• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

৩৩৩ নম্বরে কল করে খাবার পেয়েছে ১৬ হাজারের বেশি পরিবার

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

নোয়াখালীর কবিরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর আলীপুর এলাকার বাসিন্দা নুরুল আমিন পেশায় একজন নির্মাণশ্রমিক। করোনা মহামারির কারণে কাজকর্ম অনেকটাই বন্ধ। আয়-রোজগার নেই বললেই চলে। এমন অবস্থায় ঘরে চার মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে কষ্টে কাটছিল তাঁর দিন। টেলিভিশনের পর্দায় দেখেন, করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া কেউ খাদ্যসহায়তা চেয়ে ৩৩৩ নম্বরে কল করলে খাদ্যসামগ্রী বাড়িতে পৌঁছে যাবে।

নুরুল আমিন অনেকটা কৌতূহলী হয়েই ওই নম্বরে কল দেন দিন সাতেক আগে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে তাঁর নাম-ঠিকানাসহ সব তথ্য নেওয়া হয়। এরপর কয়েক দিন আর কেউ যোগাযোগ করেননি। এর মধ্যে ৮ আগস্ট কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসিনা আক্তার তাঁর বাড়িতে উপস্থিত হয়ে খাদ্যসহায়তা দেন।

নুরুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, খাদ্যসহায়তার প্যাকেটে ছিল ১০ কেজি চাল, ১ লিটার সয়াবিন তেল, ১ কেজি মসুর ডাল, ১ কেজি লবণ ও ১০০ গ্রাম করে হলুদ ও মরিচের গুঁড়া। এ সহায়তা পেয়ে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কয়েকটা দিন অন্তত স্বস্তিতে থাকতে পারছেন বলে জানালেন তিনি। প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

শুধু কবিরহাটের নুরুল আমিনই নন, ৩৩৩ নম্বরে কল করে খাদ্যসহায়তা পেয়েছে জেলার ১৬ হাজার ৩১০টি পরিবার। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত জেলার ৯টি উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের ২২ হাজার ৯৭টি পরিবার খাদ্যসহায়তা চেয়ে ৩৩৩ নম্বরে কল করেছেন।

একই উপজেলার চরজব্বর এলাকার মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যসংখ্যা ৬। তিনি একটি দোকানে চাকরি করতেন। করোনা মহামারিতে দোকান বন্ধ, তাই আয়-রোজগারও বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে কারও কাছে হাত পাতাও সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে নিজের ফোন থেকে কল করেন ৩৩৩ নম্বরে। কয়েক দিন পরই উপজেলা থেকে তাঁকে কল করে উপজেলা পরিষদে যেতে বলা হয়। যাওয়ার পর তাঁকে একটি খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট দেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৩৩৩ নম্বরে কল করে জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কবিরহাটের ৩ হাজার ৯৬৭টি পরিবার সহায়তা পেয়েছে। এ ছাড়া সদর উপজেলার ৩ হাজার ৫০২, সুবর্ণচরের ২ হাজার ৮৩৩, সোনাইমুড়ীর ২ হাজার ২৫৩, কবিরহাটের ৮৪১, চাটখিলের ৬৯১, সেনবাগের ৫৯৭ ও হাতিয়ার ৫৮৩টি পরিবার সহায়তা পেয়েছে।

সদর উপজেলার লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের হাছিনা বেগম জানান, তাঁর স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। করোনার কারণে চাকরি চলে গেছে। এ অবস্থায় সংসার চালানো খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। জানতে পেরে ৩৩৩ নম্বরে কল করে খাদ্যসহায়তা পেয়েছেন তাঁরা।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, করোনা মহামারির কারণে অনেক নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের আয়-রোজগার কমে গেছে। তাঁরা জনসমক্ষে লাইনে দাঁড়িয়ে খাদ্যসহায়তা নিতে পারছেন না। তাঁরা ৩৩৩ নম্বরে কল করে খাদ্যসহায়তার জন্য আবেদন করেছেন। ৩৩৩ নম্বরের খাদ্যসহায়তা খাতে গত জুলাই মাসে ২ কোটি ১ লাখ ২৫৬ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। খাদ্যের প্যাকেট নিয়ে কখনো ইউএনও, কখনো সহকারী কমিশনারসহ (ভূমি) সরকারি কর্মকর্তা মানুষের বাড়ি বাড়ি গেছেন। যত দিন পর্যন্ত বরাদ্দ শেষ না হবে, তত দিন এসব পরিবারকে খাদ্যসহায়তা দেওয়া অব্যাহত থাকবে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here