• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

ঘূর্ণিঝড় ‘মোচা’ সরাসরি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১ মে ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘মোচা’ সৃষ্টি এবং আগামী ১৩ থেকে ১৬ মে’র মধ্যে সরাসরি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত করার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। বিষয়টি জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল পর্যালোচনা করে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে ৮ থেকে ৯ মে এর মধ্যে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে আন্দামান ও নিকোবার দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়ে ১০ মে’র মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়া এবং ১১ মে পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করছে। ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ সম্ভাবনার কথা নির্দেশ করছে।’

‘আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে ঘূর্ণিঝড় মোচা ১৪ মে মধ্যরাতের পরে থেকে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে সরাসরি স্থল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা নির্দেশ করছে। আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল গ্লোবাল ফোরকাস্ট সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে, স্থলভাগে আঘাত করার সময় ঘূর্ণিঝড়টি খুবই শক্তিশালী হিসেবে আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে ঘূর্ণিঝড় মোচা স্থলভাগে আঘাতের সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতি থাকতে পারে ১৪০ থেকে ১৭০ কিলোমিটার।’

ঘূর্ণিঝড় মোচা যে স্থানে (দক্ষিণ মধ্য বঙ্গোপসাগর) উৎপত্তি হওয়ার কথা নির্দেশ করছে এবং যে পথে (উত্তর-পূর্ব দিকে) অগ্রসর হওয়ার কথা নির্দেশ করছে সেখানে সবচেয়ে বড় হুমকি হবে জলোচ্ছ্বাস। ১৪ মে (চাঁদের ৮১ শতাংশ অন্ধকার থাকবে) সন্ধ্যার পর থেকে যদি ঘূর্ণিঝড়টি স্থালভাগে আঘাত হানা শুরু করে তবে কমপক্ষে ১০ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের চর ও উপকূলীয় এলাকাগুলো। ঘূর্ণিঝড়টির সৃষ্টি এবং স্থালভাগে আঘাত করার সময় যদি তিন দিন পিছিয়ে ১৭/১৮ তারিখ হয় তা হলে ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের চর ও উপকূলীয় এলাকাগুলো। কারণ, ১৮ মে অমাবস্যার রাত।

ঘূর্ণিঝড় মোচা মোকাবিলায় করণীয় যা

ঘূর্ণিঝড় মোচা মোকাবিলায় করণীয় বিষয়েও কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন এই গবেষক। তিনি বলেন- 

১) উপকূলীয় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলো আগামীকাল থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শুরু করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

২) দেশের কৃষক ভাইদের সব পাকা ধান মে মাসের ১২ তারিখের মধ্যে কেটে গোলায় তোলার অনুরোধ জানাচ্ছি।

৩) উপকূলীয় এলাকার মৎসচাষিদের জলোচ্ছ্বাস থেকে মাছের ঘের রক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

৪) লবণ চাষিদের মে মাসের ১২ তারিখের মধ্যে সব লবণ তুলে ফেলার অনুরোধ জানাচ্ছি।

৫) জেলে ভাইদের অনুরোধ জানাচ্ছি ১০ তারিখের পরে নতুন করে সমুদ্রে মৎস্য আহরণে না যাওয়ার জন্য। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া চট্টগ্রাম বিভাগের জেলেরা যেন অবশ্যই ১১ মে’র মধ্যে ও খুলনা বিভাগের জেলেরা অবশ্যই ১২ মে’র মধ্যে উপকূলে ফিরে আসবেন। ১১ মে’র পরে যদি কোনো জেলে সমুদ্রে মাছ ধরতে যান তবে প্রাণ নিয়ে ফেরার সম্ভাবনা খুবই কম।

৬) বন্যা ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রতি বিনীত অনুরোধ উপকূলীয় সব বেড়িবাঁধের সব ত্রুটি কিংবা দুর্বল স্থানগুলো মে মাসের ১২ তারিখের আগেই মেরামত করার।  

শেষে তিনি লেখেন, আবারও মনে করিয়ে দিতে চাই পুরো এপ্রিল মাস উত্তর ও মধ্য বঙ্গোপসাগরে কোনো লঘুচাপ/নিম্নচাপ/ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়নি। ফলে ব্যাপক পরিমাণ শক্তি জমা হয়েছে বঙ্গোপসাগরের সমুদ্রের পানিতে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় মোচা খুবই শক্তিশালী হবে, এ বিষয়ে আমি হলফ করে বলতে পারি। মে মাসের ৩ তারিখের মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ এবং মে মাসের ৫ তারিখের মধ্যে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ নিশ্চিত হওয়া যাবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় মোচা ঠিক কোন শক্তিতে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে, আমার অভিজ্ঞতার আলোকে আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে এই ঘূর্ণিঝড় সরাসরি বাংলাদেশের উপকূল দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করতে যাচ্ছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here