• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

চারশো বছরের অবিচারের ইতিহাসে ‘রানওয়ে স্লেভ প্যাট্রল’

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারি ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

আমেরিকা  একটি চমৎকার দেশ। অন্যান্য দেশের মতো সেদেশেও অনেক দয়ালু মানুষের বসবাস। কিন্তু এখনো কিছু মানুষ রয়ে গেছেন যারা সেই দাসপ্রথার যুগের অপরাধী সব প্রথার বৃত্ত থেকে বের হতে পারেননি বলে মনে করেন অনেকে। আমেরিকার দাসপ্রথা। যে প্রথা পৃথিবীর ইতিহাসে এক ঘৃণ্য অধ্যায় যোগ করেছে।

সময়ে দাসদের সংখ্যা যখন বাড়তে শুরু করে তখন বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষ করে দক্ষিণে, দাসরা যাতে পালাতে না পারে অথবা শ্বেতাঙ্গ প্রভুদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ না করতে পারে তার জন্য রানওয়ে স্লেভ প্যাট্রল নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৈরি হওয়া শুরু হয়। শ্বেতাঙ্গ স্বেচ্ছাসেবীদের দিয়ে তৈরি এই ‘রানওয়ে স্লেভ প্যাট্রল’ই ছিল তখনকার পুলিশ বাহিনী।

বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘আমেরিকান সমাজের ঘৃণ্য সেই ইতিহাসের গহ্বর থেকে এখনো পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারেনি তেমন একটি প্রতিষ্ঠানের নাম করতে যদি বলা হয়, পুলিশের কথাই প্রথম আসবে। এই একবিংশ শতাব্দীতেও আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের অসময়ে মৃত্যুর অন্যতম কারণ পুলিশের নির্যাতন, গুলি। প্রাণঘাতী রোগসহ যতগুলো কারণে কৃষ্ণাঙ্গদের মৃত্যু হয় সেই তালিকার ছয় নম্বরে পুলিশ।’

বলেন যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষক অধ্যাপক কিশা ব্লেইন বলেছেন,  ১৮৬১ সালের একটি চিত্রে দেখা যাচ্ছে একটি দাস পরিবারকে নিলামে তোলা হয়েছে। আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের সাথে পুলিশের এই যে সম্পর্ক তা সেই দাসপ্রথার সময়ের সম্পর্কের মতই। সম্পর্কের মূল চরিত্র বদলেছে খুব সামান্যই। আমেরিকার দাসপ্রথার ইতিহাসের দিকে নজর দিলে বোঝা যায় কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের বিরুদ্ধে পুলিশের এই বৈরি মনোভাব এবং নির্যাতনের শুরুটা ঠিক কোথায়।

‘রানওয়ে স্লেভ প্যাট্রলে‘র জামানা সম্পর্কে ইউএসএ টুডে পত্রিকায় কলামিস্ট ওয়েনি ফিলিমন লিখেছেন, ‘(কৃষ্ণাঙ্গ দাসদের) লুকানোর কোনো জায়গা ছিলনা। সত্যিকারের কোনো নিরাপদ জায়গাই ছিলনা। তাদের জীবন কাটতো পুলিশের ভয়ে, তাদের প্রতিটি আচরণের ওপর পুলিশের কড়া নজর ছিল। রাস্তায়, বাড়িতে তাদের ওপর চড়াও হতো পুলিশ। এবং কোনো ধরণের সন্দেহ উদ্রেক হলে বা প্রতিবাদ করলেই মেরে ফেলা হতো।’

মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির অপরাধ বিজ্ঞানের অধ্যাপক জেনিফার কবিনাও মনে করেন এখন যা ঘটছে তার শুরু চারশো বছর আগে। অনেক মানুষ শুধু বর্তমানের ঘটনাপ্রবাহ দেখেন, বিবেচনা বিশ্লেষণ করেন, কিন্তু এখন যা ঘটছে তার মূলে রয়েছে ৪০০ বছরের পুরনো অবিচারের ইতিহাস।

১৮৬৫ সালে দাসপ্রথা বিলোপের পর, রানওয়ে স্লেভ প্যাট্রল বিলুপ্ত হয়, কিন্তু আফ্রিকান আমেরিকানদের ওপর নজরদারির সেই প্রথা থেমে যায়নি, বিশেষ করে দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে।

দাসপ্রথা বিলোপ হলেও সেসব রাজ্যে ‘ব্লাক কোড‘ নামে নানা আইন তৈরি হয় যার আওতায় কৃষ্ণাঙ্গদের জমির মালিকানা এবং চাকরির ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। তারপর ১৯ শতকের শেষ দিকে আসে ‘জিম ক্রো’ আইন যার ফলে শ্বেতাঙ্গদের এলাকায় কৃষ্ণাঙ্গদের বসবাস নিষিদ্ধ করা হয়।

ক্লু ক্লাক্স ক্লান (কেকেকে) নামে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদি দল তৈরি করে কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর হামলা, হত্যা শুরু হয়। সে সময় অনেক জায়গাতেই স্থানীয় পুলিশের অনেক সদস্য এবং সরকারি কর্মচারীদের অনেকে কেকেকের সদস্য ছিল। অধ্যাপক কিশা ব্লেইন বলছেন ১৯৬০ এর দশকের নাগরিক অধিকার আন্দোলন দমনেও বিশেষ করে দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে পুলিশের ভূমিকা ছিল ভয়াবহ।

নাগরিক অধিকার আন্দোলনে কালোরা ভোটের অধিকার পেয়েছিল ঠিকই, শ্বেতাঙ্গ এলাকায় সম্পত্তি কেনার অধিকার পেয়েছিল, কিন্তু তাদের ওপর পুলিশী নির্যাতনের মৌলিক কোনো সুরাহা হয়নি।

Place your advertisement here
Place your advertisement here