• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

মজুদ হলেই টিকার দ্বিতীয় ডোজ

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

করোনার টিকার প্রথম ডোজের আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়নের রূপরেখা এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিশেষ করে দ্বিতীয় ডোজের টিকা কবে হাতে পাওয়া যাবে, কী পরিমাণ পাওয়া যাবে, তার ওপর নির্ভর করছে সব কিছু। এ ক্ষেত্রে প্রথম ধাপে ৬০ লাখ মানুষকে ৬০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজের জন্য সমপরিমাণ টিকা হাতে মজুদ রাখাই এখন মূল লক্ষ্য। তাই দ্বিতীয় ধাপের টিকা শুরুর পরিকল্পনাও চূড়ান্ত করতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এর মধ্যেই সোমবার রাতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত ২০ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসেছে। এ নিয়ে মোট ৯০ লাখ টিকা পেল বাংলাদেশ। আগামী সপ্তাহে কোভ্যাক্সের মাধ্যমেও অল্প কিছু ডোজ টিকা প্রাথমিকভাবে আসতে পারে। বাকি টিকা কবে নাগাদ হাতে পাওয়া যাবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। ফলে প্রথম ডোজ যাঁরা পেয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের দ্বিতীয় ডোজের টিকা হাতে নিশ্চিত করার পর অবশিষ্ট টিকা ও পরের লটের টিকা আসার ওপর ভিত্তি করে দ্বিতীয় ধাপের প্রথম ডোজ দেওয়া শুরু হবে। এ ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি যা আছে, তাতে প্রথম ধাপের পর কিছুটা বিরতিও ঘটতে পারে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্ভরযোগ্য সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘আমরা এখনই বলতে পারছি না যে কোনো বিরতি হবে কি না, সব কিছুই নির্ভর করছে কী পরিমাণ টিকা হাতে পাচ্ছি তার ওপর। ফলে দ্বিতীয় ধাপের পরিকল্পনা এখনই করা চূড়ান্ত করা যাচ্ছে না। এ জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে টিকার জন্য।’

তবে অন্য একটি সূত্র জানায়, যদি আগের প্রত্যাশা অনুসারে চলতি মাস ও আগামী মাসের মধ্যেই সেরাম ও কোভ্যাক্সের মিলে এক কোটি ডোজের বেশি টিকা হাতে পাওয়া যায়, তবে কোনো বিরতি ছাড়াই একই সঙ্গে প্রথম ডোজ ও দ্বিতীয় ডোজের কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়া যাবে।

এ ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে হাসপাতালের নিয়মিত রোগীদের সেবা নির্বিঘ্ন রেখে একই সঙ্গে বাড়তি ব্যবস্থাপনায় আরো শত শত মানুষের টিকা দেওয়ার কাজ করার বিষয়টি। বিশেষ করে যাঁরা প্রথম ডোজ পেয়েছেন বা পাচ্ছেন, তাঁরা যেদিন দ্বিতীয় ডোজ নেবেন সেদিন নির্দিষ্ট কেন্দ্রে প্রথম ডোজ নিতে আসা মানুষরা কিভাবে টিকা নেবেন, একসঙ্গে একই কেন্দ্রে দ্বিগুণ মানুষের টিকা দেওয়া সম্ভব হবে কি না, দ্বিগুণ জায়গা ও জনবল কিভাবে ব্যবস্থা হবে, অতিরিক্ত জনবল কিভাবে জোগান দেওয়া হবে—এসব নিয়ে কাজ শুরু করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নীতিনির্ধারকরা। এ ক্ষেত্রে কেউ কেউ বলছেন, এখনই প্রতিটি কেন্দ্রে যেভাবে ভিড় ও ঠেলাঠেলি হচ্ছে, সেখানে দ্বিতীয় ডোজ শুরু হলে দুই ধাপের দ্বিগুণ মানুষের ভিড় সামলানো কঠিন হবে হাসপাতালগুলোর পক্ষে। পরিস্থিতি অনেকটা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অপেক্ষাকৃত ছোট পরিসরের কেন্দ্রগুলোতে অবস্থা বেশি খারাপ হতে পারে। জনবল ও আনুষঙ্গিক ব্যবস্থাপনা নিয়েও সংশয়ে রয়েছেন অনেকেই। বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রসংখ্যা বাড়ানোর, কারো মতে মূল হাসপাতাল ভবন থেকে টিকাকেন্দ্রের আলাদা জায়গা নির্ধারণের কিংবা প্রয়োজনে সময় ভাগ করে নিয়ে দুই শিফটে টিকা দেওয়া যেতে পারে।

অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, পরিকল্পনা চলমান আছে। যখন যেটা যেভাবে ভালো হবে, সেটাই করা হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (টিকাদান কর্মসূচি) ডা. শামসুল হক বলেন, ‘টিকার পরের লট কবে আসবে, সেটাও এখনো জানি না। কোভ্যাক্স থেকে আগামী সপ্তাহে ২০-২৫ লাখের মতো ছোট একটা চালান আসতে পারে, পরে আবার ধাপে ধাপে আসবে। তবে এ ব্যাপারে এখনো কোভ্যাক্স থেকে চূড়ান্ত কোনো চিঠি পাইনি।’

তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শক ড. মুশতাক হোসেন বলেন, দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার ব্যবস্থাপনা কী হবে না হবে, তা এখন থেকেই ঠিক করতে হবে। কারণ যাঁরা টিকা দেবেন সেই প্রশিক্ষিত জনবলের সংকটের বিষয়টিও একটি চ্যালেঞ্জ, আবার যাঁরা টিকা নিতে আসবেন, তাঁদের ভিড় সামাল দিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে কাজ সম্পন্ন করাও চ্যালেঞ্জ। এর মধ্যে হাসপাতালগুলোতে নিয়মিত চিকিৎসাসেবাও চালু রাখতে হবে। সব বিষয় নিয়ে ছক করতে না পারলে সময় গড়িয়ে বিশৃঙ্খলার ঝুঁকি তৈরি হবে।

তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো কাজ হবে নতুন আরো কেন্দ্র তৈরি করা; হাসপাতালের বাইরে যেসব দক্ষ টিকাদানকর্মী আছেন, তাঁদের এখন থেকেই যুক্ত করা দরকার। কারণ প্রতিটি হাসপাতালে এখন যাঁরা টিকা দিচ্ছেন, তাঁরা সবাই নার্স। এর বাইরে ইপিআইয়ের নিয়মিত কর্মীরা রয়ে গেছেন। হাসপাতালের বাইরে কেন্দ্র তৈরি করে সেখানে তাঁদের কাজে লাগানো যেতে পারে।

ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, যেসব হাসপাতালে চাপ বেশি, সেখানে অবশ্যই যেকোনো একটি গ্রুপকে রাখতে হবে। নতুন ও পুরনা—দুই গ্রুপের টিকা নিতে আসা মানুষদের একই কেন্দ্রে একই দিনে টিকা নিতে ডাকা ঠিক হবে না।

ডা. শামসুল হক বলেন, এখনো অনেক সময় আছে। এই পরিকল্পনা আগে করা যাচ্ছে না। পরের টিকা কবে আসবে না আসবে, সেটা নিশ্চিত না হয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না। যদি প্রয়োজন হয় তবে কিছুটা বিরতি দিতেও হতে পারে। এখন লক্ষ্য হচ্ছে যে ৬০ লাখ মানুষ প্রথম ডোজ পাচ্ছেন, তাঁদের দ্বিতীয় ডোজ ঠিকঠাকভাবে দেওয়ার কাজটা সম্পন্ন করা। পরে হাতে যখন যে পরিমাণ টিকা থাকবে, সেটা দিয়েই হিসাব করে সবার প্রথম ডোজ ও দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে।

এদিকে গতকাল পর্যন্ত দেশে টিকা নিয়েছেন ২৪ লাখের বেশি মানুষ এবং নিবন্ধনকারীর সংখ্যা ৩৫ লাখ ছাড়িয়েছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here