• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

অর্থনীতির চাকা আরও সচল করতে গতিশীল করা হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরকে

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

দেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড বলা হয় চট্টগ্রাম বন্দরকে। পণ্য আনা-নেওয়ার মাধ্যমে অর্থনীতির চাকা আরও সচল করতে গতিশীল করা হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরকে। এই বন্দরে বর্তমানে জোয়ারের সময় দিনে ৯ ঘণ্টা সাড়ে ৯ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারে। রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা জাহাজ ভেড়ানোর লক্ষ্যে বে-টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এর মধ্যদিয়ে নিজেদের সক্ষমতা অর্জনের কাজ এগিয়ে চলছে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার (৩১ মে) বে-টার্মিনাল নির্মাণে দুই বিদেশি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে বে-টার্মিনাল নির্মাণে আরও এক ধাপ অগ্রগতি হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের।

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বে-টার্মিনাল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বন্দরের গতিশীলতা অনেকাংশে বেড়ে যাবে, যা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বে-টার্মিনাল প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান অপারেশনাল এরিয়া প্রায় ৬ গুণ বৃদ্ধি পাবে।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান ‘ডিয়েন ইয়াং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড’ এবং ‘কুনওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনসালটিং কোম্পানি লিমিটেড’কে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। যাচাই-বাছাই শেষে গত ৭ এপ্রিল প্রতিষ্ঠান দুটিকে পরামর্শক হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়।

এর আগে পরামর্শক হিসেবে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করে দরপত্র জমা দেয়। সেখান থেকে এই দুটি চূড়ান্ত করা হয়। প্রতিষ্ঠান দুটি প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ নকশা প্রণয়ন, টার্মিনাল নির্মাণের দরপত্রের কাগজপত্র তৈরি এবং নির্মাণকাজের তদারকি করবে। প্রকল্পের এ কাজের জন্য এই দুই প্রতিষ্ঠানকে ১২৬ কোটি ৪৯ লাখ ৭৩ হাজার ৯৮৬ টাকা প্রদান করবে বন্দর কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে তাদের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, বে-টার্মিনাল প্রকল্পে তিনটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে একটি বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে করা হলেও অন্য দুটি টার্মিনাল পিপিপি (প্রাইভেট-পাবলিক-পার্টনারশিপ) ভিত্তিতে নির্মিত হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বে-টার্মিনাল নির্মাণ শেষ হলে নির্মিত টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৫টি জাহাজ ভিড়তে পারবে। যেখানে বন্দরের বিদ্যমান ফ্যাসিলিটিতে (সুযোগ-সুবিধা) জেনারেল কার্গো, সিসিটি ও এনসিটি মিলে ১৯টি জাহাজ ভিড়তে পারে।

বে-টার্মিনাল নির্মাণে এরই মধ্যে ভারতের আদানি পোর্ট, চীনের চায়না মার্চেন্টস স্পোর্টস হোল্ডিং কোম্পানি লিমিটেড, সিঙ্গাপুরভিত্তিক পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ড, ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালস, দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই গ্রুপ এবং ইন্টারন্যাশনাল পোর্ট ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

এ বিষয়ে বে-টার্মিনাল প্রকল্পে সম্পৃক্ত বন্দরের নির্বাহী প্রকৌশলী (জেটি) সোমবার (৩০ মে) সকালে জাগো নিউজকে বলেন, বে-টার্মিনাল প্রকল্পে কোরিয়ান দুই প্রতিষ্ঠানকে যৌথভাবে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ৩১ মে তাদের সঙ্গে চুক্তি হবে। চুক্তির আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দুটি প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন, টার্মিনাল নির্মাণের দরপত্রের কাগজপত্র তৈরি এবং নির্মাণকাজের তদারকি করবে। চুক্তির তিন-চার মাসের মধ্যে তারা পূর্ণাঙ্গ নকশা জমা দেবে। পরে নির্মাণকাজ তদারকিসহ আনুষঙ্গিক কাজ করবে। এ কাজের জন্য প্রতিষ্ঠান দুটিকে ১২৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা দেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বে-টার্মিনাল প্রকল্পে ৬৭ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির দখল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন গত বছরের অক্টোবরে চট্টগ্রাম বন্দরকে বুঝিয়ে দিয়েছে। আরও ৮০৩ একর জমি প্রতীকী মূল্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বর্তমানে বিদ্যমান বন্দর জেটি ও টার্মিনালে সাড়ে ৯ মিটার গভীর ও ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ জোয়ারের সময় ভিড়তে পারে। বে-টার্মিনালে তার চেয়েও বেশি গভীরতার এবং দৈর্ঘ্যের জাহাজ দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা বার্থিং (ভিড়তে) করতে পারবে। আশা করা হচ্ছে, বে-টার্মিনাল নির্মাণ হলে সেখানে ১২ থেকে ১৪ মিটার গভীরতা ও ২৮০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়তে পারবে। ২০২৫ সালের মধ্যে দেড় হাজার মিটার দৈর্ঘ্যের একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনালসহ ১ হাজার ২২৫ মিটার এবং ৮০০ মিটারের আরও দুটি কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের।

এ বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, বে-টার্মিনাল এবং কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাতারবাড়ি পোর্ট নির্মাণ সম্পন্ন হলে বন্দরের সক্ষমতা তিন-চারগুণ বেড়ে যাবে। বে-টার্মিনাল নিয়ে আগামীকাল (৩১ মে) কোরিয়ার দুটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হবে। মূলত এর মাধ্যমে বে-টার্মিনাল নির্মাণে আরও একধাপ এগিয়েছি আমরা। চুক্তির পর প্রকল্পে নকশা ও টেন্ডার ডকুমেন্ট তৈরি হলে টার্মিনাল নির্মাণের টেন্ডারসহ পরবর্তী কার্যক্রমগুলো নেওয়া হবে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here