• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

রাউজানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সূর্যমুখী ফুল চাষ

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সূর্যমুখী ফুল চাষ হচ্ছে। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় চাষাবাদে ঝুঁকছেন কৃষকরা। চলতি বছর ৩২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ‍দ্বিগুণ। এই ফুল থেকে প্রাপ্ত বীজ দিয়ে অন্তত ৩২ হাজার কেজি (৩২ টন) তেল উৎপাদন সম্ভব বলে মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তারা, যার বাজারমূল্য ১১ কোটি টাকা।

জানা গেছে, ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে রাউজান উপজেলা। উরকিরচর ইউনিয়ন ছাড়া সবকটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় সূর্যমুখীর চাষ হচ্ছে। তবে সাতটি ইউনিয়ন ডাবুয়া, হলদিয়া, পশ্চিম গুজরা, পূর্বগুজরা, চিকদাইর, রাউজান ও বিনাজুরি ইউনিয়নসহ পৌরসভায় এই ফুলের চাষ বেশি হচ্ছে।

কৃষকরা জানান, রাউজানে আলাদা মেশিন না থাকায় সরিষা ঘানিতেই সূর্যমুখী ফুলের বীজ ভেঙে তেল করা হচ্ছে। এই তেল প্রতি কেজি ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়। প্রতি হেক্টর জমিতে চাষাবাদ খরচ পড়ে ৭৫ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকা। বছরের নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে চাষাবাদ করা যায়। এপ্রিল মাস থেকে কাটার সময় শুরু হয়।

রাউজান পৌরসভার মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ বলেন, সূর্যমুখী ফুল চাষে রাউজানের মানুষের মাঝে গত কয়েক বছর ধরে ব্যাপক আগ্রহ বেড়েছে। বলা যায়, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় এই ফুল চাষ হচ্ছে। অনেক চাষির সঙ্গে আমার নিয়মিত কথা হয়। বিগত সময়ের চেয়ে এবার ফলনও বেশ ভালো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, উপজেলার দুই প্রান্তে দুটি তেল ভাঙার মেশিন বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কৃষকরা যাতে নিজ এলাকাতে তেল উৎপাদন করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

চিকদাই ইউনিয়নের চাষি মো. হানিফ বলেন, এবার ৪০ শতক জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। বিগত বছরের চেয়ে এবার ফলন ভালো হয়েছে। ফুল কাটা শুরু করেছি। একটি ফুল থেকে ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম পর্যন্ত বীজ হয়েছে। ৪০ শতক জমিতে চাষাবাদে খরচ পড়েছে ১০ হাজার টাকা। ফলন অনুযায়ী ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা উঠে আসবে বলে আশা করছি। এর মধ্যে তেল থেকে আসবে ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা। তেল ভাঙানোর পর যে বাতিল অংশ থাকে সেটা দিয়ে খৈল হয়, এগুলোও বিক্রি করা যায়। খৈল মাছ ও পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়।

তিনি আরও বলেন, গত বছর ৩২ শতক জমিতে চাষাবাদ করেছিলাম। ফলন ভালো হয়েছিল। গত বছরের চেয়ে এবার ফলন বেশি হয়েছে। তবে রাউজানে তেল তৈরির মেশিন না থাকায় এখন পর্যন্ত চাষিদের কিছুটা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কৃষি বিভাগ এ বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নিলে রাউজানে সূর্যমুখী ফুল চাষ বাড়বে।

রাউজান পাহাড়তলী শেখপাড়া এলাকার চাষি মহসীন জানান, আমি এবারই প্রথম চাষ শুরু করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে বিনামূল্যে বীজ পাওয়া গেছে। কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কিছুটা ধারণা নিয়ে এ ফুলের চাষাবাদ শুরু করি। খরচ অনুযায়ী কয়েকগুণ বেশি ফলন পাবো বলে আশা করছি।

পাহাড়তলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিন জানান, চলতি বছর থেকে এই ইউনিয়নে ৪-৫টি স্থানে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে মহামুনী, ঊণসত্তরপাড়া ও খৈয়াখালীসহ কয়েকটি গ্রামে এ ফুলের চাষাবাদ হচ্ছে। স্বল্প খরচে সূর্যমুখী চাষাবাদ করা যায়। লাভ বেশি হওয়ায় স্থানীয়দের চাষের আগ্রহ বাড়ছে।

রাউজান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন জানান, ২০২১ সালে উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ হয়। এবার ৩২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে তিন টন করে বীজ পাওয়া যাবে। ৩২ হেক্টর জমিতে বীজ উৎপাদন করা যাবে ৯৬ টন। প্রতি তিন কেজি বীজ থেকে এক কেজি তেল উৎপাদন করা যায়। আর ৯৬ হাজার কেজি (৯৬ টন) বীজের তেল পাওয়া যায় ৩২ হাজার কেজি (৩২ টন)। প্রতিকেজি সূর্যমুখী তেলেল দাম ৩৫০ টাকা। সেই হিসাবে ৩২ হাজার কেজি তেলের বাজার মূল্য ১১ কোটি দুই লাখ টাকা।

তিনি জানান, এবার রাউজানে হাইচান-৩৩ ও বারি সূর্যমুখী-১ সহ উন্নত জাতের চারা রোপণ করা হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো। চাষের সঙ্গে অন্তত ২০০ জন কৃষক জড়িত। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কৃষকদের কৃষি বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হয়।

Place your advertisement here
Place your advertisement here