• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

দিনাজপুরে চাষ হচ্ছে ‘তরল সোনা’র!

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

উত্তরের সীমান্ত জেলা দিনাজপুরে আগর চাষ হচ্ছে। আগর কাঠ থেকে সুগন্ধি, আতর, আগরবাতি তৈরি হয়। এছাড়াও তৈরি হয় ওষুধ। আগর কাঠের গুঁড়া বা পাউডার ধূপের মতো জ্বালিয়ে সুগন্ধি পাওয়া যায়। অনেকেই আগরের নির্যাসকে তরল সোনা হিসেবেও বিবেচনা করেন। দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগের উদ্যোগে দলগতভাবে আগর চাষ হচ্ছে। এই আগর চাষ উজ্জল সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

২০০৭-২০০৮ অর্থ বছরে দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগ পরীক্ষা মুলকভাবে শুরু করে আগর বাগান। স্থানীয় ব্যক্তিদের উপকারভোগী হিসেবে সম্পুক্ত করে এই আগর বাগান গড়ার কার্যক্রম শুরু করেন বন বিভাগ।

সদর ফরেষ্ট রেঞ্জের আওতায় বিরল উপজেলার ধর্মপুর শালবনের কালিয়াগঞ্জ, বিরামপুর চরকাই রেঞ্জের আওতায় কালিশহর শালবন এবং নবারগঞ্জে ভাদুরিয়া এবং বীরগঞ্জের সিংড়া ফরেষ্টের ৩৩ একর জমিতে বাগান করা হয় আগরের।

শাখা-প্রশাখাবিহীন সোজা লম্বা দেখতে গাছগুলো আকার আকৃতিতে অনেকটা শাল বা গজারি গাছের মতো। এ গাছে সাদা রঙের ফুল এবং ফল ক্যাপসুল আকৃতির। আগর গাছের পাতা দেখতে অনেকটা লিচু বা বকুল গাছের পাতার মতো।

স্থানীয় সাংবাদিক সুমান সারোয়ার জানালেন, ইতিমধ্যে আগর গাছগুলো বেশ বড় হয়েছে। অতিমূল্যবান এই আগর গাছ থেকে নির্যাস তৈরির সময়ও এসেছে।

উদ্ভিদবিদ ও সংগঠক মোসাদ্দেক হোসেন জানালেন, ১০ বছর বয়সেও আগর নির্যাস কাঠ সংগ্রহের উপযোগী করা হয়। আগরের গাছে আগর সংগ্রহ করার জন্য সারা গাছে লোহার পেরেক ঢুকিয়ে রেখে দেওয়া হয়। পরে ওই গাছের পেরেক মারা জায়গায় আঠাঁ জমে ফাংগাসের মাধ্যমে কালো বা খয়েরি রঙের সৃষ্টি হয়। গাছ কেটে কাঠ সংগ্রহ করে ছোট টুকরা করে তা কিছু দিন পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। এরপর কারখানায় বিশেষভাবে নির্মিত চুল্লিতে রেখে তাপ দেওয়া হয়। তাপ দেওয়ার পর বিশেষ ব্যবস্থায় আগর থেকে আগর অয়েল বা নির্যাস পাওয়া যায়।

দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগের ফরেস্টার মো.সাদেকুর রহমান সাদেক জানালেন, উৎপাদিত আগরের সবচেয়ে বড় বাজার এখন মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এছাড়াও ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপানেও আগর রপ্তানি হয়। এই আগরের নির্যাস প্রকার ভেদে প্রতি লিটার ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকায় বিক্রি হয়।

রপ্তানিমুখী এ শিল্পের বিকাশে আগর গাছের উপর গবেষণা জোরদার, চাষ সম্প্রসারণ ও ব্যবস্থাপনাসহ প্রক্রিয়াজাতকরণে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারে আধুনিকায়ন করার উদ্যোগগুলো গ্রহণ করা প্রয়োজন। এতে এ শিল্পের মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে,ফলে দেশের সুষম অর্থনৈতিক উন্নয়নের সহায়ক হবে মনে করেন স্থানীয়রা।

সরজমিনে আগর বাগান ঘুরে দেখে গেছে, মূল্যবান এই উদ্ভিদ আগর চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগ। তাদের এই সাফল্য এখন অনেকের অনুপ্রেরণা। এ বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতা পেলে দিনাজপুরে ব্যক্তি উদ্যোগে অনেকেই আগর বাগান গড়ে তুলবেন বলে জানিয়েছেন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here