• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook

মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই চলছে বিএনপি

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে বিএনপি। দলের অঙ্গসংগঠন ৯টি আর সহযোগী সংগঠন দুটিরও একই অবস্থা। ফলে ছাত্রদলের সাবেক ৫শ’র বেশি নেতা এখন পদহীন পরিচয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন।

যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় তারা কোথাও জায়গা পাচ্ছেন না। যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলেরও বেশ কিছু সাবেক নেতা এখন পদহীন। অঙ্গসংগঠনের কমিটি-জট না কাটায় বিএনপির হাইকমান্ডও তাদের বিষয়ে কোনো ফয়সালা দিতে পারছেন না। 

পদবঞ্চিত সাবেক ছাত্র নেতারা বলছেন, নিজেদের নিজের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখতেই অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতারা কমিটি নিয়ে ভাবছেন না। এদিকে কাউন্সিল করে ছয় মাসেও কমিটি দিতে পারেনি কৃষক দল।

যুবদল: ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি মধ্যরাতে সাইফুল আলম নীরবকে সভাপতি ও সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে সাধারণ সম্পাদক করে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সুপার ফাইভ কমিটি ঘোষণা করা হয়। 

মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় এক মাস পর ১১৪ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে বিগত দিনের সাবেক ছাত্রদল নেতাদের পদায়ন সম্ভব হয়নি। পূর্ণাঙ্গ কমিটি কবে ঘোষণা করা হবে, তা কেউ জানে না। 

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের কমিটিও রয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণের তালিকায়। সুপার ফাইভ কমিটি দিয়েই তাদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে যুবদল সূত্র মতে, সারাদেশে সাংগঠনিক ৮২ জেলার প্রায় সবই কমিটি হয়েছে। পৌর, থানা ও উপজেলা পর্যায়েও ৯৩৫টি ইউনিটের মধ্যে কমিটি হয়েছে ৭০০টির। 

ছাত্রদল: ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কাউন্সিলে ফজলুর রহমান খোকন সভাপতি ও ইকবাল হোসেন শ্যামল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিন মাস পর ২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর ৬০ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

সেপ্টেম্বরে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হলে নতুন কমিটি হবে, নাকি বর্তমান কমিটির মাধ্যমেই ছাত্রদল পরিচালিত হবে, তা স্পষ্ট নয়। তবে বিএনপির হাইকমান্ডের কাছে বর্তমান নেতৃত্বের বাইরেও বিকল্প ভাবনা আছে বলে জানা গেছে।

ছাত্রদল সূত্র জানায়, বর্তমান নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে না পারলেও প্রথমবারের মতো সারাদেশে পৌর, উপজেলা ও কলেজ শাখায় এক হাজার ৪৩১টির মতো কমিটি দেওয়া হয়েছে। সমমর্যাদার মাত্র দুই শতাধিক কমিটি গঠন বাকি আছে। তবে ১৪৩টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে মাত্র ঢাকা জেলা উত্তর, ঢাকা জেলা দক্ষিণ, খুলনা মহানগর, চট্টগ্রাম মহানগর, সুনামগঞ্জ, নরসিংদী ও টাঙ্গাইল জেলার আহ্বায়ক কমিটি দিতে পেরেছে ছাত্রদলের বর্তমান নেতৃত্ব। এছাড়া ৮টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ৯টি মেডিকেল কলেজ শাখার কমিটিও হয়েছে বলে জানা গেছে। 

এদিকে পদপ্রত্যাশী নেতা-কর্মীরা সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। দলীয় কার্যালয়ের নিচে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সুপার ফাইভ ১ জানুয়ারি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পূর্ণাঙ্গকরণের আশ্বাস দিলেও তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। 

স্বেচ্ছাসেবক দল: ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঘোষিত কমিটিতে সংগঠনের সভাপতি করা হয় প্রয়াত শফিউল বারী বাবুকে। সাধারণ সম্পাদক হন আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল। মেয়াদ শেষের এক বছর পর গত বছর ১৯ সেপ্টেম্বর সুপার ফাইভ কমিটিকে ১৪৯ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে পরিণত করে আংশিক কমিটি করা হয়েছে। এরপর আরেক দফায় ১০ জনকে সদস্য ও কিছু উপদেষ্টা ঘোষণা করা হয়। সব মিলিয়ে কমিটি এখন ১৭২ সদস্যবিশিষ্ট। পূর্ণাঙ্গ কমিটি কবে হবে তা কেউ বলতে পারছেন না। তবে সারা দেশে সাংগঠনিক ৮১ টি জেলার প্রায় সবটিরই কমিটি সম্পন্ন হয়েছে সংগঠনটির। এ ছাড়া ছয় শতাধিক জেলা ও থানার কমিটি হয়েছে। 

শ্রমিক দল: ২০১৪ সালের ১৯ ও ২০ এপ্রিল জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের জাতীয় কাউন্সিলে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। দুই বছরের কমিটি পা রেখেছে সাত বছরে। একাধিকবার সময় দিয়েও কাউন্সিল করতে পারেনি শ্রমিক দল। 

কৃষক দল: দীর্ঘ ২২ বছর পর জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠানের চার মাস পার হলেও কমিটি ঘোষণা হয়নি। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি কৃষক দলের কমিটি ভেঙে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদুকে আহ্বায়ক এবং কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনকে সদস্য সচিব করে ১৫৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ১২ মার্চ অনুষ্ঠিত কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু আজো কমিটি ঘোষণা হয়নি। 

মহিলা দল: ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর মহিলা দলের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ এ কমিটিকে গত বছর ৪ এপ্রিল পূর্ণাঙ্গ করা হয়। কিন্তু একাধিক গ্রুপে বিভক্ত এ সংগঠনকে এড়িয়ে চলছেন খোদ মহিলা দলের নেতাকর্মীরা। এ সংগঠনের সাধারণ নেতাকর্মীরা এখন নারী ও শিশু অধিকার ফোরামসহ অন্যান্য সংগঠনে জড়িয়ে পড়ছেন। 

মৎস্যজীবী দল: ২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ১০ বছরের মেয়াদোত্তীর্ণ মৎস্যজীবী দলের কমিটিকে ভেঙে সংগঠনের সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মাহতাবকে আহ্বায়ক ও আবদুর রহিমকে সদস্য সচিব করা হয়। দেড় বছরের বেশি সময় পেরোলেও নতুন কমিটি গঠনের কোনো উদ্যোগ নেই।

জাসাস: ২০১৭ সালের ১৯ জানুয়ারির গঠিত জাসাসের আংশিক কমিটিকে গত বছর ২৩ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ করা হয়। কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলয়ের নেতা-কর্মীদের পাল্লা ভারী করার প্রতিযোগিতায় বেশির ভাগ নতুন মুখ নিয়ে আসা হয়েছে, যারা কোনো দিন এ সংগঠনে সম্পৃক্তই ছিলেন না। এমনকী পদ-পদবি পাওয়ার পর তাদের দলের কর্মকান্ডে দেখা যায়নি। সংগঠনের নেতা-কর্মীরা নতুন কমিটির দাবিতে তারেক রহমানের কাছে লিখিত দাবি জানিয়েছেন।

ওলামা দল: ১৪ বছরের মেয়াদোত্তীর্ণ ওলামা দলের কমিটি ভেঙে ২০১৯ সালের ৫ এপ্রিল সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হককে আহ্বায়ক এবং মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদারকে সদস্য সচিব করে ১৭১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তবে মেয়াদ শেষে এখন পর্যন্ত কাউন্সিলের দিনক্ষণ নির্ধারণ করতে পারেননি এ সংগঠনের নেতারা।

Place your advertisement here
Place your advertisement here