরোসিস' রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই দ্রুত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে রিউম্যাটোলোজি বিভাগে চিকিৎসা নিতে হবে।

তুষভানন্ডার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর ইসলাম বলেন, শুনেছি তার এই রোগের চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। তাই সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও সমাজসেবা অফিসে আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছি। এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও সাহায্য করব। পাশাপাশি সবাই এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন চেয়ারম্যান।

শরীফা বেগমের সঙ্গে বিষয়টি জানতে তার স্বামী শামছুল হক দুলুর ০১৭৯৭৭০৩১৯৮ নম্বরে যোগাযোগ করে জানা যাবে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here