• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

মৎস্য আড়তে কোটি টাকার মাছ বিক্রি

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

রংপুর নগরীর বাস টার্মিনালে অবস্থিত মৎস্য আড়তে প্রতিদিন কোটি টাকার মাছ বিক্রি হলেও ৩৩ বছরে এখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাদের নেই কোনো সুযোগ সুবিধা। ময়লা পানিতে ভরে থাকে পুরো আড়ত। পানি মাড়িয়ে চলছে মাছের কেনাবেচা। আড়তদারদের মাছ বিক্রির নেই কোনো ঘর। রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে মাছ বিক্রি করতে হয়। 

আড়তের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের নেই কোনো ব্যবস্থা। মাছের  ট্রাক, ভ্যান, রিকশা ও অটোরিকশার জন্য রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। নেই কোনো টয়লেট ও খাওয়ার পানির ব্যবস্থা। মৎস্য আড়ত সমিতির দাবি, ইজারা প্রদান করা হলেও উন্নয়ন হচ্ছে না মাছের আড়তের। অন্যদিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের দাবি, আড়ত সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও আড়ত সমিতির সিন্ডিকেট সংস্কারে বাধা দিচ্ছে।

জানা গেছে, ১৯৯০ সালে রংপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের পাশে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের কাছে রংপুর সিটি করপোরেশনের ৫৪ শতক এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে গড়ে উঠে এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মৎস্য আড়তটি। 

এখানে প্রতিদিন চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, বগুড়া, নাটোরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাকে করে দেশি ও সামদ্রিক মাছ আসে। এখান থেকে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার মাছ ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যান। এ আড়তে ৪০ থেকে ৪৫ জন আড়তদার প্রতিদিন দেশীয় কার্পজাতীয় মাছ বিক্রি করেন। সামুদ্রিক মাছের আড়ত রয়েছে ২০টির অধিক। প্রতি আড়তে ব্যবসা হয় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার। আর দেশি মাছের আড়তদাররা প্রত্যেকে প্রতিদিন ৭০ হাজার থেকে এক লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেন। এই আড়ত থেকে ব্যবসায়ীরা পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রংপুর জেলার পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা মাছ কিনে নিয়ে যান।
 
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে মাছের বেচাকেনা। আড়তে প্রতিদিন কোটি টাকার মাছের ব্যবসা হলেও এখানে উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগে নি।

মাছের ব্যাপারী সাদ্দাম হোসেন জানান, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে মাছ আসে। কিন্তু এখানে মাছের ব্যবসা করার মতো পরিবেশ নেই। মাছ বিক্রির জন্য ঘর নেই, আড়তে চলাচলের রাস্তা নেই, পানি সরে যাওয়ার জন্য ড্রেন নেই, এমনকি টয়লেটও নেই। পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় ময়লা পানির মাঝে দাঁড়িয়ে মাছ বিক্রি করতে হয়।
 
আড়তের কর্মচারী রাকিবুল ইসলাম জানান, আড়তের সামনে যখন মাছের ট্রাক আসে অথবা রিকশা থেকে মাছ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন যানজটের কারণে মহাসড়কে গাড়ি চলাচলের সমস্যা হয়। এ ছাড়া মাছ বিক্রির ঘর না থাকায় রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে আমাদের অনেক কষ্ট পোহাতে হয়। ভিড় ও কাদা পানি মাড়িয়ে পুরুষ  ক্রেতারা আসতে পারলেও নারীরা আড়তে আসতে পারেন না। আড়তে মাছ হিমায়িত করে রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। ঘর ভাড়া করে মাছ সংরক্ষণ করতে হয়। আড়তে জায়গা কম হওয়ায় ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে ব্যবসা করা আড়তদারদের ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা করে ভাড়া দিতে হয়। 

এখানকার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, জাইকার অর্থায়নে পার্শ্ববর্তী কৃষি বিপণনের একটি মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে মাছের আড়তটি স্থানান্তর করার চেষ্টা করেছিল সিটি করপোরেশন। কিন্তু আড়তের শীর্ষ নেতারা তাদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে সেটিতে আগ্রহ দেখাননি। 

জেলা মৎস্য আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান মিজু বলেন, সিটি করপোরেশনকে ইজারা বাবদ প্রতি ৬ মাসের জন্য ১২ লাখ টাকা দেয়া হয়। প্রতিদিন এক থেকে দেড় কোটি টাকার মাছ বিক্রি হলেও এই মৎস্য আড়তটি দীর্ঘদিন থেকে উন্নয়ন বঞ্চিত। 

রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, দীর্ঘদিন ধরে রংপুর মৎস্য আড়তের বেহাল অবস্থা। সেখানকার আড়তদার ও ক্রেতারা কাদা পানির মাঝে অনেক কষ্ট করে মাছ কেনাবেচা করেন। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আড়তটি সংস্কারের জন্য এর আগে আড়ত সমিতিকে তিন মাসের জন্য অন্যত্র আড়ত স্থানান্তর করতে বলা হলেও সমিতি সেটি আমলে নেয়নি। ফলে মৎস্য আড়ত সমিতির কারণে সেখানে দুর্ভোগ বেড়েছে। তবে এ থেকে উত্তরণে মৎস্য আড়তের উন্নয়নে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করছি, সেটির কাজ দ্রুত শুরু করা সম্ভব হবে। 

Place your advertisement here
Place your advertisement here