• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

জামায়াতের খোলস বদলে এ বি পার্টি! 

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৮ মে ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

করোনাভাইরাসের এই কঠিন সংকটের মধ্যে হঠাৎ করেই দুই সপ্তাহ পূর্বে এটি ছিল প্রকাশ্য ঘোষণার মাধ্যমে একটি নাটকীয় চমক। আর এর মধ্য দিয়েই ধর্মকে নিজ স্বার্থে ব্যবহারকারী এই দলটি বাংলাদেশের মাটিতে শেষ চেষ্টা করে যেতে চাইছে নতুন কোনো সম্ভাবনার ফাঁকফোকর সন্ধান করার। তাই তারা এরকম ভাবেই ভিন্ন রূপধারণ করে আগামী দিনগুলোতে সময় ও সুযোগের অপেক্ষায় থাকবে, হয়তো এটাই তাদের নতুন করে গুছিয়ে নেয়ার একমাত্র কৌশল। সাপের খোলস পাল্টানোর মতোই ঘাতক দালাল যুদ্ধাপরাধী চক্র জামায়াতে ইসলামী দলের একটি অংশ চেহারা পাল্টে ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি’ নামে রূপান্তরিত হলো।

শুধু তাই নয়, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাস্তবায়নের অঙ্গীকারও করেছে নব যাত্রার প্রাক্কালে। এ যেন ভুতের মুখে রাম নাম! তবুও স্বপ্ন দেখতে দোষ কোথায়? অতীতেও তো ধর্মকে ব্যবহার করে কত অসংখ্য ফায়দাই না হাসিল করেছে! শেষে একাত্তরের পাকিস্তান রক্ষার মিশনেও তো ধর্মের একই অজুহাত নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে, বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিল, কিন্তু সফলকাম হতে পারল কই? যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দিতে, ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানকে স্তব্ধ করে দিতে পাকিস্তান জিন্দাবাদের আওয়াজ তুলে অগনিত বাঙালি নিধন, অগ্নি সংযোগ, লুন্ঠন আর নারী ধর্ষণের অভিযানে নেমেছিল এই জামায়াত, সেই একাত্তরের চেতনাকেই সহসা বুকে ধারণ এবার তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে এরা! কি স্পর্ধা! খবরটা শুনে ‘পাগলে কি না বলে ছাগলে কি না খায়’-এর মতোই উদ্ভট হাস্যকর এক অনুভূতির খোরাক হয়েছে দেশবাসীর মনে। তবুও এই দিবাস্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুন গোলকধাঁধার আশ্রয়ই নিয়েছে তারা। কাজেই এই নতুন মিশনের সম্ভাব্য চিন্তা চেতনার প্রতিফলন যদি ঘটে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নাম ভাঙিয়েই, তাতে অবাক হবার কিছু নেই।

তাদের প্রত্যাশা আরও গভীর অন্যদিক থেকেও। এই যেমন, যদি এই দেশে আবারও কখনও ফিরে আসে নবাব সিরাজ উদ-দৌলার সাম্রাজ্যের মতো কোনো এক মীরজাফর, যদি ফিরে আসে আরও এক মোশতাক কিংবা পাকিস্তানি প্রেতাত্মা বা বিপথগামী সেনা অফিসার কিংবা ক্ষমতালোভী সুবিধাবাদী সুযোগসন্ধানী কোনো জিয়া, সেই প্রত্যাশিত মাহেন্দ্রক্ষণটি এলেই বিষের ছোবল এঁটে দেশটাকে তছনছ করে যদি ফিরে পাওয়া যায় হারানো মসনদ, তবেই তো উদ্দেশ্য হাসিল! কেননা অতীতের সুখকর স্মৃতিগুলো তারা কখনোই ভুলে থাকতে পারে না। খালেদা জিয়ায় আঁচলে পরম নিশ্চিন্তে আশ্রয় পেয়ে রক্তে গড়া স্বাধীন দেশের সরকারের মন্ত্ৰীত্ব লাভ, সরকারি গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধার বীর জাতিকে পদদলিত করে দাপিয়ে বেড়ানোর কত ঘটনাই না ঘটেছে এসব জামায়াতের যুদ্ধাপরাধীদের দাম্ভিকতায়! এদের কণ্ঠ থেকেই না উচ্চারিত হয়েছিল সেইসব ক্ষমতা ভোগের দিনে যে, “দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে কিছু নেই”। আবার একথাও স্পর্ধার সাথে বলেছিল, “একাত্তরের জামায়াতের ভূমিকা ছিল সঠিক”। পাকিস্তানপ্রেমীদের মুখ থেকে এসব চরম অপমানের চোখ রাঙানো কথার আঘাতও সইতে হয়েছিল বাঙালিদের। সেসব প্রাসাদ-স্মৃতি কি করে ভুলে থাকবে এরা! হয়তোবা এ কারণেই করোনাভাইরাসের মহা সংকটের মধ্যেই সহসা তড়িঘড়ি তাদের এই চেহারা বদলের আয়োজন।

কিন্তু আমার প্রশ্ন, বঙ্গবন্ধুর এই বাংলাদেশে এতদিনে এক মুজিবের রক্ত থেকে ঘরে ঘরে যে অজস্র মুজিবের জন্ম হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত সেই প্রজন্ম মিলেমিশে দেশকে গড়ে তুলছে মেধা, শ্রম, আর ভালোবাসা দিয়ে, শানিত শক্তি দিয়ে, আর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে দেশ আজ বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে সমাদৃত, এসব জেনেও কেন তাদের এই অদ্ভুত দিবাস্বপ্ন? কেন নতুন বোতলে পুরনো মদ ঢেলে স্বার্থসিদ্ধির অপচেষ্টা? কেনইবা এই মোহাচ্ছন্ন পদক্ষেপ এদের? কেন?

জামায়াত একটি যুদ্ধাপরাধী মানবতাবিরোধী দল হিসেবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক দলের নিবন্ধন বাতিলের পর থেকেই তাদের নানা সময়ের অস্থিরতা, কিংকর্তব্যবিমূঢ় আচরণ, দলের মধ্যকার মত বিভেদের টালমাটাল অবস্থার মধ্য দিয়েই এতদিন অতিক্রম করেছে এরা। অবশেষে হঠাৎ করেই এভাবে ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি’ নাম ধারণ করে নয়া ফর্মুলায় মাঠে নামার ঘোষণা। কিন্ত এরপরও প্রশ্ন, কি আছে এই যাত্রায় তাদের কুটিল অন্তরে?

আসলে এদের মস্তিস্কের অস্থি মজ্জায়, রক্তের হিমোগ্লোবিনে এখনও একাত্তরের রিরংসার লালসা বহাল তবিয়তে বহমান। এখনও ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে উচ্ছসিত মুক্তিযুদ্ধের ফসল এই স্বাধীন রাষ্ট্রকে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদে’র ধ্বনিতে এবং সেই সংস্কৃতিতেই মিশিয়ে দেবার সুপ্ত বাসনা নড়েচড়ে ওঠে তাদের অন্তরে। আর তাই এখনও তাদের মধুর সখ্যতা দৃশ্যমান ক্যান্টনমেন্ট থেকে প্রতিষ্ঠিত সমমনা ‘জিন্দাবাদ’ শ্লোগানের রাজনৈতিক দলের সাথে। এখনও তাদের অন্তরে ক্ষণে ক্ষণে জেগে ওঠে একাত্তরের পরাজয়ের পুরনো ক্ষতের স্মৃতি। তাই বাংলাদেশের মানুষের মনে ধোঁকা দিয়ে দলের নামটি এক ভিন্ন চমকে রূপান্তরিত করে জনমনে বিশ্বাস স্থাপনের পথে বহমান হয়ে নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টাই করতে চাইছে এরা। ফলে এসময় জীবন-মৃত্যুর মোকাবেলাকে তুচ্ছজ্ঞান করে হলেও এটিকেই জরুরি ইস্যু হিসেবে ধারণ করে নিরবিচ্ছিন্ন মিশনে মাঠে নামার এই পাঁয়তারা।

কিন্তু তাদের এই সুদূরপ্রসারী আশা যে একেবারেই নিরাশার অন্ধকারে আবদ্ধ বঙ্গবন্ধুর অস্তিত্বে গড়া এই বাংলাদেশে, এই সত্যটি জেনেশুনেও কেনইবা তড়িঘড়ি অভিনভ পন্থা? কী আছে ‘আমার বাংলাদেশ’ নামের নীলনকশায়? বর্তমান দুর্যোগের একটি আস্বাভাবিক পরিস্থিতির আবর্তের মধ্যেও কেন এই উদ্ভট নতুন ফন্দি-ফিকিরের পরিকল্পনা তাদের মাথায় আজ নড়েচড়ে বসেছে? তাদের অস্বাভাবিক আগমনে সংগত কারণেই প্রশ্ন জাগে অনেক, আর উত্তরগুলোও হয়তো সময়ই বলে দেবে।

এই দলটির অতীত ঘেঁটে আমরা কি পাই? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে ‘৬৬ ও ‘৬৯-এর আন্দোলনের উত্তাল সময়ে যখন ১১ দফা দাবি পাকিস্তানের মসনদকে কাঁপিয়ে তুলেছিল, তখনও এই জামায়াত চক্রটি ১১ দফাসহ অন্যান্য দাবির প্রকাশ্য বিরোধিতা করে এসেছে এই বাংলাদেশের (তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তান) মাটিতে অবস্থান করেই। এরপর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তা করেছে রাজাকার, আল সামস, আল বদর, শান্তি কমিটি নামের বিভিন্ন দল গঠনের মধ্য দিয়ে। শুধু তাই নয়, ’৭১-এর নয় মাস জুড়ে সারাদেশে ব্যাপক হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠনসহ এ বাড়ি ও বাড়ি থেকে অগণিত যুবতী, কিশোরী, গৃহবধূদের ধরে নিয়ে চালান দিয়েছে পাকিস্তানি জোয়ানদের ঘাঁটিতে মনোরঞ্জনের জন্যে। গ্রামের পর গ্রাম, শহর, গঞ্জ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করেছে পাকিস্তানী সেনাদেরকে পথ দেখিয়ে দেখিয়ে। মূলত এই দালাল চক্রের সরাসরি দিকনির্দেশনা ও সহযোগিতার কারণেই একাত্তরের নয় মাসে বাংলাদেশের সমূহ ক্ষতি সাধন করতে সক্ষম হয়েছিল পাকিস্তানী সেনারা।

এরপর ১৯৭১ সালের সবচাইতে নির্মম ও জঘন্য হত্যাযজ্ঞটি এরা সাধন করেছিল বিজয়ের ঠিক দু’দিন আগে। যখন মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় বাহিনীর যৌথ আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনী একের পর বিভিন্ন মহকুমা ও জেলা শহরের ঘাঁটিগুলো থেকে পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে পিছু হটতে শুরু করেছিল, তখন থেকেই জামায়াতীরা বুঝতে পেরেছিল যে, তাদের সাধের পূর্ব পাকিস্তানকে আর রক্ষা করা গেল না। তাই সেই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে ঢাকায় অবস্থানরত অগণিত বুদ্ধিজীবীদেরকে বাসা থেকে নানা ছলে-বলে, কৌশলে ডেকে নিয়ে একের পর এক নির্বিঘ্নে হিটলারি কায়দায় হত্যা করেছিল তারা।

স্বাধীনতার পর জামায়াতসহ ধর্মভিত্তিক উগ্র দলগুলি নিষিদ্ধ ঘোষিত হলেও পঁচাত্তরে এই চক্রটিরই চক্রান্তে রশিদ, ডালিম গংদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি অবাধ্য দলের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। সেসময় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে অবস্থান করায় বেঁচে যান। অর্থাৎ একাত্তরের পরাজয়ের পর তাদের সুপ্ত বাসনার পরিপূর্ণতা পেয়েছিল পঁচাত্তরে ১৫ অগাস্টের ওই মধ্যযুগীয় হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমেই।

১৯৭১-এর পর স্বাধীন বাংলাদেশে জামায়াত বা ধর্মাশ্রয়ী দলগুলো বঙ্গবন্ধুর নির্দেষে নিষিদ্ধ ঘোষিত হলেও ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সুবিধাবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষী সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের নির্দেশে তারা আবার রাজনীতি করার সুযোগ পেয়ে যায়। আর জিয়ায় স্ত্রী খালেদা জিয়া তো তারই ষোলকলা পূরণ করেন তাদেরকে মন্ত্রিত্ব উপহার দিয়ে। জামায়াত নেতা গোলাম আজম জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হলেও সেই নাগরিকত্ব বাতিল হলে স্বাধীনতার পরপর পাকিস্তানের নাগরিত্ব নিয়ে সেখানে চলে যান। কিন্তু জিয়ার বদান্যতায় তিনি তখন বীরদর্পে আবারও বাংলাদেশে ফেরত আসেন এবং জিয়া তাকে বাংলাদেশের নাগরিত্ব প্রদান করেন।

মুলত ওরা সেই সময় থেকেই নড়েচড়ে উঠেছিল বাংলাদেশকে আবারও পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নিতে। অন্তত একটি স্বাধীন পাকিস্তান না হোক, পাকিস্তানের তথাকথিত ইসলামী আইন আর সংস্কৃতির বীজ বপন করে নতুন এক বাংলাদেশ নির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে বাঙালির একাত্তরের চেতনা নামক নিচ্ছিদ্র আচ্ছাদনের ভেতর প্রবেশ করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। তাই ওই একাত্তরের চেতনার মধ্যে প্রবেশ করেই মানুষের মনকে কোনোভাবে জয় করে নিতে পারলেই তো এজেন্ডা বাস্তবায়নের পথটি উন্মুক্ত হয়ে যায়!

মোটকথা, এটি যে জামায়াতীদের একটি রাজনৈতিক কৌশল এতে কোনো সন্দেহ নেই। এ ব্যাপারে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির মিডিয়াকে দেয়া তার এক সাক্ষাৎকারে একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, “জামায়াত যখনই কোণঠাসা হয়েছে বা বিপদে পড়েছে, তখনই তারা হয় গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করেছে, নেতৃত্বে পরিবর্তন করেছে, এমনকি দলের নামও পরিবর্তন করেছে। জামায়াতের বয়স হচ্ছে প্রায় ৮০ বছর। এই ৮ দশকে বহুবার জামায়াত খোলস পাল্টেছে। সাপ খোলস পাল্টায় সারভাইব (টিকে থাকার জন্য) করার জন্য। খোলস পাল্টানোর অর্থ এই নয়, সাপ নির্বিষ হয়ে গেছে। জামায়ত খোলস পাল্টায় নিজেদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য, টিকিয়ে রাখার জন্য।”

জামায়াত সঙ্কটে পড়ে নতুনভাবে গ্রহণযোগ্যতা তৈরির জন্য মানুষকে প্রতারিত করছে বলে মন্তব্য করেছেন শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেন, “এটা আমাদের ক্ষোভের বিষয়, উদ্বেগের বিষয়। সরকারকে বলেছি, আমরা নাগরিক সমাজকে বলেছি এদের উপর কঠোর নজরদারী রাখার জন্য।”

মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডের ঘটনার উল্লেখ করে শাহরিয়ার কবির একটি যুতসই উদাহরণ দেন। তিনি বলেন, “মিশরে জামায়াতের জ্ঞাতিভাই হল মুসলিম ব্রাদারহুড। ওইটাকে যখন নিষিদ্ধ করা হল, তখন জাস্টিস পার্টি নামে একটি দলে তারা কেবল আত্মপ্রকাশই করেনি, ক্ষমতায়ও গিয়েছিল। ক্ষমতায় গিয়ে তারা মুসলিম ব্রাদারহুডের এজেন্ডাই বাস্তবায়ন করেছিল। সুতরাং এরা সুযোগ পেলে জামায়াতের রাজনীতিই চর্চা করবে। সেই গলা কাটবে, রগ কাটবে। ভিন্নমতের, ভিন্ন ধর্মে যারা বিশ্বাসী, তাদের হত্যা করবে। এটাই হচ্ছে তাদের চরিত্র এবং বৈশিষ্ট্য।”

শাহরিয়ার কবিরের ভাষ্য, পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামির নির্দেশে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে সংস্কারপন্থিদের এই দলের আত্মপ্রকাশ। “বাংলাদেশের জামায়াত কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের জামায়াতের একটা শাখা। এখন হয়ত পাকিস্তান থেকে নির্দেশ এসেছে, তোমাদের সেকেন্ড একটা উইং থাকা দরকার। সরকার যেকোনো সময় জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে দিতে পারে। বাংলাদেশের গঠনতন্ত্রের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে একটা নতুন দল কর”।

সবশেষে একথা পরিষ্কারভাবেই বলা যায়, জামায়াতের এই ছদ্মবেশী রূপ কোনোভাবেই দেশবাসী মেনে নেবে না। মুরুব্বীদেরকে সবসময়ই বলতে শুনেছি, “কয়লা ধুইলেও ময়লা যায় না’। এই কথাটি যে অক্ষরে অক্ষরে সত্যি, তা জামায়াতকে দিয়েই প্রমাণ পাওয়া যায়। আসলে ঘাতক দালাল জামায়াতের কলঙ্কের ময়লা কী করে মুছে যাবে এই রক্তে গড়া বাংলাদেশের মাটি থেকে? কাজেই এখনই সময় এসেছে এদের গতিবিধির প্রতি কড়া নজরদারি করার। জনগণ তথা সরকারের উচিত, সময় থাকতেই এদের বিষ দাঁত ভেঙে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ রাজনীতি-জেল-জুলুমের ফসল ও তার প্রাণের বিনিময়ের এই বাংলাদেশকে পবিত্র রাখা। লক্ষ শহীদের ও মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ের এই প্রিয় জন্মভূমি থেকে চিরতরে এইসব পাকি-ভুতের অস্তিত্বকে নিশ্চিহ্ন করতে এখনই সবাইকেই হতে হবে সোচ্চার। 

লেখক: রুমী কবির

Place your advertisement here
Place your advertisement here